বাগেরহাটে অবসর উত্তর ছুটি পেনশন হবে অনলাইনে
প্রকাশিত : ২২:১১, ২৪ জানুয়ারি ২০২০
বাগেরহাট জেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অবসর উত্তর ছুটি (পিআরএল), পেনশন ও আনুতোষিক মঞ্জুরী আদেশ এখন থেকে অনলাইনে পাবেন সংশ্লিষ্টরা। “ই-পেনশন ও পিআরএল মঞ্জুরী আদেশ হোম ডেলিভারি সার্ভিস” নামের সেবার মাধ্যমে শিক্ষকরা ঘরে বসেই এসব মঞ্জুরী আদেশ পাবেন। এসব আদেশ পেতে লাল ফিতার দৌড়াত্ব ও হয়রানি কমাতে এই উদ্যোগ নিয়েছে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগ।
যার ফলে শিক্ষকদের অবসরে যাওয়ার নির্দিষ্ট সময় হলে অবসর-উত্তর ছুটি, পেনশন ও আনুতোষিক মঞ্জুরী আদেশ সয়ংক্রিয়ভাবে ই-মেইল ও বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ব্যক্তিগত ইনবক্সে ওই শিক্ষক, উপজেলা শিক্ষা অফিসার ও হিসাবরক্ষণ অফিসে চলে যাবে। শিক্ষক তার নিজস্ব ই-মেইল, ফেসবুক ম্যাসেঞ্জার, ইমো হট্সএ্যাপের মাধ্যমেও ওই আদেশ পাবেন। ওই আদেশের বলে শিক্ষক কোন প্রকার হয়রানি ছাড়া অবসর-উত্তর ছুটিতে চলে যেতে পারবেন। নির্দিষ্ট সময়ে তিনি আনুতোষিক (অবসর উত্তর ছুটি শেষ হওয়ার পরে এককালীন টাকা) পেয়ে যাবেন। প্রতিমাসে তিনি পেনশনও পাবেন নিয়মিতভাবে।
“ই-পেনশন ও পিআরএল মঞ্জুরী আদেশ হোম ডেলিভারি সার্ভিস” নিশ্চিত করতে ইতোমধ্যে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগ আগামী এক বছরের মধ্যে যেসব শিক্ষক পিআরএলে যাবেন তাদের তালিকা চুড়ান্ত করেছেন। অনলাইনে শিক্ষকদের জন্য নির্দিষ্ট ফরমও দেওয়া হয়েছে। ওই ফরমে শিক্ষকদের নাম, পদবী, সর্বশেষ কর্মরত বিদ্যালয় ও পিআরএল এ গমনের তারিখ, পিআরএল আদেশ পাঠানোর জন্য মুঠোফোন নম্বর ও ই-মেইল ঠিকানা পূরণ করে উপজেলা শিক্ষা অফিসে জমা দিতে হবে। উপজেলা শিক্ষা অফিস তার উপজেলার তালিকা জেলায় প্রেরণ করবেন। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে নির্দিষ্ট সময়ে ওই শিক্ষক ও সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তরে পিআরএল মঞ্জুরী আদেশ পৌছে যাবে।
এদিকে বাংলাদেশের এই প্রথম অনলাইনের মাধ্যমে শিক্ষকদের অবসর-উত্তর ছুটি, পেনশন ও আনুতোষিক মঞ্জুরী আদেশ প্রদানের ঘোষনায় শিক্ষকদের মাঝে এক ধরণের উৎসাহ কাজ করছে। অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকরাও এই পদ্ধতিকে স্বাগত জানিয়েছেন।
একজন চাকুরীজীবী যখন অবসরে যান তখন তিনি নানা রকম চিন্তা ভাবনায় পড়েন। এর মধ্যে সব থেকে বড় চিন্তা থাকে পেনশন ও আনুতোষিক মঞ্জুরি নিয়ে। নিজেদের এই ন্যায্য পাওনা নিতে বিভিন্ন অফিসে যেতে যেতে পায়ের জুতো ছিড়ে যায়। অনেক সময় একধরণের বাধ্য হয়ে অনৈতিক সুযোগ সুবিধা দিয়েই নিজের কাজ সেরে নিতে হয়। পেনশন ও আনুতোষিক মঞ্জুরির বিষয়ে বর্তমানে যে পদ্ধতির কথা শুনেছি এটি বাস্তয়ান হলে শিক্ষকরা হয়রানি থেকে মুক্তি পাবে।
সহকারি শিক্ষক রাবেয়া বেগম বলেন, আমার পরিবারে ৪জনই শিক্ষক। বাবাও শিক্ষকতা করতেন। বাবার কাছ থেকে জেনেছি পেনশনের টাকা তোলা কতটা কষ্টের। তারপরও শিক্ষকতা পেশাকে বেছে নিয়েছি। প্রযুক্তির উৎকর্ষতা সাধণে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগও বিভিন্ন ক্ষেত্রে আধুনিকায়ন হচ্ছে। আমাদের শিক্ষকদের পেনশন ও আনুতোষিক মঞ্জুরী আদেশ অনলাইনের মাধ্যমে দেওয়ার ঘোষনা যুগান্তকারী বলে আমি মনে করি।
বাগেরহাট জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ কবির উদ্দিন বলেন, একজন মানুষ দীর্ঘদিন চাকুরী করার পরে যখন সে অবসরে যায় তিনি একধরণের হাতাশায় ভোগেন। এরমাঝে তার মনে আসে অবসর উত্তর ছুটি (পিআরএল), পেনশন ও আনুতোষিক মঞ্জুরী আদেশ পাওয়ার জন্য প্রচলিত বিড়ম্বনার ভয়। সেসব ভয় ও হয়রানি বন্ধে আমরা অবসর উত্তর ছুটি (পিআরএল), পেনশন ও আনুতোষিক মঞ্জুরী আদেশ ই-মেইল ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শিক্ষকের ব্যক্তিগত ইনবক্সে প্রেরণ করব। সাথে সাথে সংশ্লিষ্ট উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও হিসাবরক্ষণ অফিসেও প্রেরণ করব। যার ফলে ওই শিক্ষককে আর অহেতুক হয়রানির শিকার হতে হবে না। পর্যায়ক্রমে আমরা শিক্ষকদের সব ধরণের সুযোগ সুবিধা অনলাইনের মাধ্যমে করার আশা ব্যক্ত করেন এই কর্মকর্তা।
আরকে//
আরও পড়ুন