ঢাকা, বুধবার   ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪

সাগরের শ্যাওলা থেকে তেল

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১০:৪৯, ৩ এপ্রিল ২০১৮

আয়ারল্যান্ডে একটি ইউরোপীয় গবেষণা প্রকল্পে সাগরের পানির নীচে সি-উইড বা অ্যালজির চাষ করা হচ্ছে৷ এমনকি গবেষকরা ওই সামুদ্রিক শ্যাওলা থেকে যে তেল বের করেছেন, তা জৈব জ্বালানি তৈরিতে কাজে লাগানো যাবে ৷

সমুদ্রশৈবালের চাষ আয়ারল্যান্ডে একটা উঠতি ব্যবসা৷ স্বাস্থ্য পরিষেবা ও স্বাস্থ্যকর খাবার-দাবার, এই দু`টি বিভাগে সি-উইডের চাহিদা বেড়ে চলেছে৷ একটি নবধারার ইউরোপীয় গবেষণা প্রকল্পে সি-উইড ও অ্যালজি গোত্রীয় সামুদ্রিক শ্যাওলা থেকে জৈব জ্বালানি তৈরি নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে৷

জানা গেছে, সি-উইডের চাষ করতে কোনো সার লাগে না, চাষের জমি লাগে না৷ কিন্তু মাটিতে যে সব ফসলের চাষ হয়, সেখানে জমি নিয়ে টানাটানি৷ এছাড়া সি-উইড খুব তাড়াতাড়ি বাড়ে, ছ`মাসেই পুরো গজিয়ে যায়৷ কিছু ধরণের অ্যালজি অর্থাৎ সামুদ্রিক শ্যাওলায় শর্করা আছে, যা বায়োএথানল তৈরিতে ব্যবহার করা যায়৷ অপর কিছু অ্যালজিতে তেল আছে, যা বায়োডিজেলে পরিণত করা যায়৷

গবেষকরা এ ধরনের জ্বালানিকে ব্যবসায়িক দিক থেকে ব্যবহারযোগ্য করতে সচেষ্ট – তাঁরা প্রধানত অ্যালজির বাড় ও অ্যালজিতে তেলের পরিমাণ বাড়ানোর চেষ্টা করছেন৷ গবেষণা থেকে দেখা গেছে, এই শ্যাওলায় মাটিতে চাষ করা ফসলের চেয়ে ৭ থেকে ৩১ গুণ বেশি তেল থাকবে৷

সি-উইড আর মাইক্রো-অ্যালজির কোষে যে তেল ধরা রয়েছে, সেটাকে বের করাই হল সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ৷ ল্যাবরেটরিতে গুঁড়ো অ্যালজি প্রচুর পরিমাণ সলভেন্টে গুলে তেলের নিষ্কাশন বাড়ানো সম্ভব, কিন্তু কারখানায় বড় মাপে তা করতে গেলে তা খরচে কুলাবে না৷

মাইক্রোঅ্যালজি গবেষক ফিওনা মোজেস-এর মতে, অ্যালজির চাষ করাটা শক্ত নয় – ম্যাক্রোঅ্যালজি বা মাইক্রোঅ্যালজি, দু`টোই চাষ করা সহজ৷ শক্ত কাজ হল অ্যালজি থেকে তেল বের করা৷ সবচেয়ে কম উপাদান প্রয়োগ করে সবচেয়ে সস্তায় সেটা করার পদ্ধতি আমাদের খুঁজে বার করতে হবে৷

সমুদ্রশৈবাল থেকে তৈরি সস্তার তেল উঠতি জৈব জ্বালানি শিল্পে বিপ্লব আনতে পারে৷ আয়ারল্যান্ডের এই কারখানাটিতে পুরনো রান্নার তেল, জন্তুজানোয়ারের চর্বি ও অন্যান্য নানা ধরনের চর্বি থেকে প্রতিবছর ৩০ হাজার টন জৈব জ্বালানি তৈরি করা হয়৷ সেই জৈব জ্বালানি বা বায়োফুয়েলে খনিজ ডিজেল মিশিয়ে তাকে আরও পরিবেশবান্ধব করে তোলা হয়৷ গবেষকরা কারখানায় ব্যবহৃত যন্ত্রপাতির উপর সেই অ্যালজি জাত তেলের নমুনা পরীক্ষা করে দেখেন – কেননা বায়োফুয়েল উৎপাদনকারীরা প্রতিযোগিতামূলক দামে কোনো নতুন পণ্য পেলে তাদের উৎপাদন বাড়াতে পারবেন৷

গ্রিন বায়োফুয়েলস আয়ারল্যান্ড প্রতিষ্ঠানের ল্যাবরেটরি ম্যানেজার জো জিউয়িসন বললেন, আমাদের শিল্প এই নতুন তেল সম্পর্কে আগ্রহী, কেননা আমরা এই পদ্ধতিতে যে কোনো ধরনের তেলকে বায়োডিজেলে পরিণত করতে পারি৷ আর তা যত পরিবেশবান্ধব হবে, ততই আমাদের পক্ষে ভালো৷

পর্যাপ্ত পরিমাণ সূর্যের আলো, পানি ও কার্বন ডাইঅক্সাইড পেলে অ্যালজি প্রায় যে কোনো জায়গায় গজাতে পারে৷ সমুদ্রশৈবাল কার্বন ডাইঅক্সাউড শুষে নিয়ে বাতাস পরিষ্কার করে ও মাছের চাষ থেকে পানিতে যে বাড়তি পুষ্টিকারক পদার্থ থেকে যায়, তা সরাতে সাহায্য করে৷

মেরিন বায়োলজিস্ট ফ্রেডি ও`মাহোনির বলেন, পরিবেশের উপর সি-উইড খামারের যে প্রভাব পড়ে, তার সবটাই কল্যাণকর ও ইতিবাচক – খারাপ বলে কিছু নেই৷

সূত্র: ডয়চে ভেলে

একে// এআর


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি