বৈশাখ মাসের কৃষি; বোরো ধান
প্রকাশিত : ১০:২২, ২৭ এপ্রিল ২০২০ | আপডেট: ১০:২৩, ২৭ এপ্রিল ২০২০
(বোরো ধান)
নির্দিষ্ট সময়ে বোরো ধানের চারা রোপণ করতে যারা দেরি করেছেন। দেরির ফলে ঐসব জমিতে চারার বয়স ৫০ থেকে ৫৫ দিন হলে ইউরিয়া সারের শেষ কিস্তি উপরিপ্রয়োগ করতে হবে। ইউরিয়ার উপরিপ্রয়োগ করতে না চাইলে দানাদার ইউরিয়ার পরিবর্তে গুটি ইউরিয়া ব্যবহার করতে পারেন। গুরুত্ব সহকারে অনেকগুলো কাজ করতে হবে। কাজগুলো হলে, জমির আগাছা পরিস্কার, সেচ এবং বালাই দমন এর কাজটাও মনে করে করতে হবে। ধানে থোড় আসা শুরু হলেই জমিতে পানির পরিমাণ দ্বিগুণ বাড়াতে হবে। যখন ধানের দানা শক্ত হতে শুরু করবে তখন যত দ্রুত সম্ভব জমি থেকে পানি বের করার করে দিতে হবে।
বৈশাখ মাসে বোরো ধানে বিভিন্ন রকম পোকা ও ফড়িং এর আক্রমন হতে পারে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য পাতা মোড়ানো পোকা, মাজরা পোকা, ছাতরা পোকা, বাদামি ঘাস ফড়িং, শীষকাটা লেদা পোকা, সবুজ পাতা ফড়িং, ছা তরা পোকা, গান্ধি পোকা, লেদা পোকা। এসব পোকার আক্রমন হয়েছে কিনা তা বোঝার জন্য নিয়মিত ক্ষেত পরিদর্শন করতে হবে। পোকার আক্রমণ রোধ করার জন্য সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনা নিতে হবে। এ ক্ষেত্রে প্রথমেই উপকারী পোকা সংরক্ষণ করতে হবে। আর ধানক্ষেতকে বালাই মুক্ত করতে ক্ষেতে ডাল-পালা পুঁতে পাখি বসার ব্যবস্থা করতে হবে, রাতের বেলায় আলোর ফাঁদ তৈরি করতে হবে। ক্ষতিকর পোকার ডিমের গাদা নষ্ট করতে হবে। জান দিয়ে ধরা যায় (বিশেষ পদ্ধতি) এমন পোকার জন্য জাল ব্যবহার করতে হবে। নিজস্ব চেষ্টায় পোকার আক্রমণ থেকে ক্ষেত বাঁচাতে না পারলে যত দ্রুত সম্ভব কোন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে সঠিক সময়ে, সঠিক বালাইনাশক, সঠিক মাত্রায় মাত্রায় জমিতে প্রয়োগ করতে হবে।
পোকা ও ফড়িং’র আক্রমনের পাশাপাশি বিভিন্ন জমিতে বিভিন্ন রোগ দেখা দিতে পারি। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য টুংরো রোগ, উফরা, পাতাপোড়া, বাদামি দাগ রোগ, হতে পারে ব্লাস্ট ও। আপনার জমিতে যদি উফরা রোগ দেখা দেয় তবে যে কোন কৃমিনাশক ব্যবহার করা যেতে পারে। এর মধ্যে আবার উল্লেখযোগ্য ফুরাডান ৫জি বা কিউরেটার বা ব্রিফার ৫জি । জমিতে ব্লাস্ট রোগ ও হতে পারে সেক্ষেত্রে ইউরিয়া সারের উপরিপ্রয়োগ সাময়িকভাবে বন্ধ রেখে হেক্টর প্রতি ৪০০ গ্রাম ট্রুপার বা জিল বা নাটিভো বা ব্লাস্টিন ১০ থেকে ১৫ দিনের ব্যবধানে দুইবার প্রয়োগ করতে হবে। ক্ষেতে যদি পাতা পোড়া রোগ দেখা দেয় তাহলে অতিরিক্ত ৫ কেজি-বিঘা হারে পটাশ সার উপরিপ্রয়োগ করতে হবে বং জমির পানি শুকিয়ে ৭ থেকে ১০ দিন পর আবার সেচ দিতে হবে। আর যদি টুংগো রোগ দেখা দেয় তবে জমি থেকে টুংগো রোগের বাহক সবুজ পাতা ফাড়িং দমন করতে হবে।
(সূত্র: কৃষি তথ্য সার্ভিস-এআইএস)
এমএস/
আরও পড়ুন