করোনাতঙ্কে লাশ দাফনে ধারে কাছে এলো না গ্রামবাসী
প্রকাশিত : ১০:৩০, ৭ এপ্রিল ২০২০
দেশের অন্যান্য স্থানের ন্যায় পটুয়াখালীতেও পড়েছে করোনার প্রভাব। ভাইরাসটিতে মৃত্যু না হলে আতঙ্কে দাফন কাজে আসেনি এলাকাবাসী।
ঘটনা জেলার বাউফ উপজেলায় নওমালা ইউনিয়নের বটকাজল গ্রামে। সোমবার জ্বর ও চর্মোরোগে রাবেয়া (১২) নামে এক মাদ্রাসা শিক্ষার্থী মারা যায়। কিন্তু করোনা আক্রান্ত সন্দেহে কেউ কাছে আসেনি। পরে পরিবারের লোকজন গোসল ও জানাজা শেষে দাফন কাজ সম্পন্ন করেন।
মৃত ওই শিক্ষার্থী ওই গ্রামের প্রতিবন্ধী ফোরকান বাগার মেয়ে। সে উপজেলার আদাবাড়িয়া ডিএস আলিম মাদ্রাসায় সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী ছিলেন।
জানা গেছে, কয়েকদিন আগে জ্বর ও চর্মরোগে আক্রান্ত হয়ে স্থানীয় এক পল্লী চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ খায় রাবেয়া। অবস্থার অবনতি হলে রোববার বিকালে ফের ওই চিকিৎসকের কাছে গেলে তাকে একটি ইনজেকশন পুশ করেন ওই চিকিৎসক। এরপর বাড়িতে এলে শরীর ফুঁলে ওঠে ও সোমবার সকালে মারা যায় সে।
এদিকে সবার মুখে রাবেয়া করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন বলে গুজব ছড়িয়ে পড়ে পুরো গ্রামে। এতে ভয়ে পরিবারের লোকজনদের সমবেদনা জানাতেও আসেননি কেউ। জানাযার নামাজ কিংবা লাশের গোসলের জন্য পাওয়া যায়নি প্রতিবেশী কাউকে। অনেকটা নিরুপায় হয়ে পরিবারের লোকজনই গোসল দিয়ে দাফন সম্পন্ন করে।
এ ব্যাপারে রাবেয়ার মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা আবদুদ দাঈয়ান বলেন, ‘আমি কোন শিক্ষার্থীর মৃত্যুর খবর পাইনি। জানতে পারলে করোনায় মৃত্যু হলেও বিশেষ ব্যবস্থায় জানাযায় শরিক হতাম।’
এ ব্যাপারে নওমালা ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার জাহাঙ্গীর আকন বলেন, ‘কয়েকদিন থেকে জ্বর ও চর্মরোগে ভুগছিল রাবেয়া। সোমবার সকালে সে (রাবেয়া) মারা যায়। এরপর করোনায় রাবেয়ার মৃত্যু হয়েছে বলেও গ্রামে খবর ছড়িয়ে পড়ে। এতে ভয়ে কেউ ওই বাড়িতে যায়নি। জানাযার নামাজ এবং দাফন কাফনেও কেউ অংশ নেয়নি।’
এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. প্রশান্ত কুমার সাহা সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিষয়টি এক সাংবাদিকের কাছে শুনেছি। যা মনে হয় সে করোনায় আক্রান্ত ছিল না। চর্মরোগের যথাযথ চিকিৎসা না পেয়ে তার মৃত্যু হতে পারে। এ বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হবে।’
এআই/
আরও পড়ুন