ত্রাণ সামগ্রী ডাকাতি করল সিসিক কাউন্সিলর!
প্রকাশিত : ১২:৪৩, ৪ এপ্রিল ২০২০ | আপডেট: ১২:৪৮, ৪ এপ্রিল ২০২০
বিশ্বে মহামারি আকার ধারণ করা করোনা ভাইরাসের ক্রান্তিকালে গরীব অসহায়দের জন্য দেয়া ত্রাণ সামগ্রী ডাকাতি করার অভিযোগ উঠেছে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের (সিসিক) এক কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে।
গত ১ এপ্রিল (বুধবার) রাত ১১টার দিকে সিসিকের ৩নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আবুল কালাম আজাদ লায়েক’র বিরুদ্ধে ডাকাতির অভিযোগ উঠে।
সিসিক সূত্রে জানা যায়, গত বুধবার রাত ১১টার দিকে ৩নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আবুল কালাম আজাদ লায়েক’র বিরুদ্ধে জোর করেই ১২৫ বস্তা চাল নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠে। রাতের আধারে জোর করে নেওয়া গাড়িভর্তি সিসিক এর ‘খাদ্য ফান্ড’র ১২৫ বস্তা চাল শুক্রবার (০৩ এপ্রিল) বিকেলে সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) ৩নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর এ কে এ লায়েকের মুন্সিপাড়া বাসা থেকে জব্দ করে সিলেট সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষ। পরে সিসিকের দুই কর্মকর্তা নারকোটিকস বিভাগের সাব ইন্সপেক্টর হুমায়ন কবীর ও পিন্টু রায় ১২৫ বস্তা চাল সিসিকের গাড়িতে করে নিয়ে আসেন।
এ বিষয়ে ‘খাদ্য ফান্ড’ গ্রহণ ও বন্টন শাখায় নিয়োজিত সিলেট সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা মাহবুব হোসেন বলেন, ওইরাতে ত্রাণ গ্রহণের ঝামেলা থাকাতে গাড়িতে থাকা ১২৫ বস্তা চালের গাড়িটি নিয়ম না মেনে নিয়ে যান ওই কাউন্সিলর। বিষয়টি বিদ্যুৎ শাখার নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রুহুল আলমকে জানিয়ে ১২৫ বস্তা চাল নিয়েছেন মর্মে উপস্থিত ওই কাউন্সিলরের স্ত্রীর স্বাক্ষর রেখেছি।
তিনি বলেন, বিষয়টি জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের নেতাদের জানালেও তিনি চালের গাড়ি ফেরত দেননি। এরপরও স্থানীয় আওয়ামী লীগের মাধ্যমে সার্ভে করে দেখা গেছে ১ হাজার ৫৩৮ পরিবার আছে ওই ওয়ার্ডে। আর সিসিকের সার্ভেতে এসেছে ১৮শ’ পরিবারের হিসাব। এরপরও ওই কাউন্সিলরের ওয়ার্ডে বাড়তি হিসেবে ২ হাজার ৫শ’ প্যাকেট দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন মেয়র।
এ বিষয়ে সিলেট সিটি করপোরেশনের ৩ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আবুল কালাম আজাদ লায়েক একুশে টেলিভিশনকে বলেন, গত ১ এপ্রিল সিলেট সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারা ১২৫ বস্তা চাল ট্রাকসহ তার ওয়ার্ড অফিসে পাঠিয়েছিলেন। সেটির রশিদ তার কাছে রয়েছে। কথা ছিলো পরবর্তীতে তার ওয়ার্ডের ২৫০০ মানুষের খাদ্য দেওয়ার জন্য সিটি করপোরেশন তেল, ডালসহ অন্যান্য মালামাল পাঠাবে। পরে সিদ্ধান্ত দেওয়া হয় যে, সিটি করপোরেশন প্যাকেজিং করে ত্রাণের প্যাকেট পাঠাবে। এ কারণে ওই চাল ফিরিয়ে দেওয়া হয়।
তিনি বলেন, সিলেট সিটি করপোরেশন থেকে এভাবে অনেক কাউন্সিলর চালসহ ত্রাণের মালামাল নিয়ে গেছেন। সেগুলো তারা নিজেরাই প্যাকেট করে বিতরণ করেছেন। সুতরাং এখানে চাল চুরির যে অপবাদ দেওয়া হচ্ছে সেটি ভুয়া। চাল গ্রহণ ও ফিরিয়ে দেওয়ার দুটি রশিদই তার কাছে রক্ষিত আছে বলে জানান।
সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, বুধবার (০১ এপ্রিল) রাতে নগর ভবনের ফটক থেকে ত্রাণের চাল ভর্তি গাড়িটি নিজ বাসায় নিয়ে যান ওই কাউন্সিলর। এটা যথারীতি শৃঙ্খলাপরিপন্থি।
তিনি বলেন, ওই কাউন্সিলরকে তার ওয়ার্ডের দরিদ্র মানুষের তালিকা দিতে বললে তিনি সাড়ে ৬ হাজার পরিবারের তালিকা জমা দেন সিসিকে। যা ভোটারের থেকেও বেশি হতে পারে। কিন্ত স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও সাবেক কাউন্সিলরদের দিয়ে সার্ভে মতে ওই ওয়ার্ডে ১ হাজার ৫৩৮ পরিবার রয়েছে, যারা ত্রাণ পেতে পারে। এরপরও তাকে ২৫০০টি প্যাকেট বাড়তি দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছি।
এ বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানা গেছে।
এমবি//
আরও পড়ুন