জয়পুরহাটে হাসপাতালের কর্মীসহ ৪ জনের করোনা শনাক্ত
প্রকাশিত : ১২:১৪, ৭ মে ২০২০ | আপডেট: ১২:১৮, ৭ মে ২০২০
জয়পুরহাটে নতুন করে কালাই উপজেলা স্বাস্থ্য্য কমপ্লেক্সের এক স্টাফসহ চারজনের শরীরে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। আক্রান্তদের মধ্যে তিন জনই নারী। এ নিয়ে জেলায় করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৮ জনে।
নতুন চারজনের মধ্যে দু’জন কালাই উপজেলার, একজন সদর উপজেলার ও একজন আক্কেলপুর উপজেলার।
বুধবার রাতে সিভিল সার্জন এতথ্য নিশ্চিত করেছেন । রাতেই আক্রান্ত চার ব্যক্তিকে আক্কেলপুর উপজেলার গোপীনাথপুর ইনস্টিটউট অব হেলথ টেকনোলজিতে স্থাপিত প্রাতিষ্ঠানিক আইসোলেশনে (সেফ অতিথিশালা) নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে। কিন্তু করোনা আক্রান্ত এক গার্মেন্টকর্মী স্ত্রীসহ পালিয়ে গেছেন। তাকে আইসোলেশনে নিতে খুঁজছে পুলিশ প্রশাসন।
সিভিল সার্জনের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বুধবার রাতে মোট ১৮১টি নমুনার ফল এসেছে। এর মধ্যে রোগতত্ত্ব ও রোগ নির্ণয় গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) ১৫৭টি ও বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ২৪টি। ১৮১টি নমুনার মধ্যে চারজনের নমুনায় করোনা পজেটিভ পাওয়া গেছে। তাঁরা হোম কোয়ারেন্টিনে ছিলেন।
করোনা শনাক্ত হওয়া ব্যাক্তিরা হলেন, কালাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্টাফ ও পৌর শহরের কাজীপাড়া গ্রামের এক জন নারী, অপরজন আকন্দপাড়া গ্রামের পূর্বে শনাক্ত হওয়া একই হাসপাতালের নাইট গার্ডের মা, আক্কেলপুরের মাতাপুর গ্রামের এক জন নারী গার্মেন্টকর্মী এবং জয়পুরহাট সদরের দোগাছি পূর্ব পাড়া গ্রামে শ্বশুরবাড়িতে থাকা এক গার্মেন্টকর্মী।
সিভিল সার্জন ডা. সেলিম মিঞা জানান, কয়েকদিন আগে কালাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এক নৈশপ্রহরী করোনা আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হন। তিনি বাড়িতে আসা গার্মেন্টকর্মী বোন ও ভগ্নিপতির সংস্পর্শে করোনায় আক্রান্ত হন। তার বাড়ির লোকজনসহ হাসপাতালের স্টাফদের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। সর্বশেষ পাওয়া প্রতিবেদনে নৈশপ্রহরীর মা ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মাষ্টাররোলে কাজ করা এক নারীর শরীরে করোনা উপস্থিতি ধরা পড়েছে। এছাড়া আক্কেলপুর উপজেলার রুকিন্দিপুর ইউনিয়নের এক নারী গার্মেন্টকর্মীর করোনা শনাক্ত হয়েছে। জয়পুরহাট সদর উপজেলার দোগাছি ইউনিয়নে শ্বশুর বাড়িতে অবস্থান করা এক গার্মেন্টকর্মীর নমুনাতেও করোনা শনাক্ত হয়েছে। নওগাঁর ধামুরহাট থেকে আসা এ গার্মেন্টকর্মী করোনা আক্রান্তের তথ্য জেনে স্ত্রীসহ পালিয়ে গেছেন। স্বাস্থ্যকর্মীরা দোগাছী ইউনিয়নে গেলে সেখানে গার্মেন্টকর্মী যুবককে পাওয়া যায়নি। তাকে খোঁজা হচ্ছে বলে জানান জয়পুরহাট সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহরিয়ার খাঁন।
কালাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা আশিক আহমদ জেবাল জানান, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একজন নারী কম্পাউন্ডার ও আরেকজন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে করোনা আক্রান্ত নৈশপ্রহরীর মা। ছেলের সংস্পর্শে আসায় তিনিও আক্রান্ত হয়েছেন।
স্থানীয় প্রশাসন বলছে, বুধবার করোনা পজিটিভ চার ব্যক্তির বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে। এসব পরিবারের সদস্যদের আপাতত হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। তাঁদের নমুনা পরীক্ষা করা হবে। যদি তাঁরা হোম কোয়ারেন্টিন না মানেন, তাহলে বাধ্যতামূলকভাবে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে রাখা হবে।
জয়পুরহাট সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিল্টন চন্দ্র রায় বলেন, সদর উপজেলার আক্রান্ত ব্যক্তির বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে। কালাইয়ের ইউএনও মোবারক হোসেনও একই কথা বলেছেন।
উল্লেখ্য গত ১৬ এপ্রিল জয়পুরহাট জেলার কালাই উপজেলায় প্রথম ২ জন করোনা রোগী শনাক্তের পর ওই দিনই জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাকির হোসেন জয়পুরহাট জেলাকে লকডাউন ঘোষণা করেন।
এমবি//
আরও পড়ুন