ঢাকা, মঙ্গলবার   ০৫ নভেম্বর ২০২৪

সিরাজগঞ্জে ৫৩০ তাঁত শ্রমিক পরিবারের দায়িত্ব নিল লাভলু

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ২০:৪০, ৬ এপ্রিল ২০২০

করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত সিরাজগঞ্জের সদর ও এনায়েতপুরে তার কারখানায় কর্মরত বেকার ৫৩০ জন তাঁত শ্রমিক, কর্মচারী পরিবারের হাল ধরেছেন তাঁতী আফজাল হোসেন লাভলু। 

তিনি অসহায় এসব তাঁত শ্রমিক ও তার পরিবারের খাবারের নিশ্চয়তা দিতে সপ্তাহে যতটুকু চাল, ডাল, লবন, তেল লাগবে তার পুরোটাই প্রতি সপ্তাহে সরবরাহ দিচ্ছেন তিনি। তার এই মহতী উদ্যোগ দরিদ্র শ্রমজীবি মানুষের মাঝে আশার সঞ্চার হয়েছে। এদিকে জাতীয় কারুশিল্প পদক প্রাপ্ত তাঁতী আফজাল লাভলু সরকারের কাছে দাবী জানিয়ে বলেছেন, বর্তমান সংকটময় পরিস্থিতিতে গার্মেন্ট শ্রমিকদের সরকার প্রনোদনা দিলেও তাঁত বন্ধের কারনে বেকার প্রায় ৫ লক্ষাধিক শ্রমিকের কোন সহায়তা জোটেনি।

জানা যায়, করোনা সংক্রমণের বিস্তার ঠেকাতে গ৩ ২৫ মার্চ সাড়া দেশে সবাইকে ঘর থেকে বের না হতে সতর্কতা জারি করে সরকার। এরপর হতেই দেশের তাঁত শিল্প সমৃদ্ধ সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর, বেলকুচি, উল্লাপাড়া, এনায়েতপুর, সদর ও কাজিপুরের তাঁত কারখানার প্রায় ২ লক্ষাধিক তাঁত বন্ধ হয়ে যায়। এ জন্য বেকার হয়ে পড়ে প্রায় ৫ লক্ষাধিক তাঁত শ্রমিক। কাজ না থাকায় অনেকেই এখন খেয়ে না খেয়ে দিন যাপন করছে। উৎপাদন বন্ধ ও হাট বাজারে কাপড় বিক্রি না থাকায় তাঁত মালিকদের অবস্থাও শোচনীয়। তাই সিরাজগঞ্জের তাঁত শিল্প বিপর্যয়ে পড়েছে। এই অবস্থায় জেলার এনায়েতপুর থানার খামার গ্রামের ‘টাঙ্গাইল তাঁত বাজার’ তাঁত কারখানার সত্ত্বাধিকারী আফজাল হোসেন লাভলু বেকার তাঁত শ্রমিকদের জন্য বিশেষ সহায়তা প্রদান করেছে। খামারগ্রাম ও সদর উপজেলার শিয়ালকোলের কারখানা গুলোতে ৩৩০টি তাঁতে কর্মরত ৫৩০ জন নারী-পুরুষ শ্রমিক-কর্মচারীকে করোনার সংকট যত দিন চলবে ততদিন প্রতি সপ্তাহে পরিবারের জন্য খাদ্য সহায়তা দেবে। 

সোমবার সকালে খামারগ্রামের নিজ বাড়ি থেকে এই সহায়তা বাবদ প্রত্যেক তাঁত শ্রমিককে ১ থেকে ২ হাজার করে টাকা প্রদান করেন আলহাজ্ব আফজাল হোসেন লাভলু ও তার ছোট ভাই তোফাজ্জাল হোসেন বাবলু। নিজেদের কাছে না থাকলেও ১৫ লাখ টাকা ব্যাংকে থেকে ঋন করে শ্রমিকদের মাঝে প্রথম ধাপে বন্টন করেছেন। শুধু তাই নয়, পুরো করোনা সংকটে তাঁতীদের পাশে থাকার ঘোষণা দিয়েছে।

এ ব্যাপারে আলহাজ্ব আফজাল হোসেন লাভলু জানান, করোনায় সিরাজগঞ্জ সহ সাড়া দেশের তাঁতী ও তাঁত শ্রমিক বেকার। আমরা কোন রকমে চলতে পারলেও এই শ্রমিকরা এখন একেবারেই অসহায়। পরিবার নিয়ে খুব কষ্টে দিন যাপন করছে। আমি তাদের দুর্দশা অনুভব করে এই সিদ্ধান্ত গ্রহন করেছি। আমাদের প্রত্যেকেরই যার-যার স্বামর্থ নিয়ে এসব অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে। কারণ, তাদের হাতের স্পর্শে সিরাজগঞ্জ আজ তাঁত শিল্পে সমৃদ্ধশালী। তিনি সরকারের কাছে এদের দুঃসময়ে পাশে থাকার আহ্বান জানান।

এদিকে সহায়তা পাওয়া খামারগামের তাঁত শ্রমিক হেমন্ত শীল, বারবয়লা চরের আমিরুল ইসলাম ও বা²নগ্রামের সালমা খাতুন জানান, কোন কারখানার তাঁত মালিক এই চরম বিপদে শ্রমিকদের পাশে দাঁড়ায়নি। সরকার থেকেও সহায়তা জোটেনি। তবে লাভলু ও বাবলু ভাই আমাদের পুরো সংসারের দায়িত্ব নিয়েছে। তাদের মহানভবতা আমাদের গরীব দুখী মানুষের আশির্বাদ স্বরুপ।

এমবি//


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি