নওগাঁয় দুই নার্সের ঘুমের বলি নবজাতক
প্রকাশিত : ১৫:২১, ২০ মার্চ ২০২০
নওগাঁ সদর আধুনিক হাসপাতালে নার্সদের অবহেলায় এক নবজাতকের করুণ মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে ওই শিশু এবং হাসপাতালে অন্য রোগীদের স্বজনদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে নবজাতকের পরিবারের পক্ষ থেকে আজ শুক্রবার সকালে থানায় অভিযোগ করা হয়েছে। এই ঘটনার পর থেকে ওই দুই নার্স পলাতক রয়েছেন।
অভিযোগে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার (১৯ মার্চ) বিকেল ৩টার দিকে নওগাঁ সদর উপজেলার কির্ত্তীপুর ইউনিয়নের হরিরামপুর গ্রামের জহুরুল ইসলামের স্ত্রী প্রসুতী বানু বেগমের একটি পুত্র সন্তান ভুমিষ্ঠ হয়। ভুমিষ্ঠের পর শিশুটির শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে ওই দিন সন্ধ্যায় নওগাঁ সদর হাসপাতালে শিশু ওয়ার্ডে তাকে ভর্তি করা হয়।
এ সময় ওই ওয়ার্ডের কর্তব্যরত সিনিয়র নার্স রোজিনা ও তানিয়া চিকিৎসকের পরামর্শে রাতে শিশুটিকে ফটোথেরাপী দেন। মেশিনটি একটি নির্দিষ্ট সময় পর খুলে দেওয়ার নিয়ম থাকলেও মেশিনটি না খুলে ওই নার্সরা তাদের নির্দিষ্ট কক্ষে দরজা লাগিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন।
মেশিনটি না খোলার কারণে শিশুটির শরীর পুড়ে যেতে শুরু করে। শরীরের একাংশ কালো হতে থাকে। এই অবস্থা দেখে শিশুর পিতা জহুরুল ইসলাম, নানী রওশন আরাসহ অন্য রোগীদের অভিভাবকরা রাত ৩টার দিকে কর্তব্যরত নার্সদের বিশ্রাম কক্ষে গিয়ে ডাকাডাকি শুর করে। কিন্তু নার্সরা ঘুম থেকে না উঠে বদ্ধ কক্ষ থেকে ওই শিশুর অভিভাবকদের জানায় সকাল ৬টার আগে তারা ডিউটিতে যেতে পারবেন না।
এই অবস্থায় রাতেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে নবজাতক।
এ ব্যাপারে নবজাতকের পিতা জহুরুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, ‘ওই দুই নার্স আমাদের সাড়াতে জেগে উঠে শিশুর মুখ থেকে মেশিন খুলে ফেললে আজকে আমার সন্তানকে হারাতে হতো না। ওই দুই নার্সের অবহেলার কারণেই আমার সন্তানের মৃত্যু হয়েছে। আমি এর সুষ্ঠ বিচার চাই।’
এই ঘটনার পর থেকে ওই দুই নার্স পলাতক রয়েছেন। শুক্রবার সকালে ওই নার্সদের হাসপাতালে খুঁজে পাওয়া যায়নি। এমনকি তাদের মোবাইল ফোনও বন্ধ পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা. মুনির আলী আকন্দ বলেন, ‘বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তাদের কারণে ওই শিশুর মৃত্যু হলে ওই নার্সদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
এআই/
আরও পড়ুন