ঢাকা, বুধবার   ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪

করমুক্ত আয়সীমা বাড়ছে না!

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ২২:৪৯, ৪ এপ্রিল ২০১৮

আসন্ন ২০১৮-১৯ অর্থ বছরের বাজেটে ব্যক্তির ক্ষেত্রে করমুক্ত আয়ের সীমা ‘সম্ভবত’ বাড়বে না বলে জানিয়েছেন এনবিআর চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া। তিনি বলেন, বাজেটে বিদ্যমান করমুক্ত আয়সীমা আড়াই লাখ টাকাই বহাল থাকার পাশাপাশি কমতে পারে ন্যুনতম করের পরিমাণও।

প্রসঙ্গত, বর্তমানে ঢাকা শহরে ন্যুনতম কর ৫ হাজার টাকা, আর ঢাকার বাইরে ৩ হাজার টাকা।

বুধবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) কার্যালয়ে অর্থনৈতিক বিটের সাংবাদিকদের সংগঠন ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) সাথে প্রাক-বাজেট আলোচনায় এনবিআর চেয়ারম্যান এসব তথ্য জানান।

বৈঠকে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি সাইফুল ইসলাম দিলাল তার বক্তব্যে স্কুল-পড়ুয়া ছেলে মেয়ে থাকা পরিবারকে কিছু সুবিধা দেওয়াসহ করমুক্ত আয়সীমা আরো অন্তত ২৫ হাজার টাকা বাড়ানোর দাবি জানান।

ইআরএফ সভাপতি বলেন, রাজধানীরসহ সারা দেশের বিভিন্ন স্থানে  জমি ও ফ্ল্যাটের বেচাকেনা ক্ষেত্রে এর মালিক এবং রেজিস্ট্রেশন অফিসের কর্মকর্তারা কম দেখিয়ে থাকেন। এতে সরকার বড় অঙ্কের রাজস্ব হারাচ্ছে প্রতিনিয়ত।

এ কথার জবাবে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, দেশে কর দেওয়ার অভ্যাস গড়ে উঠেছে। তবে আমরা সবাই যদি এটা অনুধাবন করি যে, করের পরিমাণ যাই হোক, প্রতিবছর আমি কর দেব। এতে খুব বেশি কষ্ট হবে না।

তিনি বলেন, আড়াই লাখ আয় ধরলে কারো বছরে কর ৩-৫ হাজার টাকা আসবে, এটা দেওয়া তেমন বিষয় নয়। কারণ প্রতিবছর অনেকে একটা-দুইটা মোবাইলও বদল করেন।

এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ন্যূনতম করের পরিমাণ কমিয়ে সবাইকে করের আওতায় আনতে হবে। সেটার পরিমাণ যাই হোক। সরকার নাগরিক অনেক সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে, সেখানে কর দেওয়া সবার ‘জাতীয় নৈতিক’ দায়িত্ব। এটা কিভাবে করা যায়, সেটা নিয়ে ভাবা হচ্ছে।

ইআরএফ সাধারণ সম্পাদক জিয়াউর রহমান বলেন, শেয়ারবাজারের লিস্টেড কোম্পানি এবং নন-লিস্টেম কোম্পানিগুলোর কর হার ব্যবধান ১০ শতাংশ। এক্ষেত্রে লিস্টেড কোম্পানির কর হার কমানোর আহবান জানান তিনি।

এ বিষয়ে তিনি বলেন, কর সুবিধা দেওয়া হলে নন-লিস্টেড কোম্পানিগুলো বাজারে আসবে। তাদের উপর মনিটরিং বাড়বে। এর ফলে কর হার কমবে না বরং বাড়বে।

তাছাড়া বহুজাতিক কোম্পানিগুলো তালিকাভুক্ত না হলে তাদের করহার বাড়ানোর প্রস্তাব করেন তিনি। কারণ বহুজাতিক কোম্পানিগুলো ব্যাপক মুনাফা করলেও কর্মসংস্থানে এদের অবদান কম।

মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া বলেন, শেয়ারবাজারের লিস্টেড কোম্পানি এবং নন-লিস্টেড কোম্পানিগুলোর কর হার ব্যবধানের বিষয়টি দেখা হবে। আর বহুজাতিক কোম্পানিগুলোকেও আমরা বাজারে আসতে বলতে পারি।

বৈঠকে ইআরএফ সহ-সভাপতি সালাউদ্দিন বাবলু বলেন, ঢাকায় যানজটের কারণে বছরে ৪০ হাজার কোটি টাকা ক্ষতি হয়। এখানে ২৫ লাখ শিক্ষার্থী আছে, তারা যখন রাস্তায় নামেন, সাথে আরো ১৫ লাখ অভিভাবক নামে অর্থাৎ প্রায় ৪০ লাখ। তাদের অব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়ে শিক্ষাঙ্গনে আসতে হয়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শিক্ষার্থীদের পরিবহনে ইউনিফর্ম আদলে ইয়োলো বাস আছে। আমাদের ঢাকায় সেটা নেই।

অনেকের আগ্রহ থাকলেও ট্যাক্সের ভয়ে গাড়ি নামান না। এক্ষেত্রে ট্যাক্স মওকুফ করে দিলে-অনেক গাড়ি নামবে। কেউ ব্যবসায়িক ভাবে এটা ব্যবহার করতে পারবে না, তাহলে ঢাকার যানজট অর্ধেক নেমে যাবে।

এ প্রসঙ্গে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, আমরা এটার নোট করে রাখবো। অর্থমন্ত্রীর সাথে এটা নিয়ে কথা বলবো। এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় কিনা তা ভেবে দেখার জন্য। আমার মনে হয় এ ধরণের সুবিধা দিতে আমরা পারব।

বৈঠকে এনবিআর চেয়ারম্যান আরো বলেন,  আগামী বাজেট নির্বাচনি বাজেট হলেও কর হার কমবে না। আমাদের রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা বাড়বে।

শেয়ারিং প্রতিষ্ঠানগুলোকে করের আওতায় আনা হবে উল্লেখ করে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, উবার, পাঠাওসহ রাইড শেয়ারিং প্রতিষ্ঠানগুলোকে করের আওতায় আনা হবে। এসব রাইড শেয়ারিং প্রতিষ্ঠানগুলো এখনো করের আওতার বাইরে রয়েছে। তাদেরকে আগামী বাজেটে করের আওতায় আনতে হবে।

বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে করের আওতায় আনার চিন্তা-ভাবনা আছে বলেও জানান তিনি।

আর/টিকে


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি