আইনের সীমাবদ্ধতায় রক্ষা হচ্ছে না ভোক্তার অধিকার
প্রকাশিত : ২১:০৫, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২১
বিভিন্ন ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। টাকা ফিরে পেতে গ্রাহকরা অভিযোগ করছেন ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তরে। কিছু অভিযোগের সমাধান হচ্ছে ভোক্তা ও বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানের উপস্থিতির মাধ্যমে। ভোক্তার অভিযোগ সত্য প্রমান হলে অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা আরোপ করা হচ্ছে। কিন্তু তারপরও থামছে না প্রতিষ্ঠানগুলোর ক্রেতা ঠকানোর প্রতারনা। কারণ আইনে অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানকে যে শাস্তির কথা বলা হয়েছে। তা প্রয়োজনের তুলনায় কম।
ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সূত্রে জানা যায়, ভোক্তা অধিকার আইন অনুযায়ী একজন ভোক্তার পক্ষে অধিদপ্তর অভিযুক্ত কোন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ শাস্তি ২ লাখ টাকা জরিমানা করতে পারে। এই ২ লাখ টাকা জরিমানা করলে অভিযোগকারী পাবে ৫০ হাজার টাকা। তাহলে যে ভোক্তার ১০ লাখ বা ২০ লাখ টাকার অভিযোগ রয়েছে তার ক্ষেত্রে কাঙ্ক্ষিত জরিমানা হয় না। এছাড়া ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তরের আইন অনুযায়ী অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিতে পারে। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন আইনের সংকীর্ণ সীমানা প্রাচীরের জন্য সব প্রতারণার কাঙ্ক্ষিত বিচার সম্ভব হচ্ছে।
ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বাবলু কুমার সাহা বলেন, আমাদের সীমাবদ্ধতা আছে। প্রতিটি আইনের একটা সীমানাপ্রাচীর আছে। আমাদের আইনে আছে—এ ধরনের ঘটনায় সর্বোচ্চ শাস্তি ২ লাখ টাকা জরিমানা। আরেকটা কাজ আমরা করতে পারি, সেটা হলো যারা এগুলো করছে, তাদের প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া। আমাদের আইনে এতটুকুই আছে। ভোক্তাদের উদ্দেশে আমার কথা হলো, দেশে প্রচলিত আরও অনেক বড় বড় আইন আছে। আপনারা দয়া করে ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মগুলো দেখে বুঝে-শুনে তারপর ওদের থেকে পণ্য অর্ডার করুন।
সূত্র জানায়, এখন এই আইনটা সময়োপযোগী করার প্রক্রিয়া চলছে। আইনটা একবার ক্যাবিনেটে গেছে। ক্যাবিনেট তাদের পর্যবেক্ষণ দেওয়ার পর সেটা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এটা দেখে আবার ক্যাবিনেটে পাঠাবে।
তবে ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কাজ আরও বেগবান না হওয়ার জন্য জনবল কাঠামো সংকটও দায়ী বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। তারা বলেন, সারা বাংলাদেশে আমাদের লোকবল মাত্র ২৪০ জন। কর্মকর্তা আছেন ৮৫ জন। ৮৫ জন কর্মকর্তা দিয়ে ১৮ কোটি মানুষকে সেবা দেওয়া কঠিন।
বাবলু কুমার সাহা বলেন, অর্ধেক দামে পণ্য দেওয়ার নামে ক্রেতাদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছে। যে পণ্যগুলোর তারা উৎপাদক না, সেটা কীভাবে তারা অর্ধেক মূল্যে দেবে, এ বিষয়টা ক্রেতার উচিত ভেবে দেখে তারপর টাকাটা দেওয়া। মানুষ ২০ লাখ, ৫০ লাখ, কেউ আবার ১ কোটি টাকা দিয়েছে। এরা কি ভোক্তা, নাকি ব্যবসায়ী? একটা মানুষের কয়টা মোটরসাইকেল দরকার? আমি দেখলাম, যাঁরা অভিযোগ করছেন, ৯৯ শতাংশেরই মোটরসাইকেল অর্ডার করা। যুবক, ডেসটিনির ঘটনা আমাদের জানা। ইতিহাস থেকে তো মানুষ শিক্ষা নেয়। তাহলে আমরা কেন শিক্ষা নিচ্ছি না?
আরকে//
আরও পড়ুন