ঢাকা, মঙ্গলবার   ০৫ নভেম্বর ২০২৪

সুন্দরবনের রক্ষক হয়ে ভক্ষক, তদন্ত শুরু

মোংলা প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ১৫:৪৮, ৭ মে ২০২০ | আপডেট: ১৫:৪৯, ৭ মে ২০২০

অভিযুক্ত বন কর্মকর্তা এসও আনোয়ার হোসেন খাঁন ও পাচারকৃত গাছ- ছবি একুশে টিভি।

অভিযুক্ত বন কর্মকর্তা এসও আনোয়ার হোসেন খাঁন ও পাচারকৃত গাছ- ছবি একুশে টিভি।

বন কর্মকর্তা কর্তৃক সুন্দরবনের গাছ কাটার ঘটনায় তোলপাড় শুরু হয়েছে। রক্ষক হয়ে ভক্ষকের ঘটনা ঘটিয়ে বিপাকে পড়েছেন ওই বনকর্মকর্তাও। পূর্বসুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের ঢাংমারী ষ্টেশনের এসও (ষ্টেশন কর্মকর্তা) আনোয়ার হোসেন খাঁন বুধবার (৬ মে) দুপুরে বনের ঘাঘরামারী এলাকা হতে কর্তন নিষিদ্ধ সুন্দরী ও কাঁকড়া গাছ কেটে তা পাচার করছিল। পাচারের সাথে জড়িত দুই পাচারকারীও তাৎক্ষণিকভাবে গণমাধ্যমের কাছে স্বীকারও করেন তা। গাছ পাচার কাজে ব্যবহৃত করা হয় বনবিভাগের পতাকাবাহী ট্রলারও। এ নিয়ে বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় সংবাদও ছাপা হয়েছে। ওই বনকর্তার বিরুদ্ধে শুরু হয়েছে তদন্ত।

পূর্ব সুন্দরবনের বিভাগীয় বনকর্মকর্তা (ডিএফও) মোঃ বেলায়েত হোসেন এই তদন্ত শুরু করেছেন বলে নিশ্চিত করেছেন খুলনা রেঞ্জের বন সংরক্ষক মোঃ মঈন উদ্দিন খাঁন। তিনি বলেন, তদন্তের প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পরই এসও আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে মামলাসহ বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।  

উল্লেখ্য, পূর্ব সুন্দরবনের ঢাংমারী ষ্টেশনের ষ্টেশন কর্মকর্তা (এসও) মোঃ আনোয়ার হোসেন খাঁন ঘাগরামারি এলাকা থেকে সুন্দরী ও কাকড়া গাছ ট্রলারযোগে পাচার করছিল। বুধবার (৬ মে) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে পাচার কাজে ব্যবহৃত হয় বনবিভাগের পতাকাবাহী ট্রলার। গাছ পাচারকারী তরুণ বলেন, এ গাছ তাদের এসও আনোয়ার সাহেব ঘাগরামারী থেকে কেটে আনার অনুমতি দিয়েছেন। 

তবে ঢাংমারী ষ্টেশনের এসও (ষ্টেশন কর্মকর্তা) মোঃ আনোয়ার হোসেন খাঁন দাবি করে বলেন, ‘ঘাগরামারী টহল ফাঁড়ি থেকে এ গাছ আমাদের ষ্টেশনের (ঢাংমারী) স্থাপনা তৈরীর কাজে আনা হচ্ছিল। এ ব্যাপারে তাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার নির্দেশনা রয়েছে’। তবে বনবিভাগের পতাকাবাহী ট্রলারে গাছ নিয়ে আনার সময় ছিলনা কোনও বনরক্ষী, ছিল তিনজন পাচারকারী। 

এদিকে এ ঘটনায় বন বিভাগের প্রধান বন সংরক্ষক (সিসিএফ) মোঃ আমির হোসেন চৌধুরী জানান, ‘গাছ কাটার ভিডিও এবং নিউজ দেখেছি, আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব’। 

খোদ বনবিভাগের কর্মকর্তা কর্তৃক সুন্দরবনের গাছ কাটার ঘটনায় বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের বাগেরহাট জেলা সমন্বয়কারী মোঃ নুর আলম শেখ বলেন, ‘বন বিভাগের অসাধু কর্তাব্যক্তিদের সহযোগিতায় বনের গাছ কেটে পাচার হচ্ছে- যা প্রত্যক্ষভাবে সবার দৃষ্টিগোচর হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘এতেই প্রমাণ হয় সুন্দরবন রক্ষায় বনবিভাগ প্ররোপুরি ব্যর্থ হয়েছে। কাজেই এই বনকে রক্ষা করতে হলে বনবিভাগের ওপর আস্থা না রেখে সরকারের উচিত বিশেষ নজরদারী বাড়ানো।’

এনএস/


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি