সমুদ্রের এই প্রাণীগুলো চমকে দিয়েছে বিজ্ঞানীদের
প্রকাশিত : ১৫:৪১, ১৬ জানুয়ারি ২০১৯
এই ছিল, এই নেই। চোখের নিমেষে এক্কেবারে হাওয়া! সামুদ্রিক এই প্রাণীগুলো যেন ম্যাজিক জানে।
এই প্রাণীগুলো গ্লাস অক্টোপাস ও গ্লাস স্কুইড। আক্রান্ত হলে বা এ রকম কোনও সম্ভাবনা থাকলে, গভীর সমুদ্রের এই প্রাণীগুলো এমনভাবে নিজেদের লুকিয়ে ফেলতে পারে, মনে হয় তারা অদৃশ্য।
সমুদ্রে দু’টি উপায়ে নিজেদের লুকিয়ে ফেলতে পারে সামুদ্রিক প্রাণী গ্লাস অক্টোপাস। সাগরের তলদেশে বসবাসকারী এই প্রাণী বালি, পাথরের সঙ্গে অদ্ভুতভাবে মিশে যেতে পারে। লুকিয়ে পড়তে পারে প্রবাল প্রাচীর বা কোরাল রিফের আড়ালে।
শরীরের রং বদলাতে এরা ওস্তাদ। অনেক সময় এরা কালো রঙে বদলে ফেলে নিজেদের। অন্ধকারে যা অদৃশ্য হওয়ার সমার্থক। সমুদ্রপৃষ্ঠের কাছাকাছি যখন এই প্রাণীগুলো চলে আসে তখন শিকারীর কাছ থেকে নিজেদের লুকিয়ে ফেলতে এক ধরনের বিশেষ আলোর সৃষ্টি করে। একে বায়োলুমিনিসেন্স বলছেন গবেষকরা।
এই প্রক্রিয়ায় তারা শিকারীদের সামনে বিভ্রম সৃষ্টি করে। আর শিকারীরাভাবে শিকার অদৃশ্য হয়ে গেছে।
গ্লাস স্কুইডের ক্ষেত্রে গ্লাস পরিবারের অন্তর্ভুক্ত প্রায় ৬০ প্রজাতির স্কুইড রয়েছে। সমুদ্রের ২০০ থেকে এক হাজার মিটারের মধ্যে বসবাস করে এরা। গ্লাস স্কুইডের শরীর পুরোপুরি স্বচ্ছ, তবে এদের বড় চোখগুলো এদের সমস্যায় ফেলে।
গভীর সমুদ্রে হাঙর জাতীয় শিকারী প্রাণীরা এদের সহজেই তাই দেখে ফেলে। এ জন্য গ্লাস স্কুইড তাদের লুকিয়ে ফেলার জন্য ভিন্ন ছদ্মবেশ ধারণ করে। প্রশান্ত মহাসাগরে এক হাজার ৬০০ ফুট গভীরেও শিকারীকে বিভ্রান্ত করে তারা।
চোখের নিচে একটি বিশেষ কৌশলে এরা আলো তৈরি করতে পারে। সেই আলো সূর্য থেকে আসা আলোর মতোই দেখায়। এভাবে সম্পূর্ণরূপে শিকারীদের সামনে অদৃশ্য হয়ে পড়ে। সি সাল্পের ক্ষেত্রেও এমনটাই ঘটে।
পেনসিলভেনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা বলছেন, স্কুইড বিশেষ প্রক্রিয়ায় যে আলো সৃষ্টি করে তা বিস্ময়করভাবে চার দিকের অন্য আলোর সঙ্গে মিশে যায়। তখন এমন একটি ‘ভ্রম’ তৈরি করে যা দেখে মনে হয় আলোটি চারদিক থেকে আসছে। ফলে প্রাণীটিকে দেখতে পাওয়া যায় না। যেমন ডিপ সি ওয়ার্ম।
হাইপারইডস, সি স্যাফায়ার ইত্যাদি প্রাণীর ক্ষেত্রেও এই ধরনের অদৃশ্য হয়ে যাওয়ার একটা ক্ষমতা রয়েছে।
সূত্র: আনন্দবাজার
একে//