রাজশাহীতে আম নামাচ্ছেন না চাষিরা
প্রকাশিত : ১৬:৩২, ১৫ মে ২০২০
রাজশাহীতে আম পাড়ার বেঁধে দেয়া সময় শুরু হয়েছে আজ শুক্রবার। এ দিন থেকে চাষিরা সব ধরনের গুটি জাতের আম নামিয়ে বাজারে তুলতে পারবেন। তবে গাছে এখনও আম পাকেনি। জেলা প্রশাসনের বেঁধে দেয়া সময়ের প্রথমদিনে আম পাড়ার খবর পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন কৃষি কর্মকর্তারা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শামসুল হক বলেন, ‘রাজশাহী জেলায় আম বাগান রয়েছে ১৭ হাজার ৬৮৬ হেক্টর জমিতে। এবার আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২ লাখ ১০ হাজার মেট্রিক টন।’
তিনি বলেন, ‘অসময়ে আম নামানো ঠেকাতে গত চার বছরের মতো এবারও আম নামানোর সময় নির্ধারণ করে দেয় রাজশাহী জেলা প্রশাসন। সে হিসেবে শুক্রবার থেকে গুটি আম পাড়ার সময় শুরু হয়েছে। আর আগামী ২০ মে থেকে গোপালভোগ নামাতে পারবেন চাষিরা। এছাড়া রানীপছন্দ ও লক্ষণভোগ বা লখনা ২৫ মে, হিমসাগর বা খিরসাপাত ২৮ মে, ল্যাংড়া ৬ জুন, আম্রপালি ১৫ জুন এবং ফজলি ১৫ জুন থেকে নামানো যাবে। সবার শেষে ১০ জুলাই থেকে নামবে আশ্বিনা এবং বারী আম-৪ জাতের আাম।’
আম চাষিরা জানান, ‘গুটি আমের কেবল আঁটি হয়েছে। পরিপক্ব হয়নি। তাই চাষিরা আম নামাচ্ছেন না। ব্যতিক্রম দুই-একজন। এখন করোনার সংকটকালেও বাজার না পাওয়ার আশঙ্কায় চাষিদের তড়িঘড়ি আম নামানোর ব্যস্ততাও নেই। অথচ আগের বছরগুলোতে চাষিরা এই দিনটির জন্য অপেক্ষা করতেন। বাগানে বাগানে শুরু হতো আম নামানোর উৎসব।’
পবা উপজেলার আলীমগঞ্জ এলাকার চাষি আবুল কালাম বলেন, ‘আমার গুটি আম খুব বেশি নেই। প্রশাসনের বেঁধে দেয়া সময় অনুযায়ী এখন গুটি আম পাড়া যাবে। তবে আম এখনও পাড়ার মতো হয়নি। গুটি আম আরও অন্তত ১০-১৫ দিন পর নামানোর উপযুক্ত হবে।’
তিনি বলেন, ‘এবার বাজারের যে অবস্থা তাতে আম কখন নামালে ঠিক হবে সেটাও বুঝতে পারছি না। আবার এবার আম পাড়ার সময়টাও ঠিকমতো নির্ধারণ হয়নি। আম পাড়ার সময় কিছুটা আগেই নির্ধারণ করা হয়েছে।’
পবা উপজেলার কাটাখালি পৌরসভা এলাকার আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘শুক্রবার সকালে তার বাগানের গুটি আম নামানো হয়েছে। তবে সেগুলো এখনো পরিপক্ব হয়নি। আচাড়ের কারখানার জন্য এই আমগুলো নামানো হয়েছে।’
রাজশাহী ফল গবেষণা কেন্দ্রের মূখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. আলীম উদ্দিন বলেন, ‘গেল বছরও আম পাড়ার সময় নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছিল। কিন্তু বেঁধে দেয়া সময়ের আগেই চাষিরা আম হাতে নিয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গিয়ে বললেন, আম পেকে গেছে, তারা নামাতে পারছেন না সময় বেঁধে দেয়ার কারণে। তাই এবার একটু আগেই সময় দেয়া হয়েছিল। কিন্তু আবহাওয়া ঠাণ্ডা। সে জন্য আম না-ও পাকতে পারে।’
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শামসুল হক বলেন, ‘রাজশাহীর কোথাও গাছে আম পেকেছে বলে তিনি খবর পাননি। তবে কৃষি পণ্য লকডাউনের বাইরে। তাই বাজারজাত করতে সমস্যা হবে না। গাছে যখন আম পাকবে তখনই চাষিরা বাজারে নিতে পারবেন।’
আরও পড়ুন