কমতে ও বাড়তে পারে যেসব পণ্যের দাম
প্রকাশিত : ১৩:১৯, ৯ জুন ২০২২ | আপডেট: ১৫:৪০, ৯ জুন ২০২২
জাতীয় সংসদে ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপন করবেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। সেই লক্ষ্যে সকাল সাড়ে ১১টায় তিনি ব্রিফকেস হাতে সংসদে পৌঁছান।
মহামারি করোনাভাইরাসের প্রভাব এবং ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধসহ নানা কারণে বিশ্ব অর্থনীতি অস্থির সময় পার করছে। আর এই অর্থনৈতিক অস্থিরতা এবং মূল্যস্ফীতির মতো চ্যালেঞ্জকে সামনে রেখেই অর্থমন্ত্রী ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য বাজেট পেশ করবেন। এবারের জাতীয় বাজেটের আকার ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকা।
এবারের বাজেটে বিভিন্ন ধরনের পণ্যে শুল্ক ও ভ্যাট ছাড়ের প্রস্তাবনা আসতে পারে। এতে অনেক পণ্যের দাম কমতে পারে। সেই সঙ্গে বাজেটে বিভিন্ন ধরনের পণ্যে শুল্ক ও কর আরোপের প্রস্তাবনা আসতে পারে। এতে অনেক পণ্যের দাম বাড়তে পারে।
বৃহস্পতিবার (৯ জুন) বিকেলে জাতীয় সংসদে স্বাধীন বাংলাদেশের ৫১তম বাজেটের মূল স্লোগান হতে যাচ্ছে ‘কোভিডের অভিঘাত কাটিয়ে উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় প্রত্যাবর্তন’। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে প্রস্তাবিত বাজেটে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যে বিভিন্ন সুবিধা দিচ্ছে, পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রা সুরক্ষায় বিলাসবহুল পণ্যে আমদানি নিরুৎসাহিত করছে।
দাম কমতে পারে যেসব পণ্যের
এখন কম্পিউটার সামগ্রীর মধ্যে ল্যাপটপ, ডেস্কটপ, প্রিন্টার ও অন্যান্য কম্পিউটার ও আইসিটি পণ্যে ৫ শতাংশ শুল্ক দিতে হয়। প্রস্তাবিত বাজেটে স্থানীয় শিল্পের বিকাশে ওই শুল্ক প্রত্যাহারের প্রস্তাব আসছে। অন্যদিকে, আমদানিকরা ওই সব পণ্যে ২০ শতাংশ শুল্ক দিতে হবে। ফলে স্থানীয় শিল্পে উৎপাদিত কম্পিউটার ও আইসিটি পণ্যের দাম কমতে পারে।
একই কারণে কমতে পারে স্থানীয় পর্যায়ে উৎপাদিত কৃষি যন্ত্রপাতি ও যন্ত্রপাতির সরঞ্জামের দাম। এছাড়া কৃষি উদ্যোক্তাদের জন্য বিশেষ কর সুবিধার প্রস্তাব আসতে আসছে বাজেটে।
ভ্যাট অব্যাহতির সুবিধা পাচ্ছে দেশীয় গাড়ি তৈরির শিল্প। ফলে মোটরগাড়ি তৈরিতে যন্ত্রপাতি ও যন্ত্রাংশের আমদানিতে শুল্ক ছাড়ের পাশাপাশি ৫ শতাংশ ভ্যাট অব্যাহতি প্রস্তাব আসতে পারে বাজেটে। ফলে দেশে তৈরি গাড়ি তুলনামূলক কম দামে মিলবে।
এছাড়া স্থানীয় উৎপাদিত মোবাইল হ্যান্ডসেট উৎপাদক প্রতিষ্ঠান বড় ধরনের শুল্ক ও ভ্যাট সুবিধা ভোগ করে আসছে। যেখানে আমদানি করা হ্যান্ডসেটের ওপর ৫৮ শতাংশ শুল্ক-কর প্রযোজ্য। সেখানে স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত ও অ্যাসেম্বলড হ্যান্ডসেটের জন্য কর দিতে হয় যথাক্রমে ১৩ ও ১৮ শতাংশ। প্রস্তাবিত বাজেটেও এই সুবিধা অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে সরকার। সে হিসেবে আমদানি কর মোবাইলের তুলনায় আগামী অর্থবছরের তুলনামূলক কম দামে ফিচার ফোন (বাটন ফোন) মিলতে পারে।
বাড়তে পারে যেসব পণ্যের দাম
অপরদিকে, বাজেটে আমদানিকরা বিলাসী পণ্য যেমন-বডি স্প্রে, প্রসাধনী পণ্য, জুস, প্যাকেটজাত খাদ্য ইত্যাদি ক্ষেত্রে আমদানিতে নতুন করে শুল্ক আরোপ হতে পারে। যদিও ইতোমধ্যে গত ২৩ মে এক প্রজ্ঞাপনে বিদেশি ফল, বিদেশি ফুল, ফার্নিচার ও কসমেটিকস জাতীয় প্রায় ১৩৫টি এইচএস কোডভুক্ত পণ্যের ওপর আমদানি পর্যায়ে বিদ্যমান ৩ শতাংশের পরিবর্তে ২০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক আরোপ করা হয়। প্রস্তাবিত বাজেটে ওই তালিকা আরও দীর্ঘ হতে পারে।
অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের কারণে এবারে বৃদ্ধি পেতে পারে তামাকজাত পণ্য। স্ল্যাব অনুসারে শুল্ক আরোপ হবে। এনবিআর সূত্রানুসারে সিগারেটের নিম্ন স্তরের তিনটি স্ল্যাবে বেশি দাম বাড়তে পারে।
অগ্রিম কর আরোপের কারণে দাম বাড়বে মদ জাতীয় পণ্যের। প্রস্তাবিত বাজেটে মদ আমদানিতে অগ্রিম কর ২০-২৫ শতাংশ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
দেশীয় পণ্য সুরক্ষায় শুল্ক আরোপে আমদানিকরা স্মার্ট মোবাইল ফোন দাম আরেক দফায় বৃদ্ধি পেতে পারে। সেক্ষেত্রে সুবিধা পাচ্ছে দেশীয় কোম্পানিগুলো।
দাম বাড়ার তালিকায় যুক্ত হচ্ছে বিলাসবহুল গাড়ি। ৪০০০ সিসি ওপরে বিলাসবহুল রিকন্ডিশন গাড়িতে সম্পূরক শুল্ক, নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক ও আগাম কর ও ভ্যাট মিলিয়ে কর প্রায় সাড়ে ৮০০ শতাংশে করভার রয়েছে। প্রস্তাবিত বাজেটে ওই করভার এক হাজার শতাংশ বা তার বেশি হতে পারে বলে জানা গেছে।
আমদানিকরা ফ্রিজ ও এসির দাম আরেক দফা বাড়তে পারে। দাম বাড়তে পারে আমদানিকরা সব ধরনের বিলাসবহুল হোম অ্যাপ্লায়েন্সের।
এসএ/
আরও পড়ুন