ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ০৩ এপ্রিল ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

মেসেজ ও কল দিলেই পৌঁছে যাচ্ছে খাদ্যসামগ্রী!

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ২১:৩১, ১৪ মে ২০২০

খাদ্য সামগ্রী তুলে দিচ্ছেন ওসি নাজমুল আলম -ছবি একুশে টিভি।

খাদ্য সামগ্রী তুলে দিচ্ছেন ওসি নাজমুল আলম -ছবি একুশে টিভি।

Ekushey Television Ltd.

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের মেসেঞ্জারে বা মোবাইলে মেসেজ ও কল দিলেই ত্রাণ পৌঁছে যাচ্ছে মেসেজ কর্তার আলয়ে। আর এই কাজটিই অত্যন্ত সুচারুভাবে সম্পন্ন করছেন হবিগঞ্জের চুনারুঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ নাজমুল আলম।

বর্তমানে করোনা আক্রান্ত হয়ে তিনি হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকলেও থেমে নেই তার এই ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে খোঁজখবর নিয়ে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করে মানবসেবার এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করে এগিয়ে যাচ্ছেন ওসি নাজমুল।

জানা যায়, ত্রাণ সামগ্রী পেতে ফেসবুক মেসেঞ্জার ও মোবাইলে মেসেজ করেন এলাকার বিভিন্ন লোকজন। সেসব মেসেজের ভিত্তিতে উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলের বেশকিছু অসহায় গরীবকে থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) ও সেকেন্ড অফিসার অলক বড়ুয়ার মাধ্যমে খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দিয়েছেন তিনি। আজ ১৪ মে উপজেলার সীমান্তবর্তী প্রত্যন্ত অঞ্চলের গোলগাঁওসহ বিভিন্ন অঞ্চলের অসহায় গরীব মানুষকে ওসির দেয়া সাদা বস্তার একটি প্যাকেটে খাদ্য সামগ্রী ও উপহার স্থানীয় এক সংবাদকর্মীর মাধ্যমে পৌঁছে দেয়া হয়। মুহূর্তেই হতদরিদ্র মানুষগুলোর মুখে ফুটে ওঠে হাসি আর আনন্দের ঝিলিক।

গোলগাঁও গ্রামের হতদরিদ্র রাসেল মিয়া বলেন, 'সত্যিই! ওসি স্যারের পক্ষে প্যাকেট ভর্তি খাদ্য উপহার পেলাম।' ষাটোর্ধ্ব সুফিয়া বেগম বলেন, 'ওসির দেয়া খাদ্য উপহারের প্যাকেট খুলে দেখি তাতে চাল, ডাল, তেল, আলু ও রয়েছে। যে পুলিশের ভয়ে থাকি, সেই পুলিশ এই দুর্দিনে সহযোগিতার জন্য খাদ্য সহয়তা দিলো। ওসির জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করি। এসব খাবার পেয়ে অনেক উপকার হলো।' এ সময় আবেগ ধরে রাখতে না পেরে কান্না চলে আসে তার।

শুধু সুফিয়া নন, ওসি নাজমুল আলমের পক্ষ থেকে খাদ্যসামগ্রী তুলে দেয়া হয় দিন আনে দিন খায় এমন আরও অনেক হতদরিদ্র পরিবারের হাতে।

এ বিষয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) চম্পক দাম বলেন, 'আমাদের ওসি স্যার করোনা পজিটিভের পর হোম কোয়ারান্টাইনে আছেন এবং বর্তমানে তিনি সুস্থ আছেন। স্যারের নির্দেশে উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলে মানুষের হাতে পৌঁছে দিচ্ছি দুর্যোগ মুহূর্তের সবচেয়ে বড় উপহার খাদ্য সহায়তা। আমাদের এ কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।'

স্থানীয় সাংবাদিক নুর উদ্দিন সুমন জানান, করোনা ভাইরাস শুরু হওয়ার পর থেকে প্রত্যন্ত অঞ্চলসহ জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে কর্মহীন অসহায় দিনমজুর ও মধ্যবিত্তরা মোবাইল ফোনে ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম মেসেঞ্জারে তাদের দুঃখের কথা জানান, আর তিনি সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে সংগ্রহ করে খাদ্য সামগ্রী গরীবদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে পৌঁছে দেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওসি শেখ নাজমুল হকের পক্ষ থেকে এই পর্যন্ত মুঠোফোন ও মেসেঞ্জারে পাওয়া মেসেজের ভিত্তিতে উপজেলার গরীবদেরকে উপহার হিসেবে খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। যারাই ফোনে সহযোগিতা চেয়ে কল করছেন তাদের বাড়িতে দ্রুত পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে খাদ্য সামগ্রী। এতে করে উপকৃত হচ্ছে প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের নানা বয়সী অসহায়-কর্মহীন মানুষজন। এসব খাদ্য সামগ্রীর মধ্যে রয়েছে- চাল, আলু, ডাল, তেল ও লবন।

এ বিষয়ে ওসি শেখ নাজমুল হক বলেন, 'করোনা ভাইরাসের কারণে চলমান লকডাউনে মানুষজন কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। তাই আমি মানুষ হিসেবে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছি। যারা কল এবং এসএমএস করছে তাদের বাড়িতে আমাদের পুলিশের মাধ্যমে খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দিচ্ছি।' 

এসময় তিনি সমাজের বিত্তশালীদের প্রতি এসব গরীব, অসহায়, কর্মহীন মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়ে আরও বলেন, 'যেকোন পরিস্থিতিতে মানুষের পাশে আছি এবং ভবিষ্যতেও থাকবো। এছাড়া পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে থানা পুলিশের এ কার্যক্রম চলমান থাকবে।'

এনএস/


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি