বেসরকারি ব্যাংকে যাচ্ছে সরকারি আমানতের ৫০ শতাংশ
প্রকাশিত : ২০:০২, ৩১ মার্চ ২০১৮
ব্যাংক ঋণের সুদের হার আবারও কমানোর ঘোষণা দিয়েছে বেসরকারি ব্যাংক উদ্যোক্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস (বিএবি)। আগামী তিন থেকে চার মাসের মধ্যে সুদের হার এক অঙ্কে (সিঙ্গেল ডিজিট) নামিয়ে আনার ঘোষণা দেয় সংগঠনটি। এজন্য ব্যাংকগুলোর নগদ জমা সংরক্ষণ (ক্যাশ রিজার্ভ রেশিও বা সিআরআর) তিন শতাংশ কমানো এবং ব্যাংকে সরকারি আমানতের ৫০ শতাংশ বেসরকারি ব্যাংকের রাখার দাবি জানানো হয়েছে সংগঠনটির পক্ষ থেকে।
গতকাল শুক্রবার রাতে রাজধানীর গুলশানে ব্যাংকিং খাতের চলমান সঙ্কট নিয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সঙ্গে জরুরি এক বৈঠকে এ দাবি জানানো হয়।
বিএবি সভাপতি নজরুল ইসলাম মজুমদারের সভাপতিত্বে বৈঠকে এনবিআর চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ ইউনুসুর রহমান, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব শফিকুল আযম, আইএফআইসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান শিল্পপতি সালমান এফ রহমান, এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি ও স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের চেয়ারম্যান কাজী আকরাম উদ্দীন আহমেদ, ব্যাংক এশিয়ার চেয়ারম্যান এ রউফ চৌধুরী, বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ-এবিবি চেয়ারম্যান সৈয়দ মাহবুবুর রহমানসহ বিভিন্ন ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকরা উপস্থিত ছিলেন।
বর্তমানে ব্যাংকিং খাতে তারল্য সঙ্কট চলছে জানিয়ে বিএবি সভাপতি বলেন, ব্যাংক খাতের এ সঙ্কটকালীন মুহূর্ত কীভাবে দূর করা যায় সে ব্যাপারে আলোচনায় তিনটি সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত হয়েছে। ব্যাংকগুলোর পক্ষ থেকে সরকারি আমানতের ৫০ শতাংশ বেসরকারি ব্যাংকে রাখার দাবি মৌখিকভাবে সম্মতি দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। এখন থেকে সরকারি আমানতের ৫০ শতাংশ বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে রাখা হবে।
প্রসঙ্গত, বর্তমানে সরকারি আমানতের মাত্র ২৫ শতাংশ বেসরকারি ব্যাংকে রাখার বিধান রয়েছে। আর ৭৫ শতাংশ রাখা হয় রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাংকগুলোতে।
ব্যাংক মালিকদের এ নেতা বলেন, সরকারি ব্যাংকগুলোতে অলস টাকা পড়ে আছে। জেনেছি সরকারি ব্যাংকগুলোতে এক লাখ কোটি টাকা অলস পড়ে আছে। নানা রকম সমস্যা থাকার কারণে সরকারি ব্যাংকগুলো থেকে ব্যবসায়ীরা টাকা নিতে চান না। শিল্প ও বাণিজ্যের কারণে আমরা বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলো বেশি বিনিয়োগ করে ফেলায় আমাদের এখন অর্থ দরকার। তাই সরকারি আমানত বাড়লে আমাদের সঙ্কট থাকবে না।
নজরুল ইসলাম মজুমদার বলেন, বর্তমানে ব্যাংকগুলোতে টাকার সঙ্কট থাকায় ব্যাংকগুলোর নগদ জমার হার (সিআরআর) সাড়ে ছয় শতাংশ থেকে নামিয়ে সাড়ে তিন শতাংশ করার বিষয়টি আলোচনা হয়েছে। আমরা সরকারের কাছে আবেদন করেছি। অর্থমন্ত্রী এ ব্যাপারে সায় দিয়েছেন। তবে কত কমানো হবে এ ব্যাপারে আগামী রোববার বৈঠক হবে। সেখানে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরও থাকবেন।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ব্যাংকিং খাত নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে নানা কথা হচ্ছে। আজ তাদের সঙ্গে কথা হলো। আগামী রোববার গভর্নরকে নিয়ে আবারও বৈঠক করবো। এরপর সিদ্ধান্ত হবে বলে জানান আবদুল মুহিত।
একে//এসএইচ/
আরও পড়ুন