ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪

ভারতের যেসব মন্দিরে নারীদের প্রবেশ নিষেধ

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৪:১১, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৮

ভারতের কেরালা রাজ্যে প্রায় আটশো বছরের প্রাচীন সবরিমালা মন্দিরে ১০ থেকে ৫০ বছর বয়সী নারীদের প্রবেশাধিকার দিয়েছে ভারতের সুপ্রীম কোর্ট। প্রাচীন বিশ্বাস যে ওই বয়সের নারীরা ঋতুযোগ্যা। অন্যদিকে মন্দিরটির পূজ্য দেবতা আয়াপ্পা একজন ব্রহ্মচারী, ফলে চিরকুমার এই দেবতার কাছাকাছি ঋতুযোগ্যা নারীরা গেলে তিনি রুষ্ট হতে পারেন।

সেজন্যই পেরিয়ার ব্যাঘ্র প্রকল্পের ভেতরে, এক পাহাড়ের ওপরে অবস্থিত ওই মন্দিরে ১০ থেকে ৫০ বছর বয়সী নারীদের প্রবেশাধিকার ছিল না।

তবে ওই মন্দিরটি ছাড়াও ভারতে এমন আরও কিছু মন্দির রয়েছে, যেখানে নারীদের প্রবেশাধিকার নেই।

যেসব মন্দিরে নারীদের প্রবেশাধিকার নেই, সেগুলিতে মূলত ঈশ্বর ব্রহ্মচারী বা চিরকুমার হিসাবে পূজিত হন। সবরিমালার আরাধ্য দেবতা আয়াপ্পা যেমন ব্রহ্মচারী এবং চিরকুমার, তেমনই তার কাছে মকর সংক্রান্তির দিনে যে বিশেষ পুজো দিতে লক্ষ লক্ষ মানুষের সমাগম হয়, তাদেরও পুজার আগে ৪১ দিন ধরে ব্রহ্মচর্য পালন করতে হয়। তারা নিরামিষ খাবার খান, কালো পোষাক পড়েন, দাড়ি কাটেন না এবং কোনোরকমের নারী সাহচর্য করেন না।

ভারতের আদালত শুক্রবার এক রায়ে এই মন্দিরের বহু শতাব্দী ধরে চলে আসা নিয়ম বদল করে নারীদের প্রবেশাধিকার দিয়েছে।

কিন্তু অনেক নারী নিজেরাই চান না ঋতুযোগ্যা হওয়ার পরে ওই মন্দিরে প্রবেশ করতে।

তবে হিন্দু মন্দিরগুলিতে নারীদের প্রবেশাধিকার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে লড়াই চালাচ্ছে মহারাষ্ট্রের একটি সংগঠন ভূমাতা ব্রিগেড।

সংগঠনটির প্রধান তৃপ্তি দেশাই গণমাধ্যমকে বলেন, ‘এইসব নিষেধাজ্ঞার সঙ্গে ঋতুমতী হওয়ার কোনও বিজ্ঞানভিত্তিক যুক্তি নেই। এটা নারীদের প্রতি বৈষম্য। একবিংশ শতাব্দীতে যখন মেয়েরা যুদ্ধবিমান চালায়, দেশ শাসন করে, মহাকাশে পাড়ি দেয়, সেই সময়ে তারা মন্দিরে প্রবেশ করতে পারবে না এটা হতে পারে না। তাদেরও তো পুজো করার অধিকার রয়েছে।’

সুপ্রীম কোর্টও বলেছে ঋতুযোগ্যা নারীদের সবরিমালা মন্দিরে প্রবেশ না করতে দেওয়ার অর্থ তাদের ধর্মপালনের অধিকারে হস্তক্ষেপ।

এদিকে হিন্দু পুরাণ বিশেষজ্ঞ নৃসিংহ প্রসাদ ভাদুড়ী বলছিলেন পুরাণের সঙ্গে এই সব নিয়মের কোনও সংঘাত থাকা উচিত নয়।

তিনি আরো বলেন, ‘শাস্ত্র তো তৈরী হয়েছে তৎকালীন সমাজ থেকে। সেই সময়ে সমাজে যা নিয়মকানুন ছিল, সেগুলোরই সংকলন এই শাস্ত্র। তখনকার সমাজ সেইভাবেই পরিচালিত হত। সেই সময়ে যদি সমাজ পুরুষতান্ত্রিক থেকে থাকে, সেটা তো বর্তমান যুগে মানার প্রয়োজন নেই।

এখন তো সমাজ পরিচালনার জন্য পার্লামেন্টের তৈরী করা আইন কানুন রয়েছে, তাই এখন সেইসব আধুনিক আইন অনুযায়ীই সমাজ চলবে! তাই দুটোর মধ্যে তো কোনও সংঘাত হওয়ারই কথা নয়।’

যেসব মন্দিরে নারীদের প্রবেশাধিকার নেই এরকম পাঁচটি মন্দির হলো-

১) কেরালার রাজ্যেরই শ্রী পদ্মনাভস্বামী মন্দির

২) মহারাষ্ট্রের ত্রিম্বকেশ্বর মন্দির

৩) রাজস্থানের পুষ্করে অবস্থিত কার্তিকেয় মন্দির

৪) মহারাষ্ট্রের কোলাপুরের মহালক্ষ্মী মন্দির

৫) তামিলনাডুর তালাওয়াডির মল্লিকার্জুনস্বামী মন্দির

 

সূত্র: বিবিসি

 

এমএইচ/


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি