মোংলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল টেকনোলজিস্ট’র অবসরের আবেদন
প্রকাশিত : ২০:৩০, ১৮ এপ্রিল ২০২০
করোনা উপসর্গ পরিলক্ষিত রোগীর সংস্পর্শে যেতে না চাওয়া, করোনা রোগীর নমুনা সংগ্রহ এবং এ ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষার কাজ না করার জন্যই মূলত মোংলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একমাত্র মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ল্যাব) চাকরি থেকে স্বেচ্ছায় অবসরের আবেদন করেছেন। তবে এখন পর্যন্ত তার আবেদনের বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত না হলেও আবেদনের পর থেকে তিনি কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন।
এদিকে এ বিষয় নিয়ে কোন কথা বলতে রাজি হননি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. জীবিতেষ বিশ্বাস। তবে ওই মেডিকেল টেকনোলজিস্ট অবসর চাওয়া পত্রে তার শারীরিক অসুস্থতার কথা উল্লেখ করেছেন।
৫০ শয্যার এ সরকারী হাসপাতালে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে চাকুরি করে আসছেন অনিমেষ সাহা। হাসপাতালটিতে তিনি একাই রোগীদের এক্সরে ও প্যাথলজির কাজ করে আসছিলেন। এ বিভাগে তিনি ছাড়া অন্য কোন লোকও নেই। হঠাৎ করে নিজের শারিরীক অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে গত ১২ এপ্রিল তিনি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের বরাবর চাকুরি হতে স্বেচ্ছায় অবসরের লিখিত আবেদন করেছেন। আবেদনের পর থেকেই তিনি কর্মস্থলে যাওয়া থেকে বিরত রয়েছেন। যদিও শনিবার পর্যন্ত তার আবেদন মঞ্জুর কিংবা বাতিলের কোন সিদ্ধান্তই হয়নি।
অবসর আবেদন করার পর থেকে তিনি গা ঢাকা অবস্থায়ই রয়েছেন। তার মোবাইল ফোনও বন্ধ রয়েছে। ফলে তার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। করোনার দুর্যোগকালীন মুহূর্তে দায়িত্ব থেকে এভাবে অবসর নেয়ার আবেদন ও কর্মস্থলে উপস্থিত না থাকার বিষয়টি কতটা যৌক্তিক সে বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: জীবিতেষ বিশ্বাস কোন কথা বলতে রাজি হননি।
এদিকে হাসপাতালের একমাত্র মেডিকেল টেকনোলজিস্টের অনুপস্থিতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন রোগী সাধারণ। এছাড়া অনিশ্চিয়তা দেখা দিয়েছে করোনা উপসর্গ পরিলক্ষিত রোগীর নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষা-নিরীক্ষার ক্ষেত্রে।
এ বিষয়ে বাগেরহাট সিভিল সার্জন ডা: হুমায়ন কবির বলেন, স্বেচ্ছায় অবসরে যাওয়ার তার অধিকার রয়েছে। চলমান করোনা পরিস্থিতির মধ্যে তার অবসরে যাওয়ার আবেদন প্রক্রিয়া কতটা যৌক্তিক এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখানে আইনগতভাবে স্বেচ্ছা অবসরের পুরো অধিকার তার আছে। আবেদনের বিষয়ে এখন কোন সিদ্ধান্ত হয়নি বলে স্বীকার করে তিনি আরো বলেন, আবেদনে তিনি নির্দিষ্ট একটা সময় থেকে অবসর চেয়েছেন। সেই নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত অবশ্যই তাকে কর্মস্থলে থাকতে হবে। কর্মস্থলে থাকা না থাকার বিষয়টিও তিনি খুব গুরুত্বের সাথে দেখবেন বলেও জানান।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: রাহাত মান্নান বলেন, এই মুহূর্তে তার স্বেচ্ছা অবসরের বিষয়টি সংশ্লিষ্ট বিভাগের উর্ধতন কর্মকর্তারাই সিদ্ধান্ত নিবেন। যেহেতু করোনায় অনেকে মারা যাচ্ছে, তার সেই ভীতিও হতে পারে। এটি মূলত সাইক্লোজিক্যাল বিষয়। তিনি আরো বলেন, সুযোগ সব সময় আসেনা, করোনাকে ঘিরে দেশ মাতৃকার সেবার যে সুযোগটা এসেছে তার এই সুযোগ গ্রহণ করা উচিৎ ছিলো। তারপরও মেডিকেল টেকনোলজিস্টের পদটিতে নতুন কাউকে যাতে দেয়া হয় সেজন্য তিনি সংশ্লিষ্ট দপ্তরে কথা বলবেন বলেও জানান তিনি।
কেআই/এসি
আরও পড়ুন