ঢাকা, শুক্রবার   ১৫ নভেম্বর ২০২৪

করোনা আতঙ্ক: দোহারে ৫০ শয্যার হাসপাতালে রোগী ২!

দোহার-নবাবগঞ্জ (ঢাকা) সংবাদদাতা:

প্রকাশিত : ১৯:৩১, ২৩ মার্চ ২০২০

করোনা ভাইরাসের শঙ্কায় হাসাপাতালগুলোতেও কমে গেছে রোগীর সংখ্যা। ঢাকা জেলার দোহার উপজেলার ৫০ শয্যার সরকারি হাসপাতালে মাত্র ২ জন রোগী ভর্তি রয়েছেন। সোমবার সরেজমিন পরিদর্শন করে দেখা যায়, যে সময়টাতে রোগীদের আগমনে হাসপাতাল থাকত কর্মমূখর। সেখানে খাঁ খাঁ করছে ৫০ শয্যার দোহার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। পুরো হাসপাতালে মনোয়ারা বেগম (৪৩) নামে ও শিখা রানী মালাকার (৪০) নামে দুজন রোগী ভর্তি আছেন। 

অসুস্থ্য  মনোয়ারার স্বজনরা জানান, সোমবার ভোর রাতের দিকে তীব্র পেটে ব্যাথা নিয়ে বাধ্য হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন তিনি। এছাড়া শিখা রানী মালাকার সোমবার বেলা এগারোটায় ভর্তি হয়েছেন বমির সমস্যা নিয়ে। 

দোহার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. জসিম উদ্দিন ও আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. এইচ এম আল-আমিন বলেন, করোনা আতঙ্কে গত ২/৩ তিন ধরে রোগীরা কম আসছেন হাসপাতালে। সরকারি হাসপাতালে যারাও আসছেন তারা জরুরী বিভাগ থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে চলে যাচ্ছেন। তবে আমাদের চিকিৎসক ও নার্সরা সেবা দেয়ার জন্য প্রস্তুত রয়েছে। এ বিষয়ে দোহার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের শিশু ডাক্তার তানিয়া ইয়াসমিন বলেন, আমরা করোনাভাইরাস আতঙ্কের মধ্যেও সেবা দিয়ে যাচ্ছি। আমরা মনে করি এটা আমার দায়িত্ব ও কর্তব্য। তাই আমরা সবার সেবা নিশ্চিতে কাজ করে যাচ্ছি। জানা যায়, বেসরকারি ক্লিনিকগুলোতেও রোগীর সংখ্যা যে কোন সময়ের তুলনায় কম।

দোহার উপজেলায় গত এক মাসে ১০৮ জন বিভিন্ন দেশ থেকে এসেছেন। এদের মধ্যে ৪৬ জনের কোয়ারেন্টাইনের ১৪ দিনের মেয়াদ সম্পন্ন হয়েছে। সোমবার পর্যন্ত ৬১ জনকে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে।

দোহার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. জসিম উদ্দিন জানান, সুইজারল্যান্ড থেকে দোহারে ফেরা এক ব্যক্তিকে রবিবার বিকেলে ঢাকার কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে আইসোলেশন বিভাগে ভর্তি করা হয়েছে। 

এছাড়া রবিবার থেকে দোহারের নারিশা ও মৈনটঘাট পারাপার বন্ধ করে দিয়েছে প্রশাসন। এছাড়া দোহারে রবিবার বিকেল থেকে ইজিবাইক চলাচলের উপরে নিষেধাজ্ঞা থাকায় ইজিবাইকগুলো রাস্তায় সীমিত আকারে চলতে দেখা যাচ্ছে। এর আগে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য, ওষুধের দোকান ও মুদি দোকান ব্যাতিত সব দোকানপাট বন্ধের ঘোষনা দেন উপজেলা প্রশাসন।

এ বিষয়ে দোহার থানার ওসি তদন্ত ও ফোকাল অফিসার মো. আরাফাত হোসেন জানান, করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় আমরা আমাদের ওসি স্যারের নির্দেশে আমাদের মত চেষ্টা করে যাচ্ছি। যারা বিদেশ থেকে এসেছে তাদেরকে বিভিন্ন তথ্যের ভিত্তিতে সত্যতা নিশ্চিত করে তারা যাতে বাহিরে ঘুরাফেরা না করে তা দেখছি। এছাড়া আমরা আমাদের থানা, ফুলতলা তদন্ত কেন্দ্র ও চর মাহমুদপুর ফাঁড়িতে জনসচেতনতা মুলক প্রচার চালাচ্ছি। তার অংশ হিসেবে হ্যান্ড ওয়াস দিয়ে থানায় বিভিন্ন কাজে আসা ব্যক্তিদের হাত ধোয়ার ব্যবস্থা করেছি। 

এদিকে উপজেলা প্রশাসন থানা প্রশাসনকে সঙ্গে নিয়ে বিদেশ ফেরত প্রবাসীদের সতর্কতা মাঠে কাজ করছে। যারা নির্দেশ অমাণ্য করছেন তাদের বাড়িতে গিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আফরোজা আক্তার রিবার নেতৃত্বে উপজেলা সহকারি কমিশনার ( ভূমি) জ্যোতি বিকাশ চন্দ্র, থানা পুলিশ ও আনসার সদস্যরা লাল নিশান ( পতাকা) টানিয়ে দিচ্ছে। যাতে এলাকার লোকজন জানে বা নিশ্চিত হন ওই বাড়িতে একজন প্রবাসী এসেছেন।

এদিকে করোনা আতঙ্কে দোহারের নারিশা ও মৈনটঘাট পারাপার সহ দোকানপাট বন্ধ করে দিয়েছে থানা প্রশাসন। এক্ষেত্রে চর মাহমুদপুর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. শাহ আলম অন্য অফিসারদের নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। 

আরকে//


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি