ব্যাংক নির্বাহীদের কাছে খেলাপি ঋণ কমানোর পরিকল্পনা চায় মন্ত্রণালয়
প্রকাশিত : ১৮:১৩, ২৬ ডিসেম্বর ২০১৮
ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ অস্বাভাবিক হারে বেড়ে গেছে। ঋণের প্রায় ৫৪ শতাংশ রয়েছে সরকারি ব্যাংকগুলোতে। বিভিন্ন অনিয়ম করে দেওয়া ঋণের বড় অংশ আদায় না হওয়ায় খেলাপি ঋণ এত বেশি হয়েছে। এ নিয়ে রাষ্ট্রীয় মালিকানার বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর এমডিদের কাছে খেলাপি ঋণ কমানোর সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা চেয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়।
সম্প্রতি সিপিডি আয়োজিত এক সংলাপে খেলাপি ঋণসহ ব্যাংক খাতের বিভিন্ন অনিয়ম নিয়ে আলোচনা হয়। সেখানে ব্যাংক খাতের অবস্থা এখন সবচেয়ে খারাপ বলে উল্লেখ করা হয়। এ পরিস্থিতিতে খেলাপি ঋণ কমানোর পরিকল্পনা চেয়েছে মন্ত্রণালয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, গত সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রাষ্ট্রীয় মালিকানার ছয় বাণিজ্যিক ব্যাংকের খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪৮ হাজার ৮০ কোটি টাকা। পুরো ব্যাংক খাতের মোট খেলাপি ঋণের যা প্রায় অর্ধেক; আর এসব ব্যাংকের বিতরণ করা ঋণের ৩১ দশমিক ২৩ শতাংশ। সরকারি দুই বিশেষায়িত ব্যাংকের খেলাপি ঋণ রয়েছে আরও পাঁচ হাজার ২৪১ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে সরকারি আট ব্যাংকে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫৩ হাজার ৩২২ কোটি টাকা বা মোট খেলাপি ঋণের ৫৩ দশমিক ৬৬ শতাংশ। ফলে ব্যাংক খাতের খেলাপি ঋণের বিষয়টি সামনে এলেই সমালোচনায় পড়ে সরকারি ব্যাংক।
সংশ্নিষ্টরা জানান, ব্যাংক খাতে আলোচিত ঋণ জলিয়াতির অধিকাংশই ঘটেছে রাষ্ট্রীয় মালিকানার ব্যাংকে। ফলে এসব ব্যাংকে খেলাপি ঋণও বেশি। ঋণ অনিয়মের কারণে সাম্প্রতিক সময়ে আলোচিত জনতা ব্যাংক থেকে ক্রিসেন্ট ও এননটেক্স গ্রুপ বিভিন্ন অনিয়মের মাধ্যমে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা নিয়েছে। এ ঋণের বড় অংশই এখন খেলাপি হয়ে গেছে। পুরো ব্যাংক খাতে এখন সবচেয়ে বেশি পরিমাণ খেলাপি ঋণ জনতা ব্যাংকে। আগের সব রেকর্ড ভেঙে সেপ্টেম্বর শেষে ব্যাংকটির খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৪ হাজার ৩৭৬ কোটি টাকা। খেলাপি ঋণে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে সোনালী ব্যাংক। ব্যাংকটির ১২ হাজার ৭৭৮ কোটি টাকার ঋণ এখন খেলাপি। সোনালীর এ খেলাপি ঋণের মধ্যে হলমার্কসহ ছয়টি প্রতিষ্ঠানে জালিয়াতির ঘটনায় পাঁচ হাজার কোটি টাকার বেশি আটকে আছে। বিসমিল্লাহ গ্রুপ জনতা ব্যাংকসহ কয়েকটি ব্যাংক থেকে জালিয়াতি করে নিয়ে গেছে ১২শ` কোটি টাকা। বেসিক ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল হাই বাচ্চুর সময়ে প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার কোটি টাকার ঋণে বিভিন্ন পর্যায়ে অনিয়ম হয়। খেলাপি ঋণের পরিমাণে ব্যাংকটির অবস্থান এখন তৃতীয়। গত সেপ্টেম্বরে বেসিকের ৯ হাজার ১৪৩ কোটি টাকার ঋণ খেলাপিতে পরিণত হয়েছে। সরকারি ব্যাংকের বাইরে ফারমার্স ব্যাংকে বড় অনিয়মের ঘটনা ঘটে।
আরকে//
আরও পড়ুন