বাড়ি ফিরেছে করোনা সন্দেহে শেবাচিমে ভর্তি যুবক
প্রকাশিত : ২৩:৫৮, ১ এপ্রিল ২০২০
বাড়ি ফিরেছেন করোনা আক্রান্ত সন্দেহে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা যুবক নোমান (২৫)। সাত দিনের চিকিৎসা শেষে সুস্থ্য হয়ে গতকাল মঙ্গলবার পটুয়াখালীর বাউফলের নাজিরপুর ইউপির নিমদী গ্রামের বাড়ি ফিরেছেন তিনি।
এর আগে ঢাকা থেকে বাড়ি এসে জর, কাশি নিয়ে দাসপাড়া ল্যাড়ামুন্সিরপুল এলাকায় তার শশুর বাড়ি উঠলে স্থানীয় লোকজনের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এবং নিমদী লঞ্চঘাট এলাকার মো. হেমায়েদ উদ্দিনের ছেলে নোমানকে উদ্ধার করে (২৪ মার্চ) বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপতালের করোনা ইউনিটে ভর্তি করে প্রশাসনের লোকজন। সুস্থ্যতায় হাসপাতাল থেকে তাকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়। তার নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকায় পাঠানো হলে এখনো তার রিপোর্ট আসেনি। ঘরে বসেই করোনা টেস্টের রিপোর্ট পাওয়া যাবে জানিয়ে হাসপাতালের চিকিৎসক তাকে ছাড়পত্র দেয় জানিয়েছেন নোমান। তবে তাকে ও তার সংস্পর্শে থাকা ৩১ জনকে রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা প্রশান্ত কুমার সাহা।
এদিকে সুস্থ্য হয়ে নোমান বাড়ি ফেরায় তার ও তার শশুড় বাড়ি এলাকার মানুষের মাঝে সস্তি ফিরলেও করোনা প্রতিরোধে উপজেলার শ্রমিজীবি মানুষগুলো সামাজিক দূরত্ব বজায় না রাখায় উৎকন্ঠায় সচেতন মহল। অভিযোগ পাওয়া গেছে, ইঁদুর-বিড়াল খেলায় চলছে পৌর সদরসহ কয়েকটি বানিজ্য বন্দরের দোকানপাঠ। পুলিশ, সেনাসদস্য ও প্রশাসনের লোকজনের টহল, মাইকিং, বিলবোর্ড, লিফলেট, মাক্স, সাবান, হ্যান্ডসেনিটাইজার ও খাদ্য সহায়তার মতো বিভিন্ন সচেতনতা কার্যক্রম চলমান থাকলেও সামাজিক দূরত মানছে না শ্রমজীবি মানুষগুলো। স্পল্প সময়ের জন্য ওষুধ, খাদ্য সামগ্রী, কাঁচাবাজারসহ সামান্য কিছু দোকানপাঠ খোলার নির্দেশনা থাকলেও বগা, নুরাইনপুর, কালিশুরী, কালাইয়া বানিজ্যবন্দরসহ নওমালা, বগীবাজার, বাজেমহল, মমিনপুর, ভূঁইয়ারবাজার, চৌরাস্তা, ধানদী, কেশবপুরের মতো গ্রামীন হাট-বাজারগুলোর অধিকাংশ দোকানপাঠ, টি-স্টল ও ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান সুযোগ বুঝে খোলারাখা হচ্ছে। ইঁদূর বিড়াল খেলারমতো পুলিশ, সেনা সদস্যদের টহল কিংবা প্রশাসনের লোকজনের উপস্থিতি টের পেলে এসব দোকানপাট বন্ধ করা হয়, আবার খোলা হয় এরা চলে গেলেই। পৌর সদরের সীমিত হলেও সদরের বাহিরে বিভিন্ন এলাকায় অটোরিক্সা, রিক্সা ও মোটরসাইকেল চলাচল অব্যহত রয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পেশাগত দায়িত্ব পালনে বের হওয়া স্থানীয় একাধিক সংবাদকর্মী জানান, করোনা ঠেকাতে প্রশাসনের লোকজনের কঠোর নির্দেশনা থাকলেও তা ঠিকঠাক মানা হচ্ছে না। বিভিন্ন এলাকায় শ্রমজীবি মানুষগুলো পেটের দায়ে মানছে না সামাজিক দূরত্ব। বানিজ্য বন্দরগুলোতেও সুযোগমতো খোলা হচ্ছে বিভিন্ন ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান।
এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে উপজেলার অসহায় অসুস্থতায় চিকিৎসা না পাওয়া ও কর্মহীন ক্ষুদার্ত মানুষের খোঁজে ‘করোনা প্রতিরোধে আমরা’ নামে আইডি নামে খুলেছেন একদল যুবক। সেখানে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকা অসহায় রোজ আয়ের নি¤œবিত্ত মানুষের খোঁজ পেয়ে খাদ্য সাহায্য পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন সাংবাদিকদের জানান, অসচেতনতার কারণে কিছু অসাদু ব্যাবসায়ি সুযোগে দোকানপাট খুলতে পারে। তবে পুলিশ, সেনা সদস্যসহ প্রশাসনের লোকজন বিরামহীন কাজ করে যাচ্ছে। হতোদরিদ্র পরিবারগুলোকে খাদ্য সহায়তাও প্রদান করা হচ্ছে।
আরকে//
আরও পড়ুন