ঢাকা, বুধবার   ০৫ মার্চ ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

রিজার্ভ চুরি: যুক্তরাষ্ট্রে করা মামলার রায় বাংলাদেশের পক্ষে

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৭:১৩, ১৬ জানুয়ারি ২০২৩ | আপডেট: ১৯:৪৮, ১৬ জানুয়ারি ২০২৩

Ekushey Television Ltd.

ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক নিউইয়র্কে রক্ষিত বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের চুরি যাওয়া অর্থ উদ্ধারে যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে প্রতিপক্ষের করা মামলার রায় বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষে এসেছে। অর্থাৎ রিজার্ভ চুরির ঘটনায় আরসিবিসিসহ অভিযুক্ত ছয়জনের দায়ের করা মামলা খারিজ করে দিয়ে বাংলাদেশের পক্ষে রায় দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক সুপ্রিম কোর্ট (স্টেট কোর্ট)। ফলে রিজার্ভের অর্থ ফেরত পেতে বাংলাদেশের করা মামলা পরিচালনায় আর কোনো বাধা রইলো না। 

সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংকের ফাইন্যানসিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়েছে। 

সাইবার হ্যাকিং এর মাধ্যমে ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক নিউইয়র্কে রক্ষিত বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের হিসাব হতে চুরি যাওয়া অর্থ উদ্ধারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক সুপ্রিম কোর্ট (স্টেট কোর্ট) এ ফিলিপাইনের রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং কর্পোরেশন (আরসিবিসি) ও অন্যান্য ৬ জন বিবাদীর দায়েরকৃত মোশন টু ডিসমিস আবেদন গত ১৩ জানুয়ারি ২০২৩ তারিখে আদালত খারিজ করে দিয়েছে।

একই সাথে আদালত ফোরাম নন করইভেনিয়েনস বিষয়ে অন্যতম অভিযুক্ত কিম অং এর দায়ের করা মোশন টু ডিশমিশ আবেদনও খারিজ করে দিয়েছে। এর ফলে বাংলাদেশ ব্যাংকের রির্জাভের অর্থ চুরির সাথে জড়িত ফিলিপাইনের প্রতিষ্ঠান আরসিবিসিসহ অন্যান্য ১৮ ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে মামলা পরিচালনার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের এর আর কোন বাধা থাকলো না।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের হিসাব হতে অর্থ চুরির ঘটনা যুক্তরাষ্ট্রে সংঘটিত হয়েছে বিবেচনায় গত ৩১ জানুয়ারি ২০১১ তারিখে বাংলাদেশ ব্যাংক যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে আরসিবিসিসহ ২০ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে চুরিকৃত অর্থ উদ্ধারকল্পে একটি মামলা দায়ের করে।

উক্ত মামলা দায়েরের পর আরসিবিসিসহ ৬ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান মোশন টু ডিশমিশ আবেদন করে, অর্থাৎ বাংলাদেশ ব্যাংকের মামলা বাতিলের আবেদন করে। পরবর্তীতে বিভিন্ন আইনি প্রক্রিয়ার পর গত ২০ মার্চ ২০২০ তারিখে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল আদালত ফিলিপাইনের বিভিন্ন বিবাদী কর্তৃক করা আবেদনটিই খারিজ করে দেয়।  মামলাটি ফেডারেল কোর্টের পরিবর্তে স্টেট কোর্টে পরিচালনার নির্দেশনাও প্রদান করে।

উক্ত রায়ের প্রেক্ষিতে গত ২৭ মে ২০২০ তারিখে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক সুপ্রিম কোর্ট (মোট কোর্ট) এ আরসিবিসিসহ ফিলিপাইনের ২০ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। উক্ত মামলা দায়েরের পর ও বিবাদী Eastern Hawaii ও কিম অং ফেডারেল কোর্টের মতই এই কোর্টেও বাংলাদেশ ব্যাংকের করা মামলা বাতিলের আবেদন করে। বিবাদীপক্ষের উক্ত আবেদনের বিষয়ে গত ১৪ জুলাই ২০২১ তারিখ ও ১৪ অক্টোবর ২০২১ তারিখে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।

নিউইয়র্ক কাউন্টি সুপ্রীম কোর্ট ৮ এপ্রিল ২০২২ তারিখে আলোচ্য মামলার আংশিক রায়ে ব্লুমবেরি (Bloombery; Solaire), ইস্টার্ন হাওয়াই (Eastern Hawaii) এর  আবেদন আবেদন জুরিস্টিকশনাল গ্রাউন্ড (jurisdiction ground) এ গ্রহণ করে এবং অব্যাহতি প্রদান করে।

তবে কিম অং এর আবেদন খারিজ করে তাকে বাংলাদেশ ব্যাংকের কমপ্লেইন্ট (Complaint) এর জবাব প্রদান করার নির্দেশনা প্রদান করে। পরবর্তীতে ব্লুমবেরি (Bloombery;(Solaire) ও ইস্টার্ন হাওয়াই (Eastern Hawaii) কে মামলা হতে অব্যাহতি সংক্রান্ত রায়ের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ব্যাংক আপিল আবেদন করে, যা শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে।

সর্বশেষ গত ১৩ জানুয়ারি ২০২৩ তারিখে স্টেট কোর্ট ও অন্যান্য বিবাদীদের মোশন টু ডিশমিশ আবেদনের বিষয়ে উল্লিখিত রায় প্রদান করেছে। উল্লিখিত রায়ের মাধ্যমে বর্ণিত বিবাদীদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে জুরিস্টিকশনাল গ্রাউন্ড (Jurisdictional Ground) বাংলাদেশ ব্যাংকের মামলা পরিচালনায় আর কোন বাধা থাকলো না। আদালত তার রায়ে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছে যে, নিউইয়র্ক হতে বাংলাদেশ ব্যাংকের অর্থ চুরির ক্ষেত্রে আরসিবিসি'র উদ্দেশ্য প্রণোদিত জোগসাজস ইন্টারন্যাশনাল পার্টিসিপেশন (Intentional Participation) ছিলো। আদালত রায়ে আরো উল্লেখ করেছে যে, আরসিবিসি'র নিউইয়র্কের হিসাব ব্যবহার না হলে এবং ফিলিপাইনে আরসিবিসি অভিযুক্তদের সহযোগিতা না করলে ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক হতে উক্ত অর্থ অন্য কোথাও যাওয়ার সুযোগ ছিলো না।

এসবি/ 


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি