ঢাকা, মঙ্গলবার   ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪

খারাপ সময়ের মুখে বিশ্ব অর্থনীতি: বিশ্ব ব্যাংক 

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৪:১৯, ১২ জানুয়ারি ২০২২ | আপডেট: ১৪:২১, ১২ জানুয়ারি ২০২২

বিশ্ব অর্থনীতি একটি ভয়াবহ খারাপ সময়ের মুখোমুখি হতে চলেছে বলে সতর্ক করেছে বিশ্ব ব্যাংক। 

এর কারণ ব্যাখ্যায় বিশ্ব ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ডেভিড ম্যালপাস বলছেন, করোনাভাইরাস মহামারীর ধাক্কা দিন দিন বড় আকার ধারণ করছে, বিশেষ করে দরিদ্র দেশগুলোতে। 

বিশ্ব ব্যাংকের সর্বশেষ পূর্বাভাস বলছে, বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি গেল বছরের চেয়ে এই বছর কমে যাবে; ২০২১ সালে যেটি ৫.৫ শতাংশ ছিল সেটি এই বছরে ৪.১ শতাংশ হবে বলে ধারণা বিশ্ব ব্যাংকের।

এর ফলে দেশে দেশে ভাইরাসের ঝুঁকি কমানোর ওপর প্রভাব যেমন ফেলছে, তেমনি সরকারি সহায়তা বন্ধ হওয়া এবং চাহিদা কমানোর প্রবণতাকে ফিরেয়ে আনছে।      

ডেভিড ম্যালপাসের ভাষ্য, তার সবচেয়ে বড় উদ্বেগের জায়গা হল এটি বিশ্বে বিভিন্ন রাষ্ট্রের মধ্যে বৈষম্য বাড়াচ্ছে। 

প্রবৃদ্ধি কমার ফলে বিশ্ব এমন একটি প্রক্রিয়ার মধ্যে পড়ে যাবে যাতে বৈষম্য বাড়বেই। 

এই পরিস্থিতিতে মূদ্রাস্ফীতির বিরুদ্ধে লড়াই করতে গিয়ে অর্থনৈতিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়বে দরিদ্র দেশগুলো। 

২০২৩ সালের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপের বিভিন্ন দেশ এবং জাপানের মত শক্ত অর্থনীতির দেশগুলো মহামারীর আঘাত থেকে ঘুরে দাঁড়াতে সক্ষম হবে, এমনটাই মনে করছে বিশ্ব ব্যাংক। 

তবে উন্নয়নশীল অর্থাৎ দরিদ্র দেশগুলো এই সঙ্কট কাটিয়ে ওঠা তো দূরের কথা, বরং পিছিয়ে পড়বে অনেকটাই। সংস্থাটির মতে কোভিড পরিস্থিতির আগের তুলনায় এসব দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি চার শতাংশ পর্যন্ত কমে যেতে পারে। 

ধনী দেশগুলোর বিভিন্ন কর্মসূচিই দরিদ্র দেশে মূদ্রাস্ফীতি বাড়াচ্ছে, যার কারণে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে বৈষম্যও বাড়ছে বলে মনে করছেন ম্যালপাস। 

যদিও যুক্তরাষ্ট্রসহ অনেক দেশই এখন মূল্যবৃদ্ধির লাগাম টেনে ধরতে সুদের হার বাড়ানোর চিন্তা করছে। 

এছাড়া বলা হয়েছে বিশ্বব্যাপী মূল্যস্ফীতির হার ২০০৮ সালের পর এ বছরই সর্বোচ্চ।

ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান, অর্থাৎ ব্যাংকগুলো সতর্ক করেছে, পণ্য সরবরাহ ব্যবস্থায় বাধা এবং প্রণোদনা কমানোর ফলে ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে। 

ব্যাংকগুলো জুনে প্রবৃদ্ধি কমার যে পূর্বাভাস দিয়েছিল, তা ২০২১ সালের মাঝামাঝি নাগাদ আরো বেড়েছে। আর এর কারণ হচ্ছে করোনাভাইরাসের ডেল্টা এবং ওমিক্রন ধরনের সংক্রম বৃদ্ধি। 

আশঙ্কা করা হচ্ছে, প্রবৃদ্ধির এই হার এ বছর আরো কমবে এবং ২০২৩ সালে বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি তিন দশমিক দুই শতাংশ হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। 

ম্যালপাস বলেন, “বাস্তবতা হল, কোভিড এবং শাটডাউন এখনও বিশাল ক্ষতির মুখে ফেলে দিচ্ছে এবং বিশেষ করে এটি (ক্ষতি) দরিদ্র দেশগুলোর ক্ষেত্রেই সত্যি। এটি ভয়ঙ্কর একটি চিত্র হতে পারে।”

বিশ্ব ব্যাংক বলছে, চীন, যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় অঞ্চলের প্রবৃদ্ধি কমার কারণেই বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধির গতিও ধীর হচ্ছে। 

গেল বছর চীন প্রবৃদ্ধি আট শতাংশ থেকে কমে পাঁচ দশমিক এক শতাংশ অর্জিত হয়েছে। আর যুক্তরাষ্ট্রে ২০২১ সালে পাঁচ দশমিক ছয় শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন হলেও এ বছর তা তিন দশমিক সাত শতাংশ হতে পারে আভাস দেওয়া হয়েছে।     

অন্যদিকে ইউরো অঞ্চলের প্রবৃদ্ধির হার পাঁচ দশমিক দুই শতাংশ থেকে কমে এ বছর চার দশমিক দুই শতাংশ হতে পারে বলে জানিয়েছে বিশ্ব ব্যাংক।  

প্রবৃদ্ধির ধীরগতির মধ্যে কিছুটা হলেও ভালো অবস্থানে রয়েছে মহামারীতে বিপর্যয়স্ত ভারত। এ বছর দেশটিতে আট দশমিক তিন থেকে আট দশমিক সাত শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হতে পারে বলে আভাস দিয়েছে বিশ্ব ব্যাংক।  

সূত্র: বিবিসি

এসবি/ এএইচএস


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি