ঢাকা জেলা পরিষদের উদাসীনতায় দুর্ভোগে এলাকাবাসী
প্রকাশিত : ১৫:১১, ১৩ জানুয়ারি ২০২০
সাভারের খাগান এলাকায় একটি সরকারি রাস্তার নির্মাণ কাজ নিয়ে জেলা পরিষদের বিরুদ্ধে উদাসীনতার অভিযোগ উঠেছে। প্রায় তিন মাস আগে রাস্তাটি নির্মাণের জন্য ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেয়া হলেও অদ্যবদি কাজ শুরু করেনি প্রতিষ্ঠানটি।
ফলে ওই এলাকায় কয়েকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং হাজার হাজার শিক্ষার্থীসহ এলাকাবাসীদেরকে প্রতিনিয়ত দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ভুক্তভোগীদের প্রাণের দাবি অবিলম্বে সরকারি রাস্তাটির নির্মাণ কাজ শুরু এবং শেষ করার। এ জন্য তারা প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, খাগান বিরুলিয়া সড়ক থেকে একটি শাখা সড়ক আশুলিয়া মডেল টাউন হয়ে পাড়াগ্রম, নয়াপড়া, রুস্তমপুর, সাধুপাড়া, দত্তপাড়া, কাকাবর, হুনাটেঙ্গুরসহ কয়েকটি গ্রামের মানুষ এই সড়ক দিয়ে প্রতিনিয়তই যাতায়াত করে। এই সড়কটি জেলা পরিষদের অর্থায়নে সরকারিভাবে নির্মাণের জন্য প্রস্ততি নেয়া হয়েছে।
এরই ধারাবাহিকতায় গত তিন মাস আগে রাস্তাটির নির্মাণের জন্য তিনটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেয়া হয়। তবে দীর্ঘদিনেও সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানগুলো নির্মাণ কাজ শুরু করেনি বরং রাস্তাটির বিভিন্ন স্থান থেকে ইট ও মাটি তুলে ফেলায় স্বাভাবিকভাবে চলাচল করাও কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে।
রাস্তাটি নির্মাণ কাজের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের কাছে জানতে চাইলে তারা বলেন, ‘আমরা রাস্তাটি নির্মাণ কাজের জন্য ঢাকা জেলা পরিষদের কাছ থেকে তিন মাস আগে কার্যাদেশ পেয়েছি। কিন্তু একটি হাউজিং প্রকল্প আগে থেকেই রাস্তাটি ইটের সলিং করেছিলো। হাউজিং কর্র্তৃপক্ষ নিজ দায়িত্বে তাদের পুরাতন ইটগুলো সরিয়ে নিবেন বলে জানিয়েছেন। তাদের ইট সরানো শেষ না হওয়া পর্যন্ত আমরা কাজে হাত দিতে পারছি না।’
ব্যস্ততম এ রাস্তাটি দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার লোকজন দুর্ভোগ নিয়ে চলাফেরা করলেও মূলত হাউজিং প্রকল্প ও জেলা পরিষদ কর্র্তৃপক্ষের উদাসীনতার কারণেই রাস্তাটি নির্মাণ কাজের প্রধান বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
আশুলিয়া মডেল টাউন এলাকায় ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির কয়েকজন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী জানায়, ‘আমরা প্রায় দুই হাজার ছাত্র-ছাত্রী প্রতিদিন এই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করি। দীর্ঘদিন ধরে রাস্তাটির ইট সরানোর নামে খানাখন্দ করে রাখা হয়েছে। এ জন্য আমরা দুর্ভোগে পড়ছি। এটি যখন ইটের সলিং ছিল তখনও রাস্তাটি বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে যেতো এবং কাঁদার কারণে আমরা পায়ে হেটে যেতে না পারলেও রিকশা কিংবা অন্যকোনো পরিবহন দিয়ে কোনোরকমে চালিয়ে নিতাম।’
তারা বলেন, ‘সরকারভাবে টেন্ডার হওয়ার পর সড়কটির বিভিন্ন স্থানে ইট উঠিয়ে খানাখন্দ বানিয়ে রেখেছে। যে কারণে রিকশা তো দূরের কথা, পায়ে হেটেও ক্যাম্পাসে যেতে পারছিনা। অনেক সময় এসব খানাখন্দে পড়ে জামাকাপড় নষ্ট হয়ে যায় এবং অনেকেই কাদার গর্তে পরে হাতে ও পায়ে চোট পেয়েছে।’
ইট তুলে খানাখন্দ সৃষ্টি এবং জনদুর্ভোগের বিষয়ে জানতে চাইলে হাউজিং প্রকল্পের ব্যবস্থাপক সাইদুর রহমান বলেন, ‘জেলা পরিষদের অর্থায়নে সরকারিভাবে রাস্তাটি নির্মাণ করা হবে বিধায় আমাদের প্রকল্পের রাস্তার পুরাতন ইট আমরাই নিজ দায়িত্বে উঠিয়ে নিচ্ছি।’
তিনি বলেন, ‘গত তিন মাস ধরে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান রাস্তাটির কাজ শুরু করবে বলে জানালেও তারা অদ্যবধি কাজ শুরু করেননি। সর্বশেষ গত শনিবারও জেলা পরিষদের উপ-সহকারী কর্মকর্তা নজরুল ইসলামের রাস্তাটি পরিদর্শন করে কাজ শুরুর কথা ছিলো, কিন্তু তারা বারবার প্রতিশ্রুতি দিয়েও এখন পর্যন্ত কাজ শুরু করেননি। আমরা যতটুকু রাস্তার ইট উঠিয়েছি তারা চাইলে সেখান থেকে কাজ শুরু করতে পারে। কিন্তু তারা ইচ্ছা করেই জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করে রেখেছে।’
জানতে চাইলে ঢাকা জেলা পরিষদের প্রকৌশলী আবদুস সামাদ পত্তনদার বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই. তবে দু’একদিনের মধ্যে জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে ওই রাস্তাটি পরিদর্শন করা হবে এবং বিষয়টি পর্যালোচনা করে অতিদ্রুত রাস্তাটি নির্মাণ কাজের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে।’
এআই/
আরও পড়ুন