ঢাকা, সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪

বাংলাদেশ ও ফিলিপাইনের মধ্যকার বাণিজ্য সম্প্রসারণে সেমিনার

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৯:৫১, ২ সেপ্টেম্বর ২০১৯ | আপডেট: ১৯:৫১, ২ সেপ্টেম্বর ২০১৯

বাংলাদেশ ও ফিলিপাইনের মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত ‘বাংলাদেশ-ফিলিপাইন বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্ভাবনা’ শীর্ষক সেমিনার ডিসিসিআইতে অনুষ্ঠিত হয়।

বাংলাদেশ ফিলিপাইন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (বিপিসিসিআই)-এর সহযোগিতায় আয়োজিত এ সেমিনারে ফিলিপাইনে ডিপার্টমেন্ট অফ ট্রেড অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি-এর সহকারী পরিচালক এগনেস পারপেচুয়া লেগাসপি-এর নেতৃত্বে কৃষি ও শাক-সবজি, চা, পানীয়, ঔষধ, প্রশাধনী এবং প্যাকেজিং মেশিনারীজ খাতের ১৫ সদস্যের ফিলিপাইনের একটি প্রতিনিধিদল আয়োজিত সেমিনার ও বিজনেস ম্যাচ-মেকিং-এ যোগদান করেন।

ঢাকা চেম্বারের সভাপতি ওসামা তাসীর-এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সেমিনারে বাংলাদেশে নিযুক্ত ফিলিপাইনের চার্জ দি অ্যাফেয়ার্স লি মার্কো সি ভিদাল, ফিলিপাইনের কমার্শিয়াল এটাচি জেরিমায়া সি রাইয়েদ, বাংলাদেশ-ফিলিপাইন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি’র সভাপতি ও ডিসিসিআই পরিচালক ইঞ্জিঃ ইঞ্জিনিয়ার আকবর হাকিম প্রমুখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

সেমিনারের স্বাগত বক্তব্যে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি ওসামা তাসীর, বাংলাদেশ ও ফিলিপাইনের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য অত্যন্ত সম্ভাবনাময় এবং ২০১৭-১৮ অর্থবছরে দুদেশের বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ৬৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। তিনি বাংলাদেশের কৃষি ও খাদ্য উৎপাদন, প্যাকেজিং, তথ্য-প্রযুক্তি, ইলেকট্রনিক্স এবং পর্যটন খাতের উন্নয়নে ফিলিপাইনের অভিজ্ঞতা ও প্রযুক্তি ব্যবহার জন্য স্থানীয় উদ্যোক্তাদের প্রতি আহ্বান জানান। পাশাপাশি তৈরি পোষাক, ঔষধ ও সিরামিক খাতের উন্নয়নে বাংলাদেশর দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা কাজে লাগানোর জন্য ফিলিপাইনের ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানান। ঢাকা চেম্বারের সভাপতি দুদেশের মধ্যকার বাণিজ্য উন্নয়নে ঢাকা ও ম্যানিলার মধ্যকার সরাসরি বিমান যোগাযোগ স্থাপন, মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষর, সিঙ্গেল কান্ট্রি ফেয়ার আয়োজন এবং বাণিজ্য প্রতিনিধিদল আদান-প্রদানের উপর জোরারোপ করেন।

ফিলিপাইনের কমার্শিয়াল এটাচি জেরিমায়া সি রাইয়েদ বলেন, বাংলাদেশ ও ফিলিপাইনের বাণিজ্য বৃদ্ধিতে এধরনের বাণিজ্য আলোচনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যকার বাণিজ্য যুদ্ধ আমাদের মত দেশগুলোর জন্য একদিকে যেমন সম্ভাবনার সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে, অন্যদিকে ঝুঁকিও বেড়েছে এবং উদ্ধূত পরিস্থিতি মেকাবেলায় কার্যকরী উদ্যোগ গ্রহণের উপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সুবিধা গ্রহণের জন্য বাংলাদেশ ও ফিলিপাইনের মানব সম্পদের দক্ষতা উন্নয়ন ও প্রতিষ্ঠানের সক্ষমতা বাড়ানো প্রয়োজন বলে মত প্রকাশ করেন।

বাংলাদেশে নিযুক্ত ফিলিপাইনের রাষ্ট্রদূত ভিসেন্টি ভিভেনসিও টি বান্ডেলিও-এর অনুপস্থিতিতে তার পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন চার্জ দি অ্যাফেয়ার্স লি মার্কো সি ভিদাল। রাষ্ট্রদূত তার বক্তব্যে বলেন, ফিলিপাইন বাংলাদেশ হতে আরো বেশি পণ্য আমদানি করতে আগ্রহী, পক্ষান্তরে বাংলাদেশের বিদ্যমান সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করে ফিলিপাইনের উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান।

ফিলিপাইনের ডিপার্টমেন্ট অফ ট্রেড অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি-এর সহকারী পরিচালক এগনেস পারপেচুয়া লেগাসপি দুদেশের বিদ্যমান বাণিজ্য আরো বৃদ্ধির উপর জোরারোপ করেন। তিনি বাংলাদেশি উদ্যোক্তাবৃন্দ ফিলিপাইন হতে ইলেকট্রনিক্স, হোম ডেকো ফার্নিচার, ফ্যাশন, জুয়েলারি, হালাল খাদ্য এবং অর্গানিক প্রশাধনী প্রভৃতি আমদানির প্রস্তাব করেন।

তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, কানাডা ও এশিয়ার বিভিন্ন দেশের সাথে ফিলিপাইনের মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি রয়েছে এবং এ সুযোগ গ্রহণ করে বাংলাদেশি উদ্যোক্তাদের ফিলিপাইনে বিনিয়োগ করতে পারে।

বাংলাদেশ-ফিলিপাইন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি’র সভাপতি ও ডিসিসিআই পরিচালক ইঞ্জিঃ আকবর হাকিম সামনের দিনগুলোতে এশিয়া অঞ্চলের দেশসমূহ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে উল্লেখ করে বলেন, বৈশ্বিক জিডিপি এশিয়ার অবদান ৪২%। তিনি জানান, পরিসংখ্যানে প্রতীয়মান হয় যে, ২০৫০ সালে বাংলাদেশ ও ফিলিপাইনের অর্থনীতি হবে যথাক্রমে ৩ এবং ৩.৩ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছবে এবং এ লক্ষ্যে এশিয়া অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে সহযোগিতা আরো বাড়ানোর প্রস্তাব করেন। তিনি ফিলিপাইনের উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশ হতে বেশি হারে তৈরি পোষাক, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, পাট ও পাট পণ্য, কৃষিজাত পণ্য এবং বিশেষ করে শাক-সবজি আমদানির আহ্বান জানান। তিনি আরো জানান, ফিলিপাইনের ১০ মিলিয়ন দক্ষ প্রবাসী নাগরিকরা প্রতিবছর প্রায় ৩০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের রেমিট্যান্স প্রেরণ করে, যেখানে বাংলাদেশের ১২ মিলিয়ন।

আরকে//


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি