প্রয়োজনে ভর্তুকি দিয়ে চাল রফতানি হবে: অর্থমন্ত্রী
প্রকাশিত : ২১:২৯, ২৪ মে ২০১৯
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, চাল রফাতানির দিকেও আমাদের জোর দিতে হবে। প্রয়োজনে ভর্তুকি দিয়ে হলেও চাল রফতানির পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
শুক্রবার (২৪ মে) কুমিল্লার লালমাই উপজেলার বাগমারা উচ্চবিদ্যালয় মাঠে লালমাই উপজেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এসব কথা বলেন।
ধানের দাম নিয়ে সমস্যার বিষয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, একটা সময় ছিল যখন সারা বিশ্বে খাদ্যের জন্য হাহাকার ছিলো। কিন্তু বর্তমানে সারা বিশ্বেই খাদ্যের উৎপাদন অনেকগুণ বেড়ে গেছে। আল্লাহর রহমতে এ বছর আমরা অনেক বেশি খাদ্যশস্য উৎপাদন করতে পেরেছি। আমাদের যেমন বেশি উৎপাদন হয়েছে, আশপাশের দেশেও খাদ্যশস্যের উৎপাদন অনেক বেড়েছে। বাইরে যদি চাহিদা থাকতো, তাহলে আমরা রফতানি করতে পারতাম। বাইরেও সেভাবে চাহিদা নেই। চলতি বছর ধান উৎপাদন বেশি হয়েছে। কিন্তু এখন চালের দাম আন্তর্জাতিক বাজারেও কম। যার কারণে ধানের দাম নিয়ে কিছু সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে।
তিনি বলেন, আমাদের কৃষককে বাঁচাতে হবে। সরকারের পক্ষ থেকে চাল আমদানি পুরোপুরি বন্ধ করতে না পারলেও, নিরুৎসাহিত করে সীমিতকরণ করতে পারি। ইতোমধ্যে সে লক্ষ্যে আমরা চাল আমদানি নিরুত্সাহিত করতে বিদ্যমান শুল্ক ২৮ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৫৫ শতাংশে উন্নীত করেছি। এ সিদ্ধান্তে চাল আমদানি নিরুত্সাহিত হওয়ার মাধ্যমে দেশের কৃষকরা আর্থিক ক্ষতির হাত থেকে কিছুটা রেহাই পাবেন।
আগামী বাজেট প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেন, বাজেট যেকোনো দেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ। একটি বার্ষিক দলিল যাতে রাষ্ট্রের আয়-ব্যয়ের পরিকল্পনা থাকে। এবারের বাজেটটি হবে একটি স্মার্ট বাজেট। বাজেট বক্তব্যের আকার গতানুগতিক বিশাল সাইজের থাকছে না। হবে সংক্ষিপ্ত এবং টু-দ্য পয়েন্ট। তাই বলে বাজেটের আকার ছোট হবে না বরং যেকোনো সময়ের তুলনায় এটি হবে রেকর্ড বাজেট।
তিনি বলেন, ২০১৯-২০ অর্থবছরের নতুন বাজেটে থাকবে নতুন নতুন উদ্যোগ। আগামী বাজেটে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শততম জন্মবার্ষিকী পালনের প্রতিফলন থাকবে। তবে বেশি মনোযোগ থাকবে নির্বাচনী ইশতেহার অনুযায়ী, ‘আমার গ্রাম আমার শহর’ ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির দিকে। ইশতেহারের ঘোষণা অনুযায়ী, গ্রামকে পরিকল্পিতভাবে গড়ে তোলা হবে। যেখানে ইন্টারনেট, বিদ্যুৎ, গ্যাসসহ সবধরনের নাগরিক সুবিধা পৌঁছে দেওয়া হবে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, আপনারা জানেন, কুমিল্লা থেকে ঢাকার যাতায়াত সময় পৌনে দুই ঘণ্টার মতো হলেও কখনো কখনো এ যাত্রায় নয় থেকে দশ ঘণ্টাও লেগে যায়। এর কারণ ছিলো- অতিরিক্ত যানবাহন আর চার লেনের ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে দুই লেনের মেঘনা ও গোমতী সেতুর নির্মাণ কাজ। অবশেষে এ ভোগান্তির অবসান করতে শনিবার (২৫ মে) মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ায় মেঘনা নদীর ওপর নির্মিত দ্বিতীয় মেঘনা সেতু ও কুমিল্লার দাউদকান্দিতে গোমতী নদীর ওপর নির্মিত দ্বিতীয় গোমতী সেতু খুলে দেওয়া হবে। যেটি কুমিল্লাবাসীর জন্য তথা দেশের ‘লাইফ লাইন’ হিসেবে পরিচিত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে চলাচলকারী সবার জন্য অত্যন্ত সুখবর। আর এ সেতু দু’টি খুলে দিলে ঈদুল ফিতরে ঘরমুখী মানুষের যাত্রা অনেকটা যানজটমুক্ত এবং স্বস্তিদায়ক হবে আশা করা যায়। আর আমাদের অর্থনীতিকে করবে আরো গতিশীল।
কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আব্দুল হামিদের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- লালমাই উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল মালেক বি কম, সদর দক্ষিণ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান গোলাম সারোয়ার এবং আওয়ামী লীগ, কৃষকলীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ছাত্রলীগসহ দলীয় সব সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
আরকে//
আরও পড়ুন