ঝুঁকি নিয়েই মোংলায় চালু হল ৯ ফ্যাক্টরি
প্রকাশিত : ১৪:১৮, ২৭ এপ্রিল ২০২০
করোনা ঝুঁকির মধ্যেই মোংলা ইপিজেডের ফ্যাক্টরিতে চলছে রপ্তানিকারক পণ্য তৈরীর কাজ। যদিও ফ্যাক্টরির কর্মকর্তারা দাবি করছেন, স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখেই এখানকার শ্রমিকরা কাজ করছেন। করোনার ঝুঁকি এড়াতে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা গ্রহণ করেই কাজ চলছে।
তবে শ্রমিকদের দাবি, কর্তৃপক্ষের নির্দেশে করোনার ঝুঁকি মাথায় নিয়েই কর্মস্থলে যোগ দিচ্ছেন তারা।
গতকাল থেকে আজ সোমবার মোংলা ইপিজেডে খুলে দেওয়া ৯টি ফ্যাক্টরিতে দলে দলে প্রবেশ করে শ্রমিকরা তাদের কাজ শুরু করেন।
এমন তথ্য নিশ্চিত করে মোংলা ইপিজেডের মহা ব্যবস্থাপক (জিএম) মো. মাহাবুব আহম্মেদ সিদ্দিক জানান, ‘২৭টি ফ্যাক্টরির মধ্যে ৯টিই খুলে দেওয়া হয়েছে। এগুলো হচ্ছে, পিএ এন্ড পিএ, জিন লাইট গার্মেন্টস, ওয়া জিয়াং জুট, ওয়াশিং জুট, হ্যানসিং পেপার, জি এল গ্রেপ, কোতুবোগি বাংলাদেশ, ষ্টার্ন পলিমার এবং মুন ষ্টার পলিমার। পর্যায়ক্রমে আরও কয়েকটি খুলে দেওয়া হবে।’
তিনি বলেন, ‘এসব ফ্যাক্টরিতে মোট এক হাজার ৬২ জন শ্রমিক কাজে যোগ দিয়েছেন। তাদের স্বাস্থ্য বিধি নিশ্চিত করতেই সকল প্রকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে একজন চিকিৎসকসহ মোট সাত সদস্যের টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে। যা সার্বক্ষণিক মনিটরিং করছে।’
আমির হোসেন ইসা নামে এক শ্রমিক অভিযোগ করে ‘করোনা ভাইরাসের মধ্যে ফ্যাক্টরি খুলে দেওয়ায় তারা স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়তে পারেন। তারপও চাকরিচ্যুত হওয়ার আশঙ্কায় কাজে যোগ দিয়েছেন।’
অন্যদিকে ইপিজেডের ‘জিন লাইট গার্মন্টেসে’র প্রশাসনিক কর্মকর্তা হৃদয় মাহমুদ দাবি করেন, ‘শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেই তারা ফ্যাক্টরি খোলা হয়েছে। তবে কোন শ্রমিককে চাকরিচ্যুতের ভয়ে জোরপূর্বক কাজে নেয়া হচ্ছে না।’
‘ষ্টার্ন পলিমারে’র ম্যানেজার (উৎপাদন) মো. আল-মামুন জানান, তারা শ্রমিকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করে ফ্যাক্টরিতে প্রবেশ করাচ্ছেন। ১৪১ জন শ্রমিক এরই মধ্যে কাজে যোগ দিয়েছেন বলেও জানান তিনি।
বেপজা’র মহাব্যবস্থাপক (গণসংযোগ) নাজমা বিনতে আলমগীর জানান, ‘মালিক ও শ্রমিকদের স্বার্থে করোনা দুর্যোগের মধ্যেও মোংলা ইপিজেডের ৯টি ফ্যাক্টরি খুলে দেওয়া হয়েছে। শ্রমিকদের প্ররোপুরি স্বাস্থ্য বিধি নিশ্চিত করা হয়েছে। পাশাপাশি ফ্যাক্টরির মালিক পক্ষকে এ ব্যাপারে কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। শ্রমিকদের ছয় ফুট দূরত্ব বজায় রেখে কাজ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এসব নির্দেশনা অমান্য করলে সংশ্লিষ্ট ফ্যাক্টরির মালিক পক্ষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
তিনি বলেন, ‘মোংলা ইপিজেডে মোট ছয় হাজার শ্রমিক কাজ করছেন। এসব শ্রমিকরা সবাই মোংলা ও তার পাশ্ববর্তী এলাকা রামপালের বাসিন্দা। বেশি দূরের নয়। তাই করোনা ঝুঁকি নাই বললেই চলে। তারপরও ঝুঁকি এড়াতে সব রকম ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’
২৫ শতাংশ শ্রমিক উপস্থিতি নিশ্চিত করে ফ্যাক্টরিতে কাজ করার বিধান রেখেই ইপিজেড চালু রাখা হচ্ছে বলেও জানান বেপজার এই কর্মকর্তা।
এদিকে করোনা ঝুঁকির এই অবস্থায় বিভিন্ন এলাকা থেকে শ্রমিকদের প্রবেশ, সামাজিক নিরাপদ দূরত্ব ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা পুরোপুরি নিশ্চিত করা না গেলে সমস্যা আরও প্রকট হতে পারে বলে শঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
এআই/
আরও পড়ুন