ঢাকা, বুধবার   ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪

শরীয়াভিত্তিক ৫ ব্যাংকের লেনদেন বন্ধ হওয়ার কোনো কারণ নেই

তৌহিদুর রহমান, একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৮:১২, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৩ | আপডেট: ২১:৫৮, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৩

শরীয়াভিত্তিক ৫টি ব্যাংকের লেনদেন বন্ধ হওয়ার কোনো কারণ নেই বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কেন্দ্রিয় ব্যাংক মুখপাত্র জানান, প্রায় সব সূচকেই অন্য অনেক ব্যাংকের তুলনায় ইসলামী ব্যাংকগুলোর অবস্থান ভালো। কিছু গণমাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়মিত তদারকিমূলক চিঠিকে ভুলভাবে উপস্থাপন করেছে বলে জানান তিনি। এদিকে, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকে দেয়া ঋণের অর্থ যোগ হওয়ায় বেড়েছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। 

সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি চিঠিকে কেন্দ্র করে ৫টি ইসলামী ব্যাংক নিয়ে দেশের কয়েকটি গণমাধ্যম সংবাদ প্রকাশ করে। বলা হয়, এসব ব্যাংককে বিভিন্ন ক্লিয়ারিং প্ল্যাটফর্ম থেকে বিচ্ছিন্ন করা হবে। 

তবে সংবাদ সম্মেলনে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র মেজবাউল হক জানান, বাংলাদেশ ব্যাংক এধরনের কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। বলেন, যে চিঠির কথা বলা হচ্ছে, সব ব্যাংককেই এ ধরনের চিঠি নিয়মিত দিয়ে থাকে কেন্দ্রিয় ব্যাংক। এটি বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়মিত কাজের একটি অংশ। গ্রাহকের অর্থের লেনদেনের সাথে ব্যাংকের চলতি হিসাব ঋণাত্বক বা উদ্বৃত্ত থাকার কোনো সম্পর্ক নেই। এছাড়া চলতি হিসাব বিষয়ক যে চিঠিটির ভুল ব্যাখ্যা এসেছে, তার ইস্যুকারি বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল শাখা। 

মেজবাউল হক বলেন, “ইসলামী ব্যাংক যদি চায়ও যে তার লিকুইডিটি মেইনটেইন করতে হবে, তাহলে পুরোটাই তাকে ক্যাশে মেইনটেইন করতে হবে, কারণ তার কাছে এভেইলেবল সিকিউরিটি নেই। এই জায়গায় একটা রিয়্যাল ডিফিকাল্টি ব্যাংক গুলো ফেস করছে।“ 

সব ইসলামী ব্যাংকগুলোর অবস্থান ভালো বলেও জানান তিনি। রেমিট্যান্সের ৫২ শতাংশই আসে শরীয়াভিত্তিক ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে। অর্থের নিরাপত্তা নিয়ে গ্রাহকদের উদ্বিগ্ন হওয়ার কারণ নেই, বলছে কেন্দ্রিয় ব্যাংক।

মেজবাউল হক বলেন, “ব্যাংকের লিকুইডিটি ম্যানেজমেন্টের একটা পার্ট এটা। যার জন্য টাইমিং দেখেন, টাইমিংগুলো  একবারে সেট করা সেভাবেই। যাতে কোভাবেই এটা ফেইল না করে। সুতরাং এই জায়গায় আমাদের মতিঝিল অফিস কিছু ব্যাংককে অবহিত করেছে তোমার শর্টফল আছে সেটা তুমি কাভার কর। আর এই জায়গাটাতেই একটা জিনিস ভুলভাবে উপস্থাপিত হয়ে গেছে, যে আপনারা বলেছেন তাদের লেনদেন বাদ করা হবে। তবে বিষয়টা এমন নয়, আমরা কিন্তু বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন চিঠিতে এভাবে বলি, অন্যথায় আপনার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর এটি কিন্তু শুধু একটা ভবিষ্যৎ সতর্কতা মাত্র। আমরা আসলে এ ধরনের কোনো সিদ্ধান্ত নেইনি। লিকুইডিটি ম্যানেজমেন্টও আমদের একটা চলমান প্রক্রিয়া এবং ব্যাংক গুলো এই প্রক্রিয়ার মধ্যেই থাকবে।”

এদিকে, আইএমএফ ও এডিবির অর্থ যোগ হওয়ায় বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়ে ২৫ দশমিক ৮২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে বলে জানায় বাংলাদেশ ব্যাংক। চলতি মাসে রিজার্ভ আরও বাড়বে বলে জানান মুখপাত্র। 

তিনি বলেন, ”আমরা যদি পার্সেন্টেজ হিসাব করি, মার্কেটের টোটাল ২২ পার্সেন্ট আমানত আছে ইসলামী ব্যাংক গুলোর কাছে এবং ২৬ পার্সেন্ট ঋণ দেওয়া আছে ইসলামী ব্যাংক গুলোর কাছে। আমরা যদি পারফরমেন্স হিসাব করি, বিগত নয় মাসে মুনাফা অর্জন হয়েছে ৮ হাজার ২৬১ কোটি টাকা, এরমধ্যে ইসলামী ব্যাংক গুলোর মুনাফা ১৬শ ৯১ কোটি টাকা। ব্যাংকিং সেক্টরের নন পারফরমিং লোনের রেশিও ওভারঅল ৯.৯৩ শতাংশ। এরমধ্যে ইসলামী ব্যাংক গুলোর এই রেট ৪.৭৩ শতাংশ। বাংলাদেশ ব্যাংক মূল্যস্ফীতিকে নম্বর ওয়ান চ্যালেঞ্জ হিসাবে দেখছে। মূল্যস্ফীতি টা যাতে কম হয় সেই দিকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।”

মূল্যষ্ফীতি অর্থনীতি প্রধান চ্যালেঞ্জ মন্তব্য করেন এটি নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ ব্যাংক কাজ করছে বলেও জানিয়েছেন কেন্দ্রিয় ব্যাংক মুখপাত্র। 

এসবি/ 
 


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি