ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ০৩ এপ্রিল ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

পাচঁবিবিতে করোনা উপসর্গ নিয়ে শ্রমিকের মৃত্যু

জয়পুরহাট প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ২১:০৭, ৮ মে ২০২০

Ekushey Television Ltd.

জযপুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার রাইগ্রামে করোনা সংক্রমণের উপসর্গ নিয়ে মছির উদ্দিন (৬৫) নামে এক কারখানায় শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। মৃত ব্যক্তির ১ ছেলে, ২ জন গ্রামবাসী ও ২ জন স্বেচ্ছাসেবী ছাড়া করোনা আক্রান্ত ছিলেন ভেবে আত্বীয়-স্বজনেরা কেউই তাঁর লাশের কাছে যাননি। মছির উদ্দিন ওই গ্রামের মৃত সিরাজ উদ্দিনের ছেলে। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে স্বেচ্ছাসেবীরা জনাজা শেষে তাঁকে তাঁর পরিবারিক গোরস্থানে দাফন করেছেন। করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা যাওয়া বৃদ্ধ ও তাঁর স্ত্রীর নমুনা সংগ্রহ করে বগুড়া শহীদ জিয়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হবে বলে পাঁচবিবি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ড.শহীদ হোসেন  নিশ্চিত করেছেন। 

পাঁচবিবি উপজেলার মোহাম্মদপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ও করোনা প্রতিরোধ কমিটির ওর্য়াড সভাপতি বাবুল হোসেন জানান, মছির উদ্দিন নারায়নগঞ্জের একটি লোহার কারখানায় শ্রমিকের কাজ করতেন এবং তার স্ত্রী একটি পোশাক কারখানায় কাজ করতেন। তিনি গত দুইদিন আগে জ্বর,সর্দি ও শ্বাস কষ্ট নিয়ে নারায়নগঞ্জ থেকে সস্ত্রীক তার নিজ গ্রামে আসলে গ্রামবাসীদের বাধার মুখে তিনি বাড়িতে ঢুকতে পারেননি। পরে বড় পুকরা গ্রামে তার শ্বশুরবাড়িতে গেলে সেখানেও গ্রামবাসীরা মছির উদ্দিনসহ তার পরিবারকে গ্রাম থেকে বের করে দেন। এরপর চেয়ারম্যানের মধ্যস্থতায় মছির উদ্দিন ও তার স্ত্রীকে রাইগ্রাম সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অস্থায়ী কোয়ারেন্টিন সেন্টারে রাখা হলে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সেখানেই তিনি মারা যান। ওই দিন গভীর রাতেই তার জানাজা শেষে মৃত ব্যক্তির পারিবারিক কবরস্থানে তার দাফন করা হয়। করোনার ভয়ে আত্বীয়-স্বজনেরা কেউই আসেননি। পাঁচবিবি উপজেলা সদর থেকে কয়েক জন স্বেচ্চাসেবী এসে জানাজা শেষে লাশ দাফন করেন। মৃত মছির উদ্দিন এর দুই স্ত্রী,প্রথম স্ত্রীর চার সন্তান। ২য় স্ত্রীর তার এক সন্তানে সাথেই তিনি থাকতেন। 

স্বেচ্ছাসেবক ফিরোজ হোসেন ফাইন জানান, রাইগ্রামে মছির উদ্দিন এর মৃত্যুর খবর পেয়ে দাফন কমিটির সদস্যরা ঘটনাস্থলে যায়, তার ছেলে তার বাবার গোসল করায়, পরে ওই এলাকার স্বেচ্ছাসেবক তারেক জানাজা পরায়। জানাজায় আমিসহ দুইজন গ্রামবাসী,তার ছেলে উপস্থিত ছিল। মৃত ব্যক্তির গোসল,জানাজা,দাফন করার সময় আলোর স্বল্পতা থাকলেও কোন গ্রামবাসী এগিয়ে আসেনি ফলে আমাদের কার্যক্রমগুলো করতে খুব অসুবিধা হয়। এজন্য মানুষদেরকে আরও সচেতন হওয়া দরকার।

পাঁচবিবি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ড.শহীদ হোসেন বলেন, মৃত ওই ব্যক্তিসহ পরিবারের বাঁকি চার জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। সংগ্রহ করা নমুনাগুলো বগুড়া শহীদ জিয়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হবে। আমরা কমিটিকে চারটি পিপিই প্রদান করেছি এবং সকল প্রকার প্রশিক্ষণ তাদেরকে দেওয়া আছে এই পর্যন্তই আমাদের কার্যক্রম। 

পাঁচবিবি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাদিম সরওয়ার জানান, গোসল,জানাজা,দাফন করা থেকে সকল কার্যক্রম করার জন্য কমিটি গঠন করা আছে তারাই সকল প্রকার কার্যক্রম পরিচালনা করবে, না করলে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আরকে/


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি