হিটলারের ঘণ্টা
প্রকাশিত : ১২:১০, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ | আপডেট: ১৫:৪০, ৪ মার্চ ২০১৮
অ্যাডলফ হিটলারের কোনো স্মৃতিকে বর্তমান আধুনিক জার্মানীতে অপয়া মনে করা হয়। সাবেক এই চ্যাঞ্চেলরের স্মৃতিচিহ্ন সাধারণত বইতে চান না দেশটির নাগরিকরা। তবে এবার এর ব্যতিক্রম হলো। হিটলারের স্মৃতিঘেরা একটি ঘন্টা রেখে দিতে হলো চার্চে।
জার্মানির একটি চার্চে রয়েছে হিটলারের স্মৃতিবিজড়িত ঘণ্টা। তবে কর্তৃপক্ষ চেয়েছিল সে ঘণ্টাটিকে সরিয়ে ফেলতে। ঘণ্টাটিতে নাৎসি হিটলারের ‘স্বস্তিকা’ চিহ্ন বড় করে আঁকা রয়েছে। এছাড়া সেখানে লেখা রয়েছে ‘সবকিছু পিতৃভূমির জন্য- অ্যাডলফ হিটলার।’
অনেক গ্রামবাসীই দাবি করছিলেন, তারা হিটলারের ঘণ্টার নিচে তাদের সন্তানকে বড় করতে চান না। ১৯৩৪ সালে ঘণ্টাটি স্থাপিত হয়েছে সেই গ্রামের চার্চে।
বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক তৈরি হলে শেষ পর্যন্ত জার্মানির সেই গ্রামের ‘প্রোটেস্ট্যান্ট চার্চ অব সেন্ট জেমস’ সম্প্রতি বেলটি রাখবে কি না, তা নিয়ে ভোটাভুটি হয় কাউন্সিলরদের মাঝে ।
ভোটে অবশ্য হিটলারের ঘণ্টাটি রাখার পক্ষেই মতামত পাওয়া যায়। সোমবার রাতে দক্ষিণ-পশ্চিম জার্মানির ছোট্ট গ্রামটিতে নাৎসি আমলের এ ঘণ্টাটি রাখার পক্ষে ভোট দেন ১০ জন কাউন্সিলর, বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন মাত্র তিনজন। তাই ঘণ্টাটি অপসারণের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন চার্চ কর্তৃপক্ষ।
পক্ষে ভোট দেওয়া কাউন্সিলরদের বক্তব্য হল, ঘণ্টায় স্বস্তিকা চিহ্ন রয়েছে, যেটা সেই সময়ের সহিংসতা আর অন্যায়ের কথা মানুষকে স্মরণ করিয়ে দেবে এবং মানুষকে অহিংস হওয়ার পথে উদ্বুদ্ধ করবে।
তবে বেশ কিছু বাসিন্দা এর প্রতিবাদ করে ঘণ্টাটিকে নষ্ট করে ফেলার আহ্বান জানিয়েছিলেন। স্থানীয় এক প্রোটেস্ট্যান্ট চার্চ নতুন একটি ঘণ্টা লাগানোর খরচ বহন করার প্রস্তাবও দিয়েছিলেন।
১৯৩৪ সাল থেকে ওই চার্চে এ ঘণ্টাটি ঝুলছে। এতদিন ঘণ্টাটির কথা কারও খেয়ালই হয়নি। সম্প্রতি চার্চের এক সাবেক অর্গ্যান বাদক সিগরিদ পেটার্স ঘণ্টার ওপর লেখা নিয়ে অভিযোগ তোলেন। আর তারপরই বিষয়টি সবার নজরে আসে।
অনেক বাসিন্দাই মনে করেন, এ ঘণ্টাটি এত সুন্দর চার্চটির মর্যাদা ক্ষুণ্ণ করছে এবং এর অস্তিত্ব নাৎসিপন্থী দলগুলোর কর্মকাণ্ডকে আরও উৎসাহিত করবে। তবে অন্য পক্ষের যুক্তি হল, এর অপসারণ শহরের ইতিহাসকে ঢেকে ফেলার শামিল।
নাৎসিপন্থী ঘটনার জের ধরে এই শহরের সাবেক মেয়রকে পদত্যাগ করতে হয়েছিল। তিনি বলেছিলেন, নাৎসি আমলের সবকিছু খারাপ ছিল না। তার এ মন্তব্যে এতটাই প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয় যে, তিনি পদত্যাগে বাধ্য হন।
সূত্র : বিবিসি ও ডয়েচে ভেলে।
/ এআর /