কলারোয়ায় ছাত্র হত্যার ঘটনায় মামলা, গ্রেপ্তার ৩
প্রকাশিত : ১৬:৩২, ২৪ এপ্রিল ২০২০ | আপডেট: ১৬:৫৬, ২৪ এপ্রিল ২০২০
কলারোয়ায় কলেজ ছাত্রকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় থানায় ১০ জনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা (নং-১৮) দায়ের হয়েছে। শুক্রবার সকাল ১১ টায় নিহত ছাত্রের বাবা উপজেলার যুগীখালী ইউনিয়নের পাইকপাড়া গ্রামের বজলুর রহমান শেখ বাদী হয়ে এ মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৪/৫ জনকে আসামী শ্রেনী ভূক্ত করা হয়। এ ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
থানা পুলিশ ও গ্রামবাসী জানায়, উপজেলার পাইকপাড়া গ্রামের কামরুল ইসলামের মেয়ে সায়মা জামান ময়না (১৬) সাথে একই গ্রামের বজলু রহমান শেখের ছেলে তুষার হোসেন জনির প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। ময়না পার্শ্ববর্তী ছলিমপুর ছালেহা হক বালিকা বিদ্যালয়ের দশম শ্রেনীর ছাত্রী ও তুষার ঢাকা পলিটেকনিক কলেজের ২য় বর্ষের ছাত্র। গত বুধবার গভীর রাতে ময়না তুষারের সাথে মোবাইল ফোনে প্রেমালাপ করছিলো। বিষয়টি জানতে পেরে সোনামনির বাবা কামরুল ইসলাম মেয়েকে মারপিট করে। এক পর্যায়ে মেয়ে ময়নাকে দিয়ে মোবাইল ফোনে তুষারকে ঘরের পিছনের রাস্তায় দেখা করার জন্য আসতে বলে। রাত সাড়ে ১২ টার দিকে তুষার সেখানে যাওয়া মাত্রই ময়নার বাবা কামরুল, চাচা বাসারুল, পিন্টু, রিন্টুসহ মামলার আসামীরা তুষারকে লাঠি ও রড দিয়ে মারপিট করে। এসময় কলেজ পড়ুয়া তুষার জ্ঞান হারিয়ে ফেললে মামলার বাদি তুষারের বাবাকে ডেকে আনা হয়। রাতে রাস্তা থেকে অচেতন ছেলেকে নিয়ে তিনি সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে বৃহস্পতিবার দুপুরে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পথে তুষারের মুত্যৃ হয়।
তুষারের বাবা জানান, তার দুই ছেলে। বড় ছেলে সাইপ্রাস থাকে। ছোট ছেলেকে ঢাকায় রেখে তিনি লেখাপড়া করাতেন। করোনার কারণে গত মাসের প্রথম দিকে তুষার বাড়িতে আসে।
ঘটনার প্রতাক্ষদর্শী তুষারের বন্ধু পাইকপাড়া গ্রামের খলিল মোড়লের ছেলে জিসান (২৪) জানায়, ময়নার হঠাৎ ফোনে তুষার জানায়, রাতে ঘরের পিছনের রাস্তায় দেখা না করলে (ময়না) সে আত্মহত্যা করবে। এসময় তুষার তাকে সাথে নিয়ে ময়নার সাথে দেখা করতে যায়। ময়নাদের ঘরের পিছনে যাওয়া মাত্রই ময়নার বাবা ও চাচারা মারপিট শুরু করে। এসময় সে (জিসান) যুগীখালী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দিকে দৌঁড়ে পালিয়ে যায়। তুষারের সাথে ময়নার তিন বছর ধরে প্রেমের সম্পর্ক চলে আসছিলো।
যুগীখালী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি আবুল বাশার জানায়, কলেজছাত্র তুষারের মৃত্যুর ঘটনায় শুক্রবার ভোরে তুষারের পরিবারের লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে ময়নার বাবা ও চাচাদের ঘরবড়িতে লুটপাট করে তাতে অগ্নিসংযোগ করে। পরে সরসকাটি পুলিশ ফাড়ির সদস্যরা এসে গ্রামবাসীদের নিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
কলারোয়া থানার ওসি শেখ মনির উল গীয়াস জানান, কলেজ ছাত্র তুষারের মৃত্যুর ঘটনায় পাইকপাড়া গ্রামের বজলুর রহমানের স্ত্রী সেলিনা খাতুন, বজলুর রহমানের বাবা রিয়াজউদ্দিন ও একই গ্রামের রহিম বক্স দফাদারের ছেলে ইউপি সদস্য আব্দুল জলিল গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এস আই) তৌফিক আহম্মেদ জানান, তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। বর্তমানে এলাকার পরিস্থিতি শান্ত আছে। যুগীখালী ইউপি চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম জানান, করেনা পরিস্থিতির কারণে সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে নিহত তুষারের জানাজা নামাজ শেষে তাকে তার পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। তুষার হত্যা মামলার আসামী গ্রেপ্তারে তিনি পুলিশকে সহায়তা করে যাচ্ছেন।
আরকে//
আরও পড়ুন