সারা বছর কি আম চাষ সম্ভব?
প্রকাশিত : ১০:৫১, ১৫ মে ২০২২
আম পছন্দ করেন না এমন মানুষের সংখ্যা খুবই কম। গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চলের এই ফল মূলত বাংলাদেশ, উত্তর-পূর্ব ভারত এবং উত্তর-পশ্চিম মিয়ানমার থেকে সারাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে যতই জনপ্রিয় হোক সুস্বাধু ফলটি কেবল বছরের একটি নির্দিষ্ট মৌসুমেই পাওয়া যায়।
কিন্তু আমের মত রসালো ও মিষ্টি একটি ফল, যা কেবল খেতেই অনন্য নয়, পুষ্টিগুণও অসীম, তাই ফলটি বারো মাস খেতে চাইবেন অনেকেই।
দেশে মে থেকে আগস্ট মাস পর্যন্ত চার মাসকে সাধারণত আমের মৌসুম হিসেবে গণ্য করা হয়।
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের হর্টিকালচার বিভাগের অধ্যাপক তামান্না হক গণমাধ্যমে বলেন, ‘‘দেশে আমের জনপ্রিয় জাতগুলো মূলত গ্রীষ্মকালেই পাওয়া যায়, কখনো বর্ষাকালের মাঝামাঝি পর্যন্ত দীর্ঘায়িত হয় আমের ব্যাপ্তি। মূলত পরিবেশগত কারণে ১২ মাস আমের ফলন হয় না বাংলাদেশে।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘সাধারণত জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে আমে মুকুল আসে, বাংলাদেশে ওই সময়টাতে বৃষ্টিপাত হয় না এবং বাতাসে আর্দ্রতা কিছুটা কম থাকে, আবহাওয়া শুষ্ক থাকে। যে কারণে ওই সময়টা আমের মুকুলের পুষ্ট হতে সাহায্য করে। ওই সময়ে বৃষ্টি হলে পরাগরেণু ধুয়ে যেত।’’
বাংলাদেশে মানুষের কাছে বছরজুড়ে আমের চাহিদা এত বেশি যে, দেশে আম আমদানিও হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, ২০২০-২০২১ অর্থবছরের জুলাই থেকে মার্চ পর্যন্ত সময়ে ৮৫ লাখ টাকার আম আমদানি হয়েছে।
ফলে দেশের কৃষি বিজ্ঞানী এবং চাষিরা চেষ্টা করছেন বারোমাসি আমের উদ্ভাবন করতে।
ইতোমধ্যে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউটের গবেষণায় একটি নতুন জাত উদ্ভাবিত হয়েছে, যেটি বারো মাস জুড়ে হয়। বারোমাসি আমটির নাম বারি-১১ আম।
কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউটের পরিচালক কবিতা আনজু-মান-আরা গণমাধ্যমে বলেন, ‘‘বারি-১১ জাতের এই আম বাংলাদেশের প্রথম বারোমাসি আম।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘এটি জানুয়ারি, মে এবং সেপ্টেম্বর এই সময়ে ফল দেয়। এর স্বাদও দারুণ। জানুয়ারি এবং মে মাসে যে ফলন হয় সেটি বেশ মিষ্টি, আর সেপ্টেম্বরে যে ফলন হয়, সেটি কিছুটা আঁশযুক্ত।’’
বারি-১১ ছাড়াও এই মুহূর্তে আরো কয়েকটি জাতের আমের চাষ করার চেষ্টা চলছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে, তাদের একটি প্রকল্প আছে ‘বছরব্যাপী ফল উৎপাদনের মাধ্যমে পুষ্টি উন্নয়ন’ নামের। যার মাধ্যমে আমসহ বিভিন্ন ফলের নতুন নতুন জাতের সম্প্রসারণের কাজ করা হচ্ছে বিভিন্ন জেলায়।
এর মধ্যে থাইল্যান্ডের বারোমাসি আম কাটিমনসহ কয়েকটি জাত স্থানীয় পর্যায়ে চাষ করার চেষ্টা করছেন চাষিরা। তবে সেগুলো এখনো বাণিজ্যিকভাবে বড় আঙ্গিকে চাষাবাদ হচ্ছে না।
সূত্র: বিবিসি
এমএম/
আরও পড়ুন