জয়পুরহাটে নতুন করে আরো ২ জন করোনা রোগী শনাক্ত
প্রকাশিত : ২৩:৪১, ২৬ এপ্রিল ২০২০

জয়পুরহাট জেলায় করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলছে। আজ আবারও জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার ৩৯ বছরের সবজি ব্যবসায়ী ও আক্কেলপুর উপজেলার গাজীপুর ফেরত ৩৫ বছরের গার্মেন্টস কর্মীর শরীরে করোনা ভাইরাস সনাক্ত হয়েছে। এনিয়ে গত দশ দিনে জয়পুরহাট জেলায় আট জন করোনা রোগী সনাক্ত হলো। জয়পুরহাটের সিভিল সার্জন ডাঃ সেলিম মিঞা রবিবার রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
রোববার রাতে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজের ল্যাবরেটরিতে জয়পুরহাটের ৫৯ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৫৭ জনের নমুনা নেগেটিভ হলেও দুইজনের শরীরে করোনাভাইরাস সনাক্ত হয়েছে অন্যদিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজের ল্যাবরেটরি থেকে ১২ জনের নমুনা পরীক্ষায় ১২ জনের নেগেটিভ ও একটি রিপোর্ট ইনভেলিট এসেছে বলে নিশ্চিত করেন সিভিল সার্জন ডা: সেলিম মিঞা। করোনা সনাক্ত দুইজন হলেন-৩৯ বছরের সবজি ব্যবসায়ী কালাই উপজেলার পুনট পূর্বপাড়ার গ্রামের বাসিন্দা ও ৩৫ বছরের গার্মেন্টস কর্মী আক্কেলপুর উপজেলার বিহারপুর গ্রামের বাসিন্দা।
জয়পুরহাটের সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত ১৬ এপ্রিল রাতে কালাই উপজেলার একই গ্রামের ঢাকা ফেরত দুই কাঁচামালের ব্যবসায়ীর করোনা শনাক্ত হয়। তাঁরা দুই জন জয়পুরহাট জেলার প্রথম করোনা রোগী ছিলেন। এ ঘটনায় জয়পুরহাট জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাকির হোসেন ওইদিন রাত দশটা থেকে জয়পুরহাট জেলা লকডাউন ঘোষনা করেন। এখনো জয়পুরহাট জেলা লকডাউন বলবৎ রয়েছে। এরপর আরো দুই জন পাঁচবিবি উপজেলায় আর শনিবারে কালাই উপজেলা একজন নারী ও আক্কেলপুর উপজেলার এক যুবকের করোনা শনাক্ত হয়েছে।
কালাই উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ আবু তাহের মোঃ তানভির হোসেন বলেন, আক্রান্ত ব্যক্তির কোন উপসর্গ না থাকলেও যেহেতু সে ঢাকায় সবজি নিয়ে যাতায়াত করত এজন্যই তার নমুনা নিয়ে পরীক্ষা করা হয়। এছাড়াও কেউ যদি ইচ্ছা করে পরীক্ষা করায় তার নমুনাও আমরা পরীক্ষা করব।
আক্কেলপুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা জাকিউল ইসলাম জানান, আক্রান্ত ব্যক্তি ০৭ দিন আগে গাজীপুর থেকে আক্কেলপুরের বিহারপুর গ্রামে এসেছিল, তারপর থেকে তিনি হোম কোয়েরেন্টাইনে ছিলেন, আক্রান্ত ব্যক্তির আশ-পাশের কয়েকটি বাড়ির সাথে মিশেছে ও মসজিদে কার কার সাথে নামাজ পড়েছে এজন্য ইসলামিক ফাউন্ডেশনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সনাক্তের পর ওই পরিবারের সদস্যদেরকে কোয়ারেন্টিনে থাকতে নির্দেশ দেওয়া হবে। করোনা সনাক্তের পর তাকে গোপীনাথপুর ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজির আইসোলেশন ইউনিটে আনা হয়েছে।
জয়পুরহাট সিভিল সার্জন ডাঃ সেলিম মিঞা জানান, রোববার রাতে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজের ল্যাবরেটরি ও রাজশাহী মেডিকেল কলেজের ল্যাবরেটরি দুই জায়গা থেকে ৭২টি নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট এসেছে এর মধ্যে দুইজনের শরীরে করোনাভাইরাস সনাক্ত হয়েছে। তাদের দুইজনকে আক্কেলপুর উপজেলার গোপীনাথপুর ইনস্টিটিউট হেলথ টেকনোলজির আইসোলেশনে (সেফ অতিথিশালা) রাখা হয়েছে। তিনি আরো জানান, ১৬ থেকে ২৬ এপ্রিল পর্যন্ত জয়পুরহাট জেলায় আট জন করোনা রোগী সনাক্ত হয়েছে। তিনি জেলাবাসীকে লকডাউন মানা ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার অনুরোধ করেছেন।
এর আগে কালাই উপজেলার নারায়নগঞ্জ ফেরত জিন্দারপুর গ্রামে প্রথম দুইজন ও গাজীপুর ফেরত তরুণী এক গার্মেন্টস কর্মী, পাঁচবিবি উপজেলার ছোট মানিকগ্রাম ও পূর্বকড়িয়ায় দুইজন, আক্কেলপুর উপজেলার তিলকপুর বিষ্ণপুর গ্রামে করোনা রোগী শনাক্ত হয়। এ নিয়ে জেলায় মোট ৮ জন আক্রান্ত হলেন। আগের আক্রান্ত ৬ জনকেও আইসোলেশনে রাখা হয়েছে এবং এদের মধ্যে পুরাতন চারজন করোনী রোগী সুস্থ আছেন।
আরকে//
আরও পড়ুন