নাটোরে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে ব্যাপক প্রস্তুতি
প্রকাশিত : ০৮:৩৫, ১১ মার্চ ২০২০
নাটোরে করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা দিবেন সিভিল সার্জনের নেতৃত্বে র্যাপিড রেসপন্ড মেডিকেল টিম। আক্রান্ত রোগীদের জন্য সদর হাসপাতালে ৫ শয্যার একটি আইসোলেশন ইউনিট গঠনসহ সেবা প্রদানকারী চিকিৎসক ও নার্সদের প্রস্তুত রেখেছে স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগ। এছাড়া জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে একটি টিম গোটা জেলায় চিকিৎসা প্রদানের স্থান নির্ধারণ করে আইসোলেশন ইউনিট গঠনসহ সচেতনতামূলক প্রচার কাজ শুরু করেছেন।
নাটোর সদর হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. আনছারুল হক জানান, সদর হাসপাতালের দোতালায় অন্য ওয়ার্ড থেকে দূরত্ব বজায় রেখে ৫ শয্যার একটি আইসোলেশন ইউনিট গঠন করা হয়েছে। করোনা আক্রান্ত রোগীদের জন্য নাটোর সদর হাসপাতালে এছাড়া নলডাঙ্গা ও বড়াইগ্রাম উপজেলার নির্মাণাধীন ভবনে আইসোলেশন ইউনিট খোলা হয়েছে। শহরতলীর একডালা এলাকায় জেলা সমাজ সেবা অধিদফতরের অব্যবহৃত নারীদের জন্য সরকারি আশ্রয় কেন্দ্র (ভবঘুরে আশ্রয় কেন্দ্র ) চিকিৎসা সেবা প্রদানের জন্য আইসোলেশন ইউনিট প্রস্তুত করা হচ্ছে। এই কেন্দ্রে দুই শতাধিক ব্যক্তিকে রাখা সম্ভব হবে। তবে প্রথম পর্যায়ে এই কেন্দ্রে ৪০ জন রোগীর চিকিৎসা ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে। করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে গঠিত টিম ইতিমধ্যে কাজ শুরু করেছে। ভবঘুরে কেন্দ্রকে বাসযোগ্য করতে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের তত্ত্বাবধানে ইতিমধ্যে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা অভিযান শুরু হয়েছে।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ওমর ফারুক বলেন, সোমবার জেলা প্রশাসক মো. শাহরিয়াজ ইউএনও জাহাঙাগীর আলম, পৌর মেয়র উমা চৌধুরীসহ জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগ এই কেন্দ্রটি পরিদর্শন করার পর পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করার নির্দেশ দেন। জেলা প্রশাসকের ওই নির্দেশের পর থেকে কেন্দ্রের সকল ভবন ও বাহিরের ঝোপঝাড় জঙ্গল পরিষ্কার করে মানুষের বসবাসের উযোগী করা হয়েছে। দ্রুত কাজ সম্পন্ন করার জন্য বিপুল পরিমাণ দিন মজুরসহ ট্রাক্টর ব্যবহার করা হয়েচে। দীর্ঘদিন ব্যবহার না করায় ঝোপঝাড় জঙ্গলে পরিপূর্ণ ছিল।
নাটোরের সিভিল সার্জন ডা. কাজী মিজানুর রহমান জানান, নাটোরে এখনও করোনা ভাইরাস বাহিত কোন রোগী বা ব্যক্তি পাওয়া যায়নি। এতদসত্ত্বেও করোনা আক্রান্ত রোগীদের জন্য চিকিৎসার জন্য র্যাপিড রেসপন্ড মেডিকেল টিম। তিনি নিজে এই টিমের প্রধান হিসেবে রয়েছেন। এই টিমে মেডিসিন বিশেষজ্ঞ, অর্থ পেডিস, র্সাজারি বিশেষজ্ঞ, আবাসিক মেডিকেল অফিসার, নাসিং সুপার ভাইজার এই টিমে রয়েছেন। এছাড়া হাসপাতালে কর্মরত সবাই চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত থাকবেন। নিজেদের ব্যক্তিগত প্রটেকসনেরও প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। তবে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ সম্পর্কে সবাইকে নিয়ম মেনে এবং সর্তক হয়ে চলাচল করার পরামর্শ দেন তিনি।
জেলা প্রশাসক মো. শাহরিয়াজ বলেন, নাটোর জেলা সদর ছাড়াও গোটা জেলায় সর্তক নজরদারি রয়েছে। সদর হাসপাতাল, একডালা সরকারি আশ্রয় কেন্দ্র ছাড়াও নলডাঙ্গ উপজেলায় নির্মাধীন ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল ভবন ও বড়াইগ্রাম স্বাস্থ্য কেন্দ্রের নতুন ভবনে করোনা ভাইরাস রোগীদের জন্য অইসোলেশন ইউনিট করা হয়েছে। জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগ সার্বক্ষণিক তদারকিসহ নজরদারী করছে। গত সোমবার গঠিত টিমগুলোর সাথে দু’দিনে বেশ কয়েকটি বৈঠক করা হয়েছে। চিকিৎসা ব্যবস্থা নিশ্চিত করার পাশাপশি জনসচেতনতা বাড়াতে বিভিন্ন সামাজিক গণমাধ্যমের প্রচারণা ও পোস্টার ওলিফলেট বিতরণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বাহির থেকে বাড়িতে যাওয়ার পর ভালভাবে সাবান দিয়ে হাত ধোয়াসহ পড়নের কাপড় রোদে রাখার জন্য পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। করোনা ভাইরাস নিয়ে অহেতুক আতঙ্কিত না হতে সচেতনতা সৃষ্টির আহ্বান জানান তিনি।
একে//
আরও পড়ুন