সিরাজগঞ্জে মর্গে থাকা বৃদ্ধের মরদেহ তিনদিন পর দাফন
প্রকাশিত : ২১:৩৪, ১১ মে ২০২০
আলহাজ্ব রিয়াজুল হক চৌধুরী
বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পড়ে থাকা আলহাজ্ব রিয়াজুল হক চৌধুরী ওরফে মিজানুর রহমান (৬০) নামে এক বৃদ্ধের মরদেহ তিনদিন পড়ে থাকার পর অবশেষে পুলিশ দাফনের ব্যবস্থা করেছে।
গত ৭ মে বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ৮ দিকে তিনি ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এর আগে শহরের মাহমুদপুর এলাকার আলামিন নামে এক যুবক সিরাজগঞ্জ বাজার রেলষ্টেশনে তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়দের সহযোগীতায় ৫ মে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করেন। তার মৃত্যুর পরে পুলিশ বিভিন্ন ভাবে আত্মীয় স্বজনদের খোঁজ নিতে থাকেন, কিন্ত শেষ পর্যন্ত তা না পাওয়ায় তিনদিন পরে পুলিশ মরদেহ হাসপাতাল থেকে নিয়ে মাঞ্জুমান মফিদুলের মাধ্যমে দাফনের ব্যবস্থা করে।
এদিকে সিরাজগঞ্জ ২৫০শয্যা বিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালের সুপার ডাঃ শাহজাহান আলী বলেন, বৃদ্ধ মারা যাওয়ার পরে তার মরদেহ তিন দিন মর্গে ছিলো। তার কোন আত্মীয়-স্বজন না পাওয়ায় পুলিশ নিয়ে গিয়ে দাফনের ব্যবস্থা করেছে।
সিরাজগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমান বলেন, ৭ মে বৃহস্পতিবার ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসাধীন অবস্থায় আনুমানিক ৬০ বছর বয়স্ক ওই বৃদ্ধ মারা যান। মৃত ব্যক্তির সঠিক পরিচয় ও কোন আত্মীয় স্বজন বা নিকটস্থ পরিজন পাওয়া যায়নি। যার কারণে ১০ মে আঞ্জুমান মফিদুলের মাধ্যমে দাফনের ব্যবস্থা করা হয়।
এদিকে মৃত ব্যক্তি চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় তার শারীরিক অবস্থা তেমন ভাল ছিলো না। এর মধ্যে তার বক্তব্য রেকর্ড করা হয়। তার এই বক্তব্য সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। একজন সংবাদকর্মী তার সেই বক্তব্য রেকর্ড করেছেন। সেখানে তিনি তার নাম বলেছেন রিয়াজুল হক চৌধুরী, পিতা-মৃত জিয়াউল হক চৌধুরী। স্ত্রীর নাম শিরিন বেগম। বাড়ী সিলেট জেলার বিশ্বনাথ উপজেলার উত্তর খাজাঞ্চি পাড়া। তার চার সন্তান রয়েছে। তারা হলেন সুবল চৌধুরী, ফারুক চৌধুরী, নিজার চৌধুরী এবং নিজাম চৌধুরী। মেয়ে জেসমিন আরার স্বামী ফিরোজ সরকার পেশায় ইঞ্জিনিয়ার। তারা বর্তমানে সুইজারল্যান্ড থাকেন। তাকে শত্রুতা বসত বেদম মারপিট করে সিরাজগঞ্জ জেলার এনায়েতপুর থানার খুকনীর কাপড় ব্যবসায়ী ছাত্তার হাজী ও তার লোকজন।
রিয়াজুল হক চৌধুরী আরও জানিয়েছেন, তিনি কাপড়ের ব্যবসা করেন। এনায়েতপুর থানার খুকনীর সাত্তার হাজী, সালাম হাজী ও মজিবর হাজী এবং বেলকুচি, শাহজাদপুরের বিভিন্ন কাপড় ব্যবসায়ীর সাথে তিনি দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসা করছেন। এর মধ্যে খুকনীর সাত্তার হাজী তার ব্যবসার আগে পার্টনার ছিলো। এখন পার্টনার নেই তবে তাকে কমিশন দিতাম। এই সাত্তার হাজী তাকে লোকজন দিয়ে বেদম মারপিট করে বলে তিনি জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে সাত্তার হাজীর ছেলে হাজী লালমিয়া বলেন, রিয়াজুল হক চৌধুরী যে সাত্তার হাজীর কথা বলেছেন তার বাবা সেই সাত্তার হাজী নাও হতে পারেন। তিনি আরও দাবী করেন তিনি তার বাবা ও অন্যান্য ভাই রিয়াজুল হক চৌধুরীকে চিনেন না। তবে তিনি বলেন, তার বাবা সাত্তার হাজী চল্লিশ বছর আগে সিলেটে ব্যবসা করতেন এখন করেন না।
এসি
আরও পড়ুন