ঢাকা, সোমবার   ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

রোজা রাখছেন আইসোলেশনে থাকা ২ করোনা রোগী

জয়পুরহাট প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ১৯:৪৩, ২৬ এপ্রিল ২০২০

জয়পুরহাট সিভিল সার্জন কার্যালয়

জয়পুরহাট সিভিল সার্জন কার্যালয়

করোনা শনাক্তের পর আক্কেলপুর গোপীনাথপুর ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজির আইসোলেশন ইউনিটে (অতিথিশালা) রাখা হয়েছে ৬ জন রোগীকে। এদের মধ্যে রমজানের রোজা রাখছেন কালাই উপজেলার জিন্দারপুর গ্রামের বাসিন্দা দুই করোনা আক্রান্ত রোগী। 

জানা গেছে, কালাই উপজেলার জিন্দারপুর গ্রামের ৪৭ ও ৪২ বছর বয়সের এই দুই ব্যক্তি নারায়ণগঞ্জে রিক্সা চালানো ও সবজি ব্যবসার সাথে জড়িত ছিলেন। নারায়ণগঞ্জ থেকে নিজ বাড়িতে আসার পর নমুনা পরীক্ষার পর দশদিন আগে জয়পুরহাটে প্রথম করোনা পজিটিভ শনাক্তের পর থেকে তারা গোপীনাথপুরের আইসোলেশন ইউনিটে আছেন।

এছাড়া জেলার পাঁচবিবি উপজেলার ছোট মানিক এলাকার নারায়ণগঞ্জ ফেরত বায়িং হাউজে কর্মরত ৩৩ বছরের যুবক ও একই উপজেলার পূর্ব কড়িয়া বটতলী এলাকার নারায়ণগঞ্জ ফেরত ৪৩ বছরের গার্মেন্টস কর্মী, কালাই উপজেলার দক্ষিণ পুনট পাঁচগ্রাম গ্রামের বাসিন্দা গাজীপুর ফেরত ২০ বছরের তরুণী গার্মেন্টস কর্মী ও আক্কেলপুর উপজেলার তিলকপুর বিষ্ণপুর গ্রামের ঢাকা ফেরত ২৪ বছরের যুবক ঔষধ কোম্পানীর প্রতিনিধির (রিপ্রেজেন্টেটিভ) শরীরে করোনা ভাইরাস শনাক্তের পর তাদের সবাইকে গোপীনাথপুরের আইসোলেশন ইউনিটে রাখা হয়েছে।

আক্কেলপুর গোপীনাথপুর ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজির আইসোলেশন ইউনিটের ইনচার্জ আতিকুর রহমান রোববার সকালে জানান, গোপীনাথপুর আইসোলেশন ইউনিটে ২২ জন রোগী আছেন। এর মধ্যে ৬ জন করোনা রোগী আর বাকী ১৬ জন এই করোনা রোগীদের সংস্পর্শে আসা, তাদের আত্নীয়-স্বজন ও নারায়ণগঞ্জ ফেরত। এদের মধ্যে দুই জন করোনা রোগীসহ আরও ১৪ জন রোজা করছেন।

রোববার সকালে সিভিল সার্জন অফিসের সিনিয়র মেডিকেল টেকনোলজিষ্ট শ্যামল চট্রোপাধ্যায় জানান, জেলায় ১৩৬০ জন হোম কোয়েরেন্টাইনে রয়েছেন। এর মধ্যে ৫৫৪ জনকে অবমুক্ত করা হয়েছে। এ পর্যন্ত ৮৩৫ জনের নমুনা রাজশাহী মেডিকেল কলেজের ল্যাবরেটরি ও বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজের ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হয়েছিল। এর মধ্যে ২৯০ জনের রিপোর্ট এসেছে। যার মধ্যে ৬ জনের পজেটিভ এসেছে, বাকীদের নেগেটিভ, আর ৪টি রিপোর্ট ইনভেলিড হয়েছে।

আক্কেলপুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা জাকিউল ইসলাম জানান, আইসোলেশনে থাকা দুইজন করোনা রোগী সুস্থের দিকে যাচ্ছেন। তারা রোজা রাখছেন বলেও জেনেছি। করোনা হলেই যে মৃত্যু, এটা সঠিক নয় বা এতে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। বিশ্বে করোনায় ৯৫ ভাগ রোগীই সুস্থ হচ্ছে। সরকার যে স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলতে বলছে সেগুলো মেনে চলতে হবে, সামাজিক ও শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে বজায় রাখতে হবে, আক্রান্ত কোন ব্যক্তি হলে তা গোপন না করে আমাদেরকে জানালে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব। 

জয়পুরহাট সিভিল সার্জন ডাঃ সেলিম মিঞা জানান, দুইজন করোনা রোগী সুস্থ হওয়ার কারণে তাদের নমুনা নিয়ে পুনরায় পরীক্ষার জন্য পাঠানো হবে। করোনা নিয়ে আতংকিত হবেন না, প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হবেন না, বাহির থেকে বাড়িতে আসলে সঙ্গে সঙ্গে হাত পরিস্কার করুন, জামা-কাপড় ও ঘর-বাড়ি পরিস্কার রাখুন। বাহিরে বের হলেই মাস্ক ব্যবহার করুন অর্থাৎ স্বাস্থ্য বিভাগের নির্দেশিত নিয়ম-কানুন মেনে চলুন। ঢাকা ও তৎসংলগ্ন এলাকা থেকে কেউ আসলে হোম কোয়েরেন্টাইন নিশ্চিত করুন অথবা স্বাস্থ্য বিভাগের সাথে যোগাযোগ করুন। কালাইয়ের দুইজন রোগী রোজা রাখছে বলে শুনেছি, ধর্মীয় ব্যাপারে আমরা মানা করতে পারি না। তারা যদি রোজা রেখে সুস্থ বোধ করেন, রোজা রাখতে পারে।

এনএস/


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি