ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রতিপক্ষের হামলায় পা হারোনো ব্যক্তির মৃত্যু
প্রকাশিত : ১৫:৩৫, ১৫ এপ্রিল ২০২০
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে প্রতিপক্ষের হামলায় পা হারানো মোবারক মিয়ার (৪৫) মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার দিবাগত রাত ২টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। সে থানাকান্দি গ্রামের মধু মিয়ার পুত্র।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুহাম্মদ আলমগীর হোসেন মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে গত ১২ এপ্রিল ওই উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের হাজিরহাটি গ্রামে সংঘর্ষে মোবারকের বাম পা গোড়ালির ওপর থেকে কেটে তা হাতে নিয়ে ‘জয় বাংলা’ স্লোগানে মিছিল করে প্রতিপক্ষ।
মোবারকের পরিবারের সদস্যরা জানায়, সন্ত্রাসীরা মোবারককে গুরুতর আহত করার পর সে চার দিন হাসপাতালে থেকে অবশেষে মারা গেছেন। ঘটনার পরপরই তাকে আহত করার সঙ্গে জড়িত কয়েকজনের পরিচয় মোবাইলে করা ভিডিওতে প্রকাশ করেন মোবারক। তাদের মধ্যে থানাকান্দি গ্রামের সিরাজ মিয়ার ছেলে খোকন, হাজিরহাটি গ্রামের মাঈনুদ্দিনের ছেলে রুমান, জিল্লুর রহমানের ছেলে শাহিন ও মালির ছেলে জাবেদের নাম রয়েছে। এছাড়া অন্যদের সে চিনতে পারেনি। তার সেই ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়।
মোবারকের স্ত্রী সাবিয়া আক্তার বলেন, ‘ঢাকায় রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন মোবারক। করোনা পরিস্থিতির কারণে তিনি বাড়িতে চলে আসেন। গ্রামে দু-পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হলে নিজের ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেন তিনি। তবুও শেষ রক্ষা হয়নি।’
স্ত্রীর সামনেই তাকে মাটিতে শুইয়ে কোপানো হয় উল্লেখ করে তিনি অভিযোগ করেন, ‘সে সময় ঘটনার অদূরে থাকা পুলিশ সদস্যদের কাছে সাহায্য চাইলেও কোনো প্রকার সাড়া দেয়নি তারা।’
সাবিয়া জানান, মোবারক গ্রামের কোনো দাঙ্গা-হাঙ্গামার সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। ঢাকায় তার জন্ম ও বেড়ে উঠা। এমনকী, তিনি বিয়েও করেছেন ঢাকায়। অথচ গ্রাম্য দলাদলির জেরে তাকে জীবন দিতে হয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুহাম্মদ আলমগীর হোসেন বলেন, ‘এখন পর্যন্ত এ ঘটনায় মোট ৪৩ জনকে আটক করা হয়েছে। সংঘর্ষের ‘প্রধান দুই অভিযুক্ত’ কৃষ্ণনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমান ও থানাকান্দি গ্রামের সর্দার আবু কাউসার মোল্লাকে আটকের পর কারাগারে পাঠানো হয়েছে।’
প্রসঙ্গত, এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমানের সঙ্গে কাউসার মোল্লার দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছে। চলমান এ বিরোধের জেরে গত রোববার উভয়পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। থেমে থেমে চলা এ সংঘর্ষে অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছে। সংঘর্ষ চলাকালে বেশ কয়েকটি ঘর-বাড়িতে অগ্নিসংযোগ এবং হামলা-ভাংচুর ও লুটপাট করা হয়। এর আগেও, বিভিন্ন সময় এই দুই পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে হতাহতের ঘটনা ঘটে।
এমবি//
আরও পড়ুন