ঢাকা, সোমবার   ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

চলমান সংকটেও ব্যবসায় সন্তুষ্ট ই-কমার্সগুলো

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ২২:১৪, ২৭ মে ২০২০

ই-কমার্স শপ

ই-কমার্স শপ

চলমান করোনা সংকটের কারণে বেশ কঠিন ও চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতির মধ্যে দিয়েই উদযাপিত হলো এবারের ঈদ-উল ফিতর। এ ঈদে বিপণিবিতানগুলোর বেশিরভাগই বন্ধ থাকায় বেচাকেনায় বেশ এগিয়ে ছিল দেশীয় ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলো। আগের তুলনায় সামগ্রিকভাবে ই-কমার্সে বেচাকেনা প্রায় অর্ধেক হলেও পরিস্থিতি বিবেচনায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে পণ্য বিক্রি বেশিই হয়েছে বলে জানায় প্রতিষ্ঠানগুলো।

দেশে মুসলমানদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব ঈদকে ঘিরে প্রতিবারই ব্যবসায়ীদের ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা কাজ করে। অনেকেই মনে করেন, সারা বছরের বিক্রির সবচেয়ে বড় অংশই হয় এই ঈদের সময়। যে কারণে বেশ আগে ভাগেই নেয়া থাকে পূর্বপ্রস্তুতি। তবে করোনা এবারের বৈশাখী উৎসবের পাশাপাশি ওলটপালট করে দিয়েছে ঈদ ব্যবসার হিসাব। 

স্বাস্থ্যঝুঁকি এড়াতে বসুন্ধরা শপিংমলের মতো রাজধানী ও এর বাইরের বেশিরভাগ বিপণিবিতানই ছিল বন্ধ। যেগুলো খোলা ছিল স্বাস্থ্যবিধি আর স্বাস্থ্যঝুঁকির আশংকায় সেগুলোতেও ছিল ক্রেতাদের সামান্য উপস্থিতি। এমনই প্রেক্ষাপটে নিয়মিত ক্রেতাদের পাশাপাশি ইকমার্সের দিকে আগ্রহী হতে দেখা যায় নতুন নতুন গ্রাহকদের। আর এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে ক্রেতা আকৃষ্ট করতে মূল্যছাড়, ক্যাশব্যাক ও ফ্রি-ডেলিভারির মতো আকর্ষণীয় অফার দিতে দেখা যায় ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ও ই-কমার্সভিত্তিক মার্কেটপ্লেসগুলোকে।

দেশীয় উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত এসব ই-কমার্স মার্কেটপ্লেসের মধ্যে ই-ভ্যালির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রাসেল সাংবাদিকদের জানান, চলমান করোনা পরিস্থিতি দেশের বাজারে ই-কমার্সকে আরও জনপ্রিয় করতে তাদের জন্য এক ধরনের সুযোগ তৈরি করে দেয়। আর ঈদের সময়ে তা এক মোক্ষম সুযোগ হয়ে ধরা দেয়। তারাও ইভ্যালির পক্ষ থেকে চেয়েছেন এই সংকটে ক্রেতাদের আকৃষ্ট করার।

তিনি আরও জানান, ‘এরজন্য তারা ‘ওয়াও অফার’, ‘ঈদ মেলা অফার’-এর মাধ্যমে ২০ শতাংশ মূল্যছাড় থেকে শতভাগ ক্যাশব্যাক, ১০ কেজি পর্যন্ত ফ্রি হোম ডেলিভারি; এ ধরনের অফার দিয়েছেন। গ্রাহকদের সাড়াও পেয়েছেন। ওয়াও অফারে দেশের বিভিন্ন ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি ৩১টি স্বনামধন্য ব্র্যান্ড ছিল। ৬ মে থেকে ১৩ মে এর এই ক্যাম্পেইনে ৪০ হাজারের বেশি অর্ডার হয়েছে। 

ঈদ মেলা অফারে সাড়াটা আরও বেশি ছিল উল্লেখ করে মোহাম্মদ রাসেল জানান, ঈদের সময়ে গ্রাহকরা এসি, ফ্রিজ, ওয়াশিং মেশিন, টিভির মতো বিভিন্ন ধরনের হেভিওয়েট হোম অ্যাপ্লায়েন্স পণ্য ও বাইক কেনেন। ইভ্যালিতে এ ধরনের পণ্যেরও ব্যাপক অর্ডার হয়েছে।

করোনার মধ্যেও এবার বেচাকেনা বেশ ভালো হয়েছে উল্লেখ করে পিকাবোডটকমের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোরিন তালুকদার জানান, গত বছরের সঙ্গে তুলনা করলেও এবার প্রায় ২৫ শতাংশ বেশি বিক্রি হয়েছে। করোনার কারণে অনেককিছুই বিভিন্ন ধরনের চ্যালেঞ্জ এবং সীমাবদ্ধতার মধ্যে করতে হয়েছে। নয়তো আরও ভালো হতো।

বিগত কয়েক বছরের ঈদে ই-কমার্স খাতে অভাবনীয় প্রসার হয়েছে উল্লেখ করে আরেক দেশীয় ই-কমার্স সাইট প্রিয়শপডটকমের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আশিকুল আলম খান জানান, ঈদ পোশাক, ফ্যাশন অনুষঙ্গ, স্মার্টফোন, গৃহস্থালি সামগ্রীর পণ্য বেশ বিক্রি হয়েছে। সেদিক থেকে তুলনা করলে এবার সেই ব্যবসা ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ কম হয়েছে। 

তবে এ বছর লাইফস্টাইল পণ্যে সেই তুলনায় ব্যবসা হবে না -শুরুতেই এমনটা ধরে নিয়েই তারা ঈদকে সামনে রেখে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দিকেই এবশি নজর দেন তারা। তিনি জানান, প্রিয়শপ ডটকম গ্রাহককেন্দ্রিক ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম। তাই সংকটকালীন এই সময়ে গ্রাহকদের যেন ঘরের বাইরে বের হতে না হয় সেজন্য গ্রাহকদের দ্বারে পণ্য পৌঁছে দিতে তারা কাজ করেছেন। গ্রাহকদের প্রয়োজন সাপেক্ষে পণ্যের যোগান দিয়েছেন- তাই এক অর্থে ব্যবসা ভালোই হয়েছে তাদের।

এদিকে, বড় প্ল্যাটফর্মগুলো ভালো করলেও সামগ্রিকভাবে এবার ই-কমার্স খাতে ব্যবসা প্রায় অর্ধেকটা কম হয়েছে বলে মনে করছেন ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ই-ক্যাব) সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুল ওয়াহেদ তমাল। তিনি বলেন, এখনই সঠিক কোনো ডাটা আমাদের হাতে নেই, তবে ঈদের ছুটির পরেই আমরা একটি সার্ভে করবো। তখন আরও নিশ্চিত করে বোঝা যাবে। তবুও এর মাঝে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, পুলিশ বিভাগ ও আইসিটি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আমরা নিয়মিত যোগাযোগ রেখে ইকমার্সের কার্যক্রম প্রতিদিন রাত ১০টা পর্যন্ত রাখতে সক্ষম হয়েছি।

এনএস/


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি