হাজার মানুষের ইফতার পার্টি দিয়ে নির্বাচনী প্রচারণা
প্রকাশিত : ২০:২৫, ৯ মে ২০২০
ইফতার পার্টির চিত্র- ছবি একুশে টিভি।
কুড়িগ্রামে একটি দুর্গম চরবিশিষ্ট ইউনিয়নের সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনী প্রচারণায় হাজারো মানুষের উপস্থিতিতে এক ইফতার পার্টি অনুষ্ঠিত হয়েছে। সরকারের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ইফতার পার্টিতে সামাজিক বা শারীরিক দূরত্বের কোন বালাই ছিলো না। করোনার মধ্যেই এমন চাঞ্চল্যকর ইফতার পার্টির ঘটনাটি ঘটেছে জেলার নাগেশ্বরী উপজেলার কচাকাটা থানার নারায়ণপুর ইউনিয়নে। এই ইউনিয়নের ঢাকডোহর গ্রামের ফরিদুল ইসলাম জোয়ারদারের আমন্ত্রণে পদ্মারচর স্কুল মাঠে এই ইফতার পার্টির আয়োজন করা হয়।
স্থানীয়রা জানান, জেলার একমাত্র নদ-নদী দ্বারা বিচ্ছিন্ন এবং ভারতীয় সীমান্ত ঘেঁষা ইউনিয়ন নারায়ণপুর। এই ইউনিয়নের মানুষ জেলা-উপজেলার সাথে যোগাযোগ করতে হলে নৌকা ছাড়া বিকল্প উপায় নেই। দুর্গম চরাঞ্চল হওয়ায় এখানে স্বাস্থ্য বিভাগ, সরকারি অন্যান্য বিভাগসহ প্রশাসনের নজরদারী একেবারেই কম। করোনার বিষয় নিয়ে এখানকার মানুষ যেমন সচেতন নয়, তেমনি জনপ্রতিনিধিদের সাথে সাধারণ মানুষের সম্পর্কও তেমন জোরালো নয়। ফলে এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে গত ৬ মে ইউনিয়নের সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থী ফরিদুল ইসলাম জোয়ারদার তার কয়েকজন কর্মী দিয়ে দিনব্যাপি প্রচার চালিয়ে ইফতার পার্টি আয়োজন করেন। আয়োজনে কয়েকটি গ্রামের প্রায় এক-দেড় হাজার মানুষের সমাগম ঘটে সেখানে। এসময় ইফতার পার্টিতে অংশ নেয়া এক তরুণ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তা লাইভও করেন। এমন জনসমাগম করে ইফতার পার্টি করায় ইউনিয়নটির করোনা প্রতিরোধ কমিটির নিস্কৃয়তা নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে সচেতন মহলে।
এ বিষয়ে ইফতার পার্টির আয়োজক ও সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থী ফরিদুল ইসলাম জোয়ারদার জানান, কোন উপলক্ষ বা প্রচারণার অংশ হিসেবে এই ইফতার পার্টির আয়োজন করা হয় নাই। বাজারের কয়েকজন লোক নিয়ে ইফতারের আয়োজন করেছিলাম। বেশী লোকজন ছিলো না। তবে তিনি স্বীকার করেন, করোনায় এমন ইফতার পার্টির আয়োজনে পুলিশ কিংবা প্রশাসনের অনুমতি না নেয়ার বিষয়টি।
এদিকে, ইফতার পার্টির বিষয়ে সত্যতা নিশ্চত করে নারায়ণপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মজিবর রহমান বলেন, সরকারি নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে সম্ভাব্য কয়েকজন প্রার্থী প্রায় প্রতিদিনই ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে ইফতারের আয়োজন করছেন। ইউনিয়ন পরিষদের সম্ভাব্য প্রার্থী বলে তাদেরকে বাধা-নিষেধ করাও সম্ভব হচ্ছে না।
কচাকাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মামুন অর রশিদ জানান, বিষয়টি বিভিন্ন মাধ্যমে শুনেছি। খোঁজ খবর নেয়া হচ্ছে। ঘটনার সত্যতা পেলে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
নাগেশ্বরী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুর আহম্মেদ মাছুম জানান, বিষয়টি তাৎক্ষনিক কেউ আমাকে জানায়নি। শনিবার জানতে পেরেছি। যেহেতু দেরি হয়ে গেছে সেক্ষেত্রে মোবাইল কোর্টের আওতায় আনা সম্ভব নয়। তবে আমি ওসি সাহেবকে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবার পরামর্শ দিয়েছি।
এনএস/
আরও পড়ুন