নেতিবাচক প্রভাব স্থলবন্দরে, বড় ঘাটতি রাজস্বে (ভিডিও)
প্রকাশিত : ১৩:১০, ২৯ জানুয়ারি ২০২৩
ডলার সংকটের প্রভাব পড়েছে স্থলবন্দরে। কমছে আমদানি; রাজস্ব আদায়ে তৈরি হচ্ছে বড় ঘাটতি। অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে হিলি বন্দরেই রাজস্ব ঘাটতি প্রায় ৮১ কোটি টাকা। আমদানি কমেছে আখাউড়া বন্দর দিয়েও।
রিজার্ভের ওপর চাপ কমাতে আমদানিতে লাগাম টানার চেষ্টা করছে সরকার। বিলাসী পণ্য-দ্রব্যসহ অনেক পণ্যের এলসি খোলায় কড়াকড়ি আরোপ করা হচ্ছে। যার নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে স্থলবন্দরে। আমদানি কমায় বেশিরভাগ স্থলবন্দরের রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন না হওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
চলতি অর্থবছরের প্রথম ৬ মাসে শুধু হিলি স্থলবন্দরের রাজস্ব ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৮০ কোটি ৮৯ লাখ টাকা। এসময়ে ২৯৪ কোটি ৬ লাখ টাকা লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে আদায় হয়েছে ২১৩ কোটি ১৭ লাখ টাকা।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বৈশ্বিক করোনা মহামারি, ইউক্রেন যুদ্ধ এবং পরবর্তীতে ডলার সংকটের কারণে এলসি খোলা ব্যাহত হচ্ছে। এতে হিলি বন্দর দিয়ে পাথরসহ বেশি শুল্কযুক্ত পণ্যের আমদানি কমেছে।
হিলি স্থলবন্দরের আমদানিকারক ও সিআ্যন্ডএফ এজেন্ট ব্যবসায়ীরা জানান, সেই পণ্যগুলো আমরা সচরাচর নিয়ে আসতে পারছিনা। ব্যাংক বলছে, সংকট এখনও কাটেনি।
হিলি স্থলবন্দর জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন বলেন, “যেখানে ১৮০-২২০ ট্রাক প্রতিদিন হিলি বন্দরে প্রবেশ করতো। বর্তমানে সেটা ৭০-১০০ গাড়িতে এসে পৌঁছেছে।”
এদিকে, আমদানি ব্যাপকভাবে কমেছে আখাউড়া বন্দর দিয়েও। ভারতের নিষেধাজ্ঞায় গেল বছরের ১২ মে’র পর বন্ধ হয়ে যায় গম আমদানি। সর্বশেষ গত নভেম্বরে ভারত থেকে চূর্ণপাথর আসে। অন্য পণ্যে মুনাফা না থাকায় আমদানি বন্ধ করে দেন ব্যবসায়ীরা। ভাটা পড়ে বন্দর কর্তৃপক্ষের আয়ে।
২০২১-২২ অর্থবছরে আখাউড়া স্থলবন্দর কাস্টমস ৭ কোটি ৬১ লাখ ৬৯ হাজার ৪১০ টাকার রাজস্ব আদায় করে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে ডিসেম্বর পর্যন্ত রাজস্ব আদায় হয়েছে মাত্র ৫ লাখ ১৬ হাজার ১২৩ টাকা।
তবে ব্যবসায়ীরা আশা করছেন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তে বন্দরে গতি আনবে। আখাউড়া দিয়ে ভুটান থেকে সুতা ও আলু বাদে সব পণ্য আমদানির অনুমতি দিয়েছে রাজস্ব বোর্ড।
আখাউড়া স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ সুপারিন্টেনডেন্ট মো. সামাউল ইসলাম বলেন, “জানুয়ারিতে একটা এসআরও পাঠিয়েছে এনবিআর থেকে। সেখানে বলা হয়েছে ভুটান থেকে মোটামুটিভাবে সকল পণ্য আমদানি যোগ্য।”
এছাড়া ভুটান থেকে পণ্য আমদানিতে শুল্ক কম হওয়ায় পাথর এবং বিভিন্ন ফল আনার কথা ভাবছেন ব্যবসায়ীরা।
আখাউড়া স্থলবন্দর আমদানি-রপ্তানিকারক অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, “এই বন্দর দিয়ে সরকার যেমন শত কোটি টাকা রাজস্ব পাবে তেমনি কর্মসংস্থানের ব্যাপক সুযোগ হবে।”
দেশের সার্বিক আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য পুরোপুরি স্বাভাবিক না হলে স্থলবন্দরগুলোর রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য অর্জন কঠিন হবে বলছেন সংশ্লিষ্টরা।
এএইচ
আরও পড়ুন