দু’দিন উত্থান দেখিয়ে ফের পতনে পুঁজিবাজার
প্রকাশিত : ১৮:২৮, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯
সপ্তাহের প্রথম দুই কার্যদিবসে স্বস্তির উত্থান হলেও ফের পতনে দেশের দুই পুঁজিবাজার। সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবস গতকাল মঙ্গলবার আবার বড় পতন হয়েছে শেয়ারবাজারে। এদিন উভয় শেয়ারবাজারের সব সূচক কমেছে। একই সঙ্গে কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দর এবং টাকার পরিমাণে লেনদেন। তবে বিমা খাতের কোম্পানিগুলোর দর বেড়েছে বেশি। সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবস আজ বুধবারও দেশের দুই শেয়ারবাজারে পতন অব্যাহত। ডিএসই ও সিএসইর সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
বাজার-সংশ্নিষ্টরা জানান, তারল্য সংকট সমাধানে ব্যাংকগুলোকে বিনিয়োগে ফেরাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক রেপোর মাধ্যমে অর্থ জোগান দেওয়ার খবরে মনস্তাত্ত্বিকভাবে চাঙ্গা হয়েছিলেন বিনিয়োগকারীরা। এ কারণে শেয়ারদরও ঊর্ধ্বমুখী হয়েছিল। তবে শেষ পর্যন্ত ব্যাংকগুলো ঋণ করে বিনিয়োগে আসবে কি-না, তা নিয়ে বড় বিনিয়োগকারীদের মধ্যে সংশয় রয়েছে। এরই নেতিবাচক প্রভাব পুঁজিবাজারে পড়েছে বলে জানান তারা। একদিনের ব্যবধানে ডিএসইএক্স পুনরায় ৫ হাজার পয়েন্টের নিচে নেমে যাওয়ায় সাধারণ বিনিয়োগকারীরা আবার আশাহত হয়েছেন।
শেয়ারবাজারে টানা পতন থেমেছিল গত দু'দিনে সূচকের বড় ধরনের উল্লম্ম্ফনে। তবে তা দু'দিনও টেকেনি। গত রোববার ও সোমবারের বৃদ্ধির পর গতকাল মঙ্গলবার উভয় বাজারে লেনদেন হওয়া ৬১ শতাংশ শেয়ারের দরপতন হয়েছে। অন্যদিকে ডিএসইতে দাম বেড়েছে ২৯ শতাংশের এবং সিএসইতে ৩১ শতাংশ শেয়ারের। এতে প্রধান শেয়ারবাজার ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৪১ পয়েন্ট হারিয়ে আবার ৫০০০ পয়েন্টের নিচে নেমেছে।
আন্যদিকে আজ চতুর্থ কার্যদিবসেও দেখা গেছে সূচকের পতন। এদিন ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৪০৫ কোটি ৬৩ লাখ টাকার শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ড। গত কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৫১৭ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। আর সিএসইতে লেনদেন হয়েছে ২৬ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। গত কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ২৯ কোটি ৬৮ লাখ শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ইউনিট।
তবে এদিন ডিএসইতে লেনদেনের শুরুতে সূচক বাড়ে। লেনদেনের শুরু হয় সাড়ে ১০টায়, শুরুতেই সূচক বেড়ে যায়। প্রথম ৫ মিনিটেই ডিএসইএক্স সূচক বাড়ে ১১ পয়েন্ট। বেলা ১০টা ৪০ মিনিটে সূচক বাড়ে ১৪ পয়েন্ট। এরপর থেকে সূচক বাড়ার প্রবণতা কমতে থাকে। বেলা ১০টা ৪৫ মিনিটে সূচক বাড়ে ১০ পয়েন্ট। বেলা ১০টা ৫০ মিনিটে সূচক ৫ পয়েন্ট বাড়ে।
এরপর সূচক নেতিবাচক হতে থাকে। বেলা ১০টা ৫৫ মিনিটে সূচক ৯ পয়েন্ট কমে যায়। বেলা ১১টায় ডিএসইএক্স সূচক ২৩ পয়েন্ট কমে। বেলা ১২টায় সূচক ১৭ পয়েন্ট কমে। বেলা ১টায় ডিএসইএক্স সূচক ৩৩ পয়েন্ট কমে। বেলা ২টায় সূচক ৪৩ পয়েন্ট কমে। বেলা আড়াইটায় লেনদেন শেষে ডিএসইএক্স সূচক ৪১ পয়েন্ট কমে ৪ হাজার ৯৫৮ পয়েন্টে অবস্থান করে।
অন্যদিকে, ডিএসই-৩০ সূচক ১৫ পয়েন্ট কমে অবস্থান করে এক হাজার ৭৭৪ পয়েন্টে এবং ডিএসই শরিয়াহ সূচক ১২ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে এক হাজার ১৪৫ পয়েন্টে। এদিন ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৪০৫ কোটি ৬৩ লাখ টাকার শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ড।
লেনদেন শেষে ডিএসইতে লেনদেন হওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে দাম বেড়েছে ১০৩টির, কমেছে ২১৪টি এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৪টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
মঙ্গলবার দাম বৃদ্ধির ভিত্তিতে ডিএসই'র শীর্ষ দশ কোম্পানির তালিকায় আছে- ফরচুন সু, গ্রামীণ ফোন, বিকন ফার্মা, সোনারবাংলা ইনস্যুরেন্স, ন্যাশনাল টিউবস, স্কয়ার ফার্মা, মুন্নু স্টাফলারস, সামিট পাওয়ার, ন্যাশনাল পলিমার এবং ভিএফএসটিডিএল।
সিএসই
অন্যদিকে, লেনদেন শেষে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) প্রধান সূচক সিএসইএক্স ৮৩ পয়েন্ট কমে ৯ হাজার ১৫৮ পয়েন্টে অবস্থান করছে। সিএসই-৩০ সূচক ১২৬ পয়েন্ট কমে ১৩ হাজার ৫৬ পয়েন্টে এবং সিএএসপিআই সূচক ১৩৮ পয়েন্ট কমে ১৫ হাজার ৭৯ পয়েন্টে অবস্থান করে। লেনদেন শেষে সিএসইতে লেনদেন হয়েছে ২৬ কোটি ৫৫ লাখ টাকার শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ইউনিট।
এদিন দাম বাড়ার ভিত্তিতে সিএসই’র শীর্ষ কোম্পানিগুলো হলো- ভিএএমএল আরবিবিএফ, এশিয়া ইনস্যুরেন্স, আইসিবি এএমসিএল দ্বিতীয় মিউচ্যুয়াল ফান্ড, এসইএমএল আইবিবিএল এসএফ, এসইএমএল আইবিবিএল এমএফ, ইবিএল এনআরবি মিউচ্যুয়াল ফান্ড, আইসিবি সোনালী ফার্স্ট, পিএফ ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ড এবং বাংলাদেশ জেনারেল ইনস্যুরেন্স।
আরকে//
আরও পড়ুন