নোয়াখালীতে দ্রব্যমূল্য বেশি নেওয়ায় ৯ লাখ টাকা জরিমানা
প্রকাশিত : ১৮:৫০, ২২ মার্চ ২০২০
সাম্প্রতিক সময়ে করোনা ভাইরাস আতঙ্ককে পুঁজি করে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধির ফলে শুক্র ও শনিবার নোয়াখালী জেলার ৮টি উপজেলায় ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযানে ৯ লক্ষ ৫৩ হাজার ৬শত টাকা জরিমানা করেছেন এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটগণ।
ভ্রাম্যমান আদালতসমূহ জেলার অসাধু ব্যবসায়ী কর্তৃক অতিরিক্ত মূল্য রাখার দায়ে অর্থদন্ড দিলেও নিয়ন্ত্রণ হচ্ছে না নিত্যপ্রযোজনীয় দ্রব্য মূল্য। জেলা প্রশাসক তন্ময় দাসের তাৎক্ষণিক নির্দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের সকল এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটগণ কর্তৃক ৩২টি বাজার অভিযানে ১১৪টি মামলায় ৯ লক্ষ ৫৩ হাজার ৬০০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। অভিযানের পরপরই অসাধু ব্যবসায়ীরা পূণরায় অতিরিক্ত মূল্যেই নিত্যপণ্য বিকিকিনি করছেন।
ক্রেতা সাধারণের সাথে আলাপকালে তারা বলেন, মোবাইল কোর্ট শুধু অর্থদন্ড দিচ্ছে আর সেটা ক্রেতাদের কাছ থেকেই আবার অতিরিক্ত দাম হাকিয়ে তুলে নিচ্ছেন অসাধু ব্যবসায়ীরা। যদি অসাধু ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে শুধু অর্থদন্ড না নিয়ে জেল জরিমানা দুটোই করা হয় তাহলে হয়তো তাদের টনক নড়বে। উভয় দন্ডে দন্ডিত হলে ভয় ও লজ্জা দুটোই কাজ করবে।
চাল পেয়াজসহ অনেক নিত্যপণ্যেরই দাম অনেক বেশি। গত সপ্তাহে যে পেয়াজ বিক্রি হয়েছে ৪০ টাকায় সে পেয়াজ এখন ৭০ থেকে ৮০ টাকা। করোনার কারনে যেভাবে চাল ডালের দাম বাড়ছে তাতেই সাধারণ খেটে খাওয়াম মানুষের মরণদশা। চালের দাম গত মাসে বস্তা ছিল ১৪৫০ টাকা, এখন তা বেড়ে হয়েছে ২২০০ টাকা। ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানের সময় একটি বাজারে এক দোকানকে জরিমানা করতে না করতে বাকি অসাধু ব্যবসায়ীরা দোকানের সার্টার ফেলে রেখে পালিয়ে যায়, আবার কেউ কেউ তখন মূল্য কমিয়ে দেন। সে ক্ষেত্রে অন্য কৌশলে অভিযান পরিচালনা করা যেতে পারে। যেমন, ক্রেতা সেজে পণ্যের তালিকা ও মূল্য উল্লেখ করে রশিদ নিয়ে নেয়া। তারপর রশিদ অনুযায়ী অভিযান পরিচালনা করা যেতে পারে।
এ পরিস্থিতিতে ক্রেতাসাধারণ, জেলার সাধারণ নাগরিকদের দাবি দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে অভিযান অব্যাহত থাকুক, একই সাথে শুধুমাত্র অর্থদন্ড না দিয়ে অসাধু ব্যবসায়ীদের তাৎক্ষণিক জেল জরিমানা করাসহ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
জেলা প্রশাসক তন্ময় দাস জানান নিত্য দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির বিষয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত অবাাহত থাকবে জেলা প্রশাসনের তথ্যানুযায়ী শুক্র ও শনিবার দু দিনের অভিযানে জেলা জেলা প্রশাসন ২লক্ষ ৯০হাজার ১শত টাকা, হাতিয়া উপজেলা ২লক্ষ ২ হাজার টাকা, সুবর্ণচর উপজেলা ১লক্ষ টাকা, চাটখিল উপজেলা-৭২ হাজার ২শত টাকা, কোম্পানিগঞ্জ উপজেলা- ৬৮হাজার টাকা, সদর উপজেলা-৩৯হাজার টাকা, কবিরহাট উপজেলা-৫০হাজার টাকা, সেনবাগ উপজেলা- ৩২ হাজার টাকা, সোনাইমুড়ী উপজেলা-৪৪হাজার ৫শত টাকা, প্রধান বাণিজ্যকেন্দ্র চৌমুহনীতে ৩০টাকা দরে ১৮০০ কেজি পেঁয়াজ বিক্রয়- ৫৫ হাজার ৮শত টাকাসহ সর্বমোট ৯লক্ষ ৫৩হাজার ৬শত টাকা অর্থদন্ড দেন।
এসব অভিযানে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯ ও দন্ডবিধি ১৮৬০ আইন প্রয়োগ করা হয়। এসময় আদালত পরিচালনা করেন জেলা প্রশাসনের এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মো: রোকনুজ্জামান খান ও সংশ্লিষ্ট উপজেলার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাগণ। আদালত পরিচালনায় সহযোগিতা করেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর নোয়াখালী, পুলিশ ও র্যাব-১১সহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
আরকে//
আরও পড়ুন