করোনা থেকে বাঁচতে ভারত হয়ে দেশে ফিরলেন বাংলাদেশি শিক্ষার্থী
প্রকাশিত : ১৮:০৫, ৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০
সম্প্রতি চীনের উহান প্রদেশ থেকে উৎপত্তি হওয়া করোনাভাইরাস গোটা চীনেই ছড়িয়ে পড়েছে। এমন অবস্থায় প্রাণঘাতি এ ভাইরাস থেকে নিজেকে নিরাপদ রাখতে দেশটি থেকে ভারত হয়ে দেশে ফিরেছেন আবু রায়হান (২৪) নামের বাংলাদেশি শিক্ষার্থী। এদিকে তাকে তার নিজ বাড়িতেই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও উপজেলা প্রশাসনের পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
গত ৩১ জানুয়ারি (শুক্রবার) দুপুর ১টার দিকে হিলি ইমিগ্রেশন দিয়ে ভারত থেকে দেশে ফেরেন তিনি। এসময় তাকে হিলি ইমিগ্রেশন চেকপোষ্টে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে কর্মরত মেডিকেল টিম পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ছেড়ে দেন। তিনি বিরামপুর উপজেলার থানাপাড়া গ্রামের সেনা বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সদস্য মোস্তফা কামালের ছেলে। সে চীনের উহান বিশ্ববিদ্যালয়ে পাড়ালেখা করত, তবে তার বিশ্ববিদ্যালয় উহান শহর থেকে দু’হাজার কিলোমিটার দূরে বলে জানান তিনি।
এর আগে গত ৮ জানুয়ারি একই এলাকার পূর্ব পাড়া গ্রামের আবু তাহেরের ছেলে রেজওয়ান কবির জেমি নামের আরও এক যুবক চীন থেকে দেশে ফেরেন।
এদিকে চীন ফেরত আসা দুই যুবকের বাড়িতে রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) রাতে দিনাজপুরের সিভিল সার্জন ও বিরামপুর উপজেলা প্রশাসন দেখা করেন এবং বিভিন্ন পরামর্শ প্রদান দেন।
হিলি ইমিগ্রেশন চেকপোষ্টের ওসি রফিকুজ্জামান বলেন, ‘গত শুক্রবার দুপুরে চীন থেকে আবু রায়হান নামের ওই যুবক প্রথমে ভারত আসেন, পরে বাংলাদেশে প্রবেশ করেন। সে চীনের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা করত। হিলি ইমিগ্রেশন চেকপোষ্ট দিয়ে দেশে প্রবেশের পর এখানকার কর্তব্যরত মেডিকেল টিম তাকে পরিক্ষা নীরিক্ষা করে, তার মাঝে করোনা ভাইরাসের কোনো ধরনের লক্ষণ দেখা যায়নি। সে নিজেকে করোনা ভাইরাস থেকে নিরাপদ রাখতেই দেশে ফিরেছেন বলে তাদেরকে জানিয়েছেন।’
হাকিমপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নাজমুস সাঈদ বলেন, ‘গত শুক্রবার দুপুরে ওই যুবক চীন থেকে ভারত হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেন। ইমিগ্রেশন চেকপোষ্ট দিয়ে দেশে প্রবেশের সময় কর্তব্যরত মেডিকেল টিম তাকে চেকআপ করে, তার দেহে কোনো জ্বর শর্দি কাশি নেই, সে সম্পূর্ণ সুস্থ হওয়ায় আমরা তার নাম ঠিকানা রেখে তাকে ছেড়ে দিয়েছি। তবে বাড়তি সতর্কতা স্বরুপ আমরা তাকে মাস্ক ব্যবহারের, নিয়মিত জ্বর মাপার পরামর্শ দিয়ে তার বাড়িতেই ১৪ দিন আমাদের পর্যবেক্ষণে রেখেছি।’
আবু রায়হানের মা রোকেয়া বেগম জানান, ‘আজ থেকে ৫মাস আগে আমার ছেলে চীনে পড়ালেখা করতে যায়, সম্প্রতি চীনে করোনাভাইরাস নামের রোগ ছড়িয়ে পড়ায় আমরা তাকে বাড়িতে আসার জন্য বলেছিলাম, সে অনুযায়ী গত শুক্রবার সে দেশে ফিরেছে। সে এখন বাসায় আছে, সম্পূর্ণরুপে সুস্থ ও বেশ ভালো আছে, সেই সাথে প্রশাসনের নির্দেশনা মোতাবেক তাকে বাড়িতেই রাখা হয়েছে। বাড়ির বাহিরে যেতে দেওয়া হচ্ছেনা, আমরা তার দিকে খেয়াল রাখছি।’
পরিদর্শনে গিয়ে দিনাজপুর সিভিল সার্জন আব্দুল কুদ্দুছ জানান, ‘গত শুক্রবার হিলি ইমিগ্রেশন চেকপোষ্ট দিয়ে চীন থেকে ভারত হয়ে এক যুবক বাংলদেশে প্রবেশ করে। সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে তাকে তার নিজ বাড়িতে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। আমি সরেজমিনে তার বাড়িতে গিয়ে দেখা করেছি এবং তার পরিবারের সাথে কথা বলেছি। সে চীন থেকে দেশে ফিরলেও তার মাঝে করোনাভাইরাসের কোনো লক্ষণ পাওয়া যায়নি। তবে তাকে বাড়তি সতর্কতা হিসেবে ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ অনুযায়ী তার নিজ বাড়িতে ১৪ দিনের পর্যবেক্ষণে রাখার বিষয়ে জানিয়েছি ও সেগুলো মেনে চলার জন্য বলেছি।’
এআই/এসি
আরও পড়ুন