নাটোরে পুকুরে তিন মাসের শিশুর লাশ, মৃত্যু নিয়ে রহস্য
প্রকাশিত : ১০:৪৩, ২৬ জানুয়ারি ২০২০
নাটোরের বাগাতিপাড়ায় পুকুর থেকে তানজিলা খাতুন ওরফে টিয়া পাখি নামে তিন মাসের এক শিশুর লাশ উদ্ধারের ঘটনায় রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে তিনমাস বয়সী ওই শিশু কিভাবে পুকুর পর্যন্ত পৌঁছালো। ওই শিশুর মরদেহ উদ্ধারের পর মা তারিন বেগমের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ পরিবারের।
শনিবার (২৫ জানুয়ারি) বিকেলে উপজেলার বজরাপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। তারিন বেগম পাশ্ববর্তী রাজশাহী জেলার পুঠিয়ার উপজেলার বানেশ্বর ইউনিয়নের জামিরা গ্রামের আইয়ুব ইসলাম টুকুর মেয়ে ও নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার বজরাপুর গ্রামের বজরাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক তাজুল ইসলাম টেনুর পালিত কন্যা। তারিনের স্বামী তুষার আলী।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শিক্ষক তাজুল ইসলাম টেনুর পালিত কন্যা তারিন বেগম সিজারের মাধ্যমে শিশুটির জন্ম দেন। ওই শিশুর জন্মের পর থেকে তারিন বেগম পালিত বাবার বাড়িতে থেকে আসছিলেন।
শনিবার বিকালে শিশু তানজিলার নিখোঁজ হওয়ার খবর জানতে পারেন প্রতিবেশী ও পরিবারের লোকজন। এক পর্যায়ে তারা তাজুল ইসলামের বাড়ির পাশের পুকুরের পানিতে শিশুটির লাশ দেখতে পান। পরে সেখান থেকে লাশ উদ্ধার করা হয়। খবর পেয়ে বাগাতিপাড়া থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে নাটোর মর্গে প্রেরণ করে এবং শিশুটির মা তারিনকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
ঘটনার প্রাথমিকভাবে তদন্তকারী বাগাতিপাড়া থানার এসআই তারেকুল ইসলাম জানান, ‘পুকুরের পানি থেকে তিন মাস বয়সের শিশুটির লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এত ছোট শিশু কিভাবে পুকুরের পানিতে গেল তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। এ বিষয়ে শিশুটির মা-বাবাসহ পরিবারের লোকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন থানার ওসি। বিষয়টি গুরুত্বের সাথে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’
তারিনের চাচা সুরুজ আলী তার স্ত্রী রুবিনা বেগমের থেকে শুনেছেন জানিয়ে বলেন, ‘বিকেলে তারিন শিশুকন্যাকে নিয়ে বাড়ির পাশে পুকুর পাড়ে যায়। তবে কিছুক্ষণ পর একাই ফিরে আসে। তখন বাড়ির লোকজন টিয়ার খোঁজ করলে তারিন জানায় পাশের বাড়ির এক চাচীর কাছে টিয়াকে রেখেছেন তিনি। কিছুক্ষণ পর পাশের বাড়িগুলোতে টিয়ার খোঁজ করতে গেলে বাড়ির পাশের পুকুরে টিয়ার ভাসমান মরদেহ দেখতে পায়।’
তারিনের স্বামী তুষার হোসেন জানান, ‘তারিন খুব রাগী স্বভাবের। এ ঘটনায় তিনি কাউকে সন্দেহ করতে পারছেন না। মেয়ের মৃত্যুর খবর জানার আধাঘন্টা আগেও তিনি স্ত্রী তারিনের সাথে ফোনে কথা বলেছেন। তখন তারিন বেশ স্বাভাবিক ছিলেন।’
স্থানীয় ইউপি সদস্য হাফিজুর রহমান জানান, ‘তারিন মানসিকভাবে সুস্থ হলেও অতিরিক্ত রাগের কারণে অনেকসময় অস্বাভাবিক আচরণ করেন। শিশুটির একা একা পানিতে পড়ে যাবার কোনো কারণ নেই।’
এ বিষয়ে রাতে বাগাতিপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল মতিন বলেন, ‘শিশুটিকে পানিতে ফেলে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। এ ঘটনায় শিশুটির মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘শিশুটির মা তারিনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনা হয়েছে। এছাড়া, পরিবারের সদস্যদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তবে এ ঘটনার সাথে মা তারিন যুক্ত কি না- তা জিজ্ঞাসাবাদ শেষে জানা যাবে।’
এআই/
আরও পড়ুন