স্বল্পোন্নত দেশ হওয়ার পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবেলায় নানামুখি কার্যক্রম
প্রকাশিত : ১৭:৫৯, ১৭ অক্টোবর ২০২১ | আপডেট: ১৮:০০, ১৭ অক্টোবর ২০২১
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্সী বলেছেন, স্বল্পোন্নত দেশ হতে বাংলাদেশের উত্তরণে পরবর্তী সময়ে আমরা অনেক সুবিধা প্রাপ্তি হতে বঞ্চিত হবো, সে পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমাদেরকে এখনই উদ্যোগী হতে হবে এবং এ লক্ষে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে সম্ভাব্য দেশগুলোর সঙ্গে এফটিএ, পিটিএ স্বাক্ষরসহ নানাবিধ কার্যক্রম হাতে নিয়েছে।
রোববার (১৭ অক্টোবর) মতিঝিল ঢাকা চেম্বার আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী এই আহ্বান জানান। এ সময় বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ এবং ঢাকা চেম্বারের সভাপতি রিজওয়ান রাহমান উপস্থিত ছিলেন।
দেশ বিনিয়োগের জন্য প্রস্তুত আছে জানিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্সী বলেন, বাংলাদেশ তৈরি হয়ে আছে। আমরা তৈরি আছি। আমরা তোমাদের (বিদেশি) বিনিয়োগের আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। সেই লক্ষে কাজ করে যাচ্ছি।
টিপু মুন্সী বলেন, বাণিজ্যমন্ত্রী হিসেবে আমার একটা কাজ, তা হলো দেশে দেশে ঘুরে বেড়ানো এবং একটি কথা বলা— আস, দেখে যাও বাংলাদেশকে। যে বাংলাদেশের ধারনা তোমাদের ছিল, তা এখন নেই।
তোমরা যা দেখবে তাই সত্যি। এই দেশ তৈরি হয়ে আছে। আমরা তৈরি হয়ে আছি। আমরা আমন্ত্রণ জানাচ্ছি- তোমরা বিনিয়োগ করবে ও সেই লক্ষে কাজ করে যাচ্ছি।
ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে বলবো— আপনাদের শুধু নিজেদের চলার দায়িত্ব না, এই দেশটাকে সঙ্গে করে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া; কর্মসংস্থান তৈরি করা। আপনারা জানেন আমাদের জনসংখ্যার যে সুবিধা রয়েছে, তা কাজে লাগাতে হবে। আমাদের শ্রমিকরা বিশ্বের অনেক দেশের থেকে ভালো এবং দক্ষ।
তিনি আশা প্রকাশ করেন, এ বাণিজ্য সম্মেলন উল্লেখযোগ্য সংখ্যক দেশি-বিদেশি উদ্যোক্তাদের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপনে সক্ষম হবে, যা আমাদের অর্থনীতিকে আরও শক্তিশালী করবে।
টিপু মুন্সী বলেন, আমাদের রপ্তানিখাত বেশিমাত্রায় তৈরি পোশাক নির্ভর। এখন সময় এসেছে অন্যান্য খাতগুলোকে নিয়ে কাজ করা এবং বাণিজ্য সম্মেলনে সম্ভাবনাময় ৯টি খাতের ওপর আলোকপাত করা হবে।
বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, আয়োজিতব্য বাণিজ্য সম্মেলনটি সরকার ও বেসরকারিখাতের সমন্বয়ের একটি উজ্জ্বল উদাহরণ, যার মাধ্যমে ৫টি মহাদেশের সর্বোচ্চ সংখ্যক উদ্যোক্তাবৃন্দকে বিটুবি সেশনে অংশগ্রহণের সুযোগ তৈরি করা হয়েছে।
তিনি বলেন, এ সম্মেলনের মাধ্যমে বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের রপ্তানি খাতের সক্ষমতা তুলে ধরা হবে, যার মাধ্যমে আরও বেশি হারে বিনিয়োগ আকর্ষণ সম্ভব হবে।
ডিসিসিআই’র সভাপতি রিজওয়ান রাহমান আয়োজিতব্য বাণিজ্য সম্মেলনের সার্বিক দিক তুলে ধরে বলেন, অবকাঠামো (ফিজিক্যাল, লজিস্টিক অ্যান্ড এনার্জি), আইটি/আইটিইএস এবং ফিনটেক, লেদারগুডস্, ফার্মাসিউটিক্যাল, অটোমোটিভ অ্যান্ড লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং, প্লাস্টিক পণ্য, এগ্রো অ্যান্ড ফুড প্রসেসিং, জুট অ্যান্ড টেক্সটাইল, এফএমসিজি অ্যান্ড রিটেইল বিজনেস প্রভৃতি খাতে বাংলাদেশের সম্ভাবনা ও করণীয় সম্পর্কে বাণিজ্য সম্মেলনে আলোকপাত করা হবে।
তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে আরও বলেন, এ বাণিজ্য সম্মেলন উপলক্ষে বাংলাদেশসহ বিশ্বের ৩৮টি দেশের সর্বমোট ৫৫২টি কোম্পানি সপ্তাহব্যাপী ৪৫০টি বিটুবি’তে অংশগ্রহণ করবে। যার মাধ্যমে নতুন বিনিয়োগ ও দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে।
এ ছাড়াও সম্মেলনে ‘বাংলাদেশ ও ইউরোপের অর্থনীতি : নতুন নীতি কাঠামো’, ‘এলডিসি হতে বাংলাদেশের উত্তরণ ও প্রস্তুতি’, ‘মধ্যপ্রাচ্য ও বাংলাদেশের মধ্যকার অর্থনৈতিক সহযোগিতা’, ‘এশিয়া-প্যাসিফিক ও বাংলাদেশ : অর্থনৈতিক সম্ভাবনা’, ‘বাংলাদেশ ও আফ্রিকার মধ্যকার বাণিজ্য এবং বিনিয়োগ সহযোগিতা : নতুন দিগন্তের সম্ভাবনা’ এবং ‘বাংলাদেশের অবকাঠামো খাতে দীর্ঘমেয়াদী অর্থায়নে সহায়ক ঋণ প্রক্রিয়া’ শীর্ষক ৬টি ওয়েবিনার আয়োজন করা হবে।
যেখানে সংশ্লিষ্ট খাতের দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞবৃন্দ অংশগ্রহণ করবেন। ঢাকা চেম্বারের সভাপতি বলেন, ভার্চুয়াল বাণিজ্য সম্মেলনটি বিদেশি বিনিয়োগকারী ও উদ্যোক্তাদের নিকট কোভিড মহামারিকালেও ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগে বাংলাদেশের প্রস্তুতির বিষয়সমূহ তুলে ধরা হবে।
আরকে//
আরও পড়ুন