কলারোয়ায় ধানে নেক ব্লাস্ট রোগ: কৃষক দিশেহারা
প্রকাশিত : ১৭:০৪, ১৭ এপ্রিল ২০২০
সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলায় ইরি-বোরো ধানখেতে নেক ব্লাস্ট (ধানের গলাপচা) রোগের আক্রমণ দেখা দিয়েছে। কীটনাশক প্রয়োগ করেও কোনো লাভ না হওয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষকেরা।
উপজেলা কৃষি অফিস ও চাষীরা জানান, এবার উপজেলার ১২ টি ইউনিয়নের বেপক হারে বোরো চাষ হয়েছে। হঠাৎ প্রতিকূল আবহাওয়ায় উপজেলায় এ রোগ ছড়িয়ে পড়ছে। এ রোগের প্রভাবে খেতের ধানের শিষ আস্তে আস্তে সাদা হয়ে শুকিয়ে যাচ্ছে। ধান চিটা হয়ে যাচ্ছে।
উপজেলার শাকদাহ, কলাটুপি, পাটুলী ও কুশোডাঙ্গা ইউনিয়নের বিভিন্ন মাঠ ঘুরে কৃষকদের কথা বলে জানা গেছে, অনেক জমির বোরো ধানের শিষ সাদা হয়ে গেছে। শিষের গোড়ায় প্রথমে এ রোগ দেখা দিয়ে ক্রমান্বয়ে তা পুরো শিষকে গ্রাস করে। এ অবস্থায় কৃষকেরা দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। উপজেলার কলাটুপি গ্রামের কৃষক শরিফ আহম্মেদ বলেন, ৫০ শতক জমিতে ২৮ জাতের ধান চাষ করেছি। গাছ দেখে মনে হয়েছিলো ফলন ভালো হইবে। কিন্তু হঠাৎ করে এই রোগ জমির ধান খেতের শিষগুলা শুকায়ে নষ্ট হচ্ছে। ওষুধ দিয়াও ভাল হচ্ছে না। উপজেলার কুশোডাঙ্গা ইউনিয়নের ধান চাষি শফিকুল ইসলাম বলেন, তাঁর এলাকায় এ রোগ ব্যাপকভাবে দেখা দিয়েছে। কৃষি বিভাগের পরামর্শ অনুযায়ী খেতে কীটনাশক দিয়েও কোনো লাভ না হওয়ায় তিনি দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। এ রোগ দমনে সঠিক পরামর্শের জন্য কৃষকরা কৃটনাশকের দোকান গুলিতে ভিড় জমাচ্ছে। এদিকে উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মহাসীন আলী জানান, আমরা মাঠে গিয়ে কৃষকদের মধ্যে পরামর্শ দিচ্ছি। এখন রোগ কিছুটা নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ওই কৃষি কর্মকর্তাদের মতে, এখন পর্যন্ত উপজেলায় মাত্র কিছুর জমির ধান ওই রোগে নষ্ট হয়েছে। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার উপজেলার কলাটুপি, পাটুলী, পিছলাপোল, কুশোডাঙ্গা ইউনিয়ন ঘুরে দেখা গেছে, কয়েক বিঘা ইরি, বোরো খেতে শিষ থাকলেও তাতে কোনো ধান নেই। খেতে শুধু খড় রয়েছে। কলাটুপি গ্রামের মৌমিন ৩বিঘা জমি বরগা নিয়ে ২৮ জাতের ধান চাষ করেছেন।
তিনি বলেন, জমিতে তিনবার স্প্রে করেছি। এবার জমির মালিককে কোথা থেকে ধান দেব, সেই চিন্তায় আছি। ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের এক নেতা বলেন, ব্লাস্ট রোগের কারণে কৃষক এবার পথে বসবে। ধানের শিষ থাকলেও তাতে কোনো ধান নেই।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তারা বলেন-কয়েক দিনের বেলায় গরম রাতে ঠান্ডা আবহাওয়ায় ২৮ জাতের ধানখেতে ওই রোগ দেখা দিয়েছে। তবে ছত্রাকনাশক প্রয়োগ করে সুফল পাওয়া যাচ্ছে। আবহাওয়া প্রতিকূল হওয়ায় নেক ব্লাস্ট রোগ দেখা দিয়েছে। যেসব জমি এখনো সংক্রমিত হয়নি বা কেবল সংক্রমণ দেখা দিয়েছে, সেগুলোতে প্রতিরোধক হিসেবে কাসোবিন, নাটিভো ট্রপার ছত্রাকনাশক ছেটানোর পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা মাঠে ঘুরে ঘুরে কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছেন।
আরকে/
আরও পড়ুন