কৃষি ঋণ বিতরণ অর্ধেকে নেমেছে
প্রকাশিত : ১৬:৫৫, ২৮ জুন ২০২০
দেশের অর্থনীতির মেরুদ্বন্ড কৃষি। সেই কৃষিঋণের উপর পড়েছে করোনার নেতিবাচক প্রভাব। গত তিন মাসে এ খাতে ঋণ বিতরণ ও আদায় অর্ধেকে নেমে এসেছে। চলতি বছরের মার্চে কৃষিখাতে তিন হাজার ৪৫৮ কোটি টাকা ঋণ দেয় ব্যাংকগুলো, যা আগের বছরের মার্চের তুলনায় প্রায় অর্ধেক। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদনে দেখা গেছে, গত বছরের এই মাসে ছয় হাজার ২২২ কোটি টাকা ঋণ দেয়া হয়। আর চলতি বছরের এপ্রিলে কৃষিঋণ বিতরণে ধস নামে। এপ্রিলে মাত্র ৪৯৬ কোটি টাকা ঋণ দেয় ব্যাংকগুলো। অথচ, আগের বছর একই সময় ঋণ দেয় দুই হাজার ২৬১ কোটি টাকা। এপ্রিলে ঋণ বিতরণ কমেছে প্রায় ৭৯ শতাংশ।
এপ্রিলের তুলনায় মে মাসে ঋণ বিতরণ বেড়ে দাঁড়ায় এক হাজার ১৩২ কোটি টাকা। তবে তা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ঋণ বিতরণ কমেছে ৩৭ শতাংশ। আগের বছরে মে মাসে ব্যাংকগুলো কৃষি খাতে এক হাজার ৮১০ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করে। সব মিলে লকডাউনের তিনমাসে কৃষিখাতে ব্যাংকগুলো পাঁচ হাজার ৮৬ কোটি টাকা ঋণ দিয়েছে। যা আগের বছরের একই সময়ে চেয়ে ৫০ দশমিক ৫৮ শতাংশ কম। আগের বছরের এ তিনমাসে ঋণ দেয় ১০ হাজার ২৯৩ কোটি টাকা।
চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরে কৃষিখাতে ব্যাংকগুলোর ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ২৪ হাজার ১২৪ কোটি টাকা। কিন্তু ১১ মাসে (জুলাই-মে) পর্যন্ত বিতরণ করেছে ১৮ হাজার ৫৫০ কোটি টাকা। লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হলে এক মাসে পাঁচ হাজার ৫৭৪ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করতে হবে। এছাড়া আগের বছরের আলোচ্য ১১ মাসে ব্যাংকগুলো কৃষিখাতে ঋণ দেয় ২০ হাজার ৩৩৫ কোটি টাকা। এ হিসেবে ঋণ বিতরণ কমেছে প্রায় ৯ শতাংশ।
এদিকে লকডাউনে শাখা বন্ধ থাকায় কৃষিঋণের আদায়ও অনেক কমেছে। এপ্রিলে আদায় হয়েছে মাত্র ৭৬৭ কোটি টাকা। আগের বছরে এ মাসে আদায় হয় এক হাজার ৯১৬ কোটি টাকা। মে মাসে আদায় আরও কমে মাত্র ৫৬১ কোটি টাকায় নেমে আসে। আগের বছরের মে মাসে আদায় হয় এক হাজার ৭২৪ কোটি টাকা। এগারো মাসে আদায় ২০ হাজার ৬৫৫ কোটি টাকা থেকে কমে ১৮ হাজার ২৭১ কোটি টাকা হয়েছে। সামগ্রিকভাবে আদায় কার্যক্রম কমেছে সাড়ে ১১ শতাংশ। তবে এপ্রিল ও মে মাসে আদায় অর্ধেকের নিচে নেমে এসেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত কৃষিখাতে ঋণ বিতরণ ও আদায় কার্যক্রম স্বাভাবিক ধারায় ছিল। জুলাই থেকে ফেব্রুয়ারি এ ৯ মাসে কৃষিখাতে ঋণ বিতরণ হয় ১৫ হাজার ৯২ কোটি। আগের বছর ছিল ১৪ হাজার ১১৩ কোটি টাকা। কৃষিঋণ বৃদ্ধি পায় ৭ শতাংশ। অন্যদিকে আদায়ের পরিমাণ ১৫ হাজার ৩২১ কোটি টাকা থেকে বেড়ে হয় ১৫ হাজার ৫০৮ কোটি।
আরকে//
আরও পড়ুন