বিশ্বসেরা হওয়ায় অর্থমন্ত্রীকে শিল্পপতি সাইফুল আলমের অভিনন্দন
প্রকাশিত : ২১:৩০, ২ জানুয়ারি ২০২০ | আপডেট: ২১:৩২, ২ জানুয়ারি ২০২০
আ হ ম মুস্তফা কামাল সারা বিশ্বে বর্ষসেরা অর্থমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ায় তাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন একুশে টেলিভিশনের চেয়ারম্যান ও দেশের বিশিষ্ট শিল্পদ্যোক্তা মোহাম্মদ সাইফুল আলম। বৃহস্পতিবার অর্থমন্ত্রীকে ফুলের তোড়া দিয়ে তিনি শুভেচ্ছা জানান।
মোহাম্মদ সাইফুল আলম বলেন, অর্থমন্ত্রী তার অক্লান্ত কাজের স্বীকৃতি পেয়েছেন এবং এ অর্জন বাংলাদেশের সুনাম বাড়িয়েছে। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে এগিয়ে নেয়ার জন্য যে সকল পদক্ষেপ নিয়েছেন, অর্থমন্ত্রীর এই অর্জন তা আরও বেগবান করবে।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালকে যুক্তরাজ্যভিত্তিক ফাইন্যান্সিয়াল টাইমস গ্রুপের মাসিক ম্যাগাজিন ‘দ্যা ব্যাংকার’ পত্রিকা ২০২০ সালের জন্য ‘ফিন্যান্স মিনিস্টার অব দ্য ইয়ার ফর এশিয়া-প্যাসিফিক অ্যান্ড গ্লোবাল অ্যাওয়ার্ড ২০২০’-এ ভূষিত করেছেন।
‘দ্য ব্যাংকার’ পত্রিকাটি ১৯২৬ সাল থেকে প্রকাশিত হচ্ছে, যা বিশ্বের ব্যাংকিং সেক্টরের ইন্টেলিজেন্স হিসেবে খ্যাত। তবে ‘ফাইন্যান্স মিটিস্টার অব দ্য ইয়ার’ পুরস্কারটি গত ২০০৪ সাল থেকে প্রচলন করেছে পত্রিকাটি।
সারা বিশ্বের অর্থমন্ত্রীদের আর্থিক খাতে গতিশীলতা আনয়নসহ দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়ন নিশ্চিতকরণে গৃহীত পদক্ষেপ বিবেচনা করে সার্বিক বিবেচনায় এ পুরস্কার প্রদান করা হয়। এশিয়া-প্যাসিফিক, আমেরিকা, আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপ, এই পাঁচটি অঞ্চল হতে পাঁচ জন অর্থমন্ত্রী-কে এবং তাদের মধ্য থেকে একজনকে বিশ্বের মধ্যে শ্রেষ্ঠ অর্থমন্ত্রী হিসাবে ঘোষণা করা হয়।
বাংলাদেশের কোনো অর্থমন্ত্রী প্রথমবারের মতো এই পুরষ্কারে ভূষিত হয়েছেন। গত বছর এ পুরস্কারে ভূষিত হয়েছিলেন ইন্দোনেশিয়ার অর্থমন্ত্রী, তার আগের বছর ভারতের সাবেক অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি এবং ২০১৭ সালে ‘ফাইন্যান্স মিনিস্টার অব দ্য ইয়ার’ হয়েছিলেন আর্জেন্টিনা’র অর্থমন্ত্রী।
অর্থমন্ত্রী বিরল এ পুরস্কারটি দেশের সর্বস্তরের সকল জনগণের উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করেছেন এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেছেন। অর্থমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশিত পথ অনুসরণ করেই এটি অর্জিত হয়েছে।
উল্লেখ্য যে, ২০১৯ সালের জানুয়ারীতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার গঠনের পর আ হ ম মুস্তফা কামাল এমপিকে অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব প্রদান করা হয়। তিনি ২০১৪-২০১৮ সময়কালে সফলভাবে পরিকল্পনামন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।
অর্থমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর পরই তিনি চলমান অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির গতিকে সচল রাখা ও আর্থিক খাতে শৃংখলা ফিরিয়ে আনয়নে বেশ কিছু কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করেন, যা অচিরেই বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করাসহ ইতিবাচক ফলাফল বয়ে আনে। পর পর তিন অর্থবছর ৭ শতাংশের ওপর প্রবৃদ্ধি অর্জিত হওয়ার পর গত বছর ৮.১৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে, যা দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের মধ্যে সর্বোচ্চ। বিশ্ব প্রবৃদ্ধিতে প্রভাব বিস্তারকারী শীর্ষ ২০টি দেশের অন্তর্ভুক্ত বাংলাদেশ। প্রবৃদ্ধি টেকসই করার লক্ষ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দিক-নির্দেশনা অনুযায়ী অর্থমন্ত্রী চলতি অর্থবছর অনেকগুলো সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছেন।
অর্থমন্ত্রীর নীতি নির্ধারণী অনেকগুলো উদ্যোগের মধ্যে ব্যাংক, আর্থিক খাত ও রাজস্ব খাতের সংস্কার প্রণিধানযোগ্য।
প্রথমতঃ ব্যাংক সুদের হার নয় শতাংশে নামিয়ে আনতে উদ্যোগ গ্রহণ, দ্বিতীয়তঃ রাষ্ট্রায়াত্ত্ব ব্যাংকগুলোর যৌক্তিক কারণে খেলাপি হওয়া ঋণ পুনঃতফসিলকরণের উদ্যোগ গ্রহণ, তৃতীয়তঃ ইচ্ছাকৃত ঋণ খেলাপিদের দেউলিয়া ঘোষণাসহ তাঁদের সম্পদ ‘এসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানী’র মাধ্যমে গ্রহণ করে খেলাপি ঋণ আদায়ের উদ্যোগ গ্রহণ, চতুর্থতঃ ব্যাংকের পরিবর্তে ক্যাপিটাল মার্কেট হতে দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগ অর্থায়নের জন্য পুঁজিবাজারে প্রয়োজনীয় সংস্কার ও প্রণোদনা প্রদানের উদ্যোগ গ্রহণ, পঞ্চমতঃ বন্ড মার্কেট চালুর উদ্যোগ গ্রহণ এবং প্রথমবারের মতো বাংলা টাকা বন্ড লন্ডন স্টক এক্সচেঞ্জ-এ তালিকাভুক্তকরণ, ষষ্ঠতঃ কর আদায়ে ভ্যাট আইন চালু করা, কাস্টমস আইন সংস্কার করা এবং আয়কর আদায়ের নেট উপজেলা পযন্ত বিস্তারের উদ্যোগ গ্রহণ, সপ্তমতঃ ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্সের পরিমাণ বৃদ্ধির লক্ষ্যে ২ শতাংশ প্রণোদনা প্রদানের ব্যবস্থা করেছেন মাননীয় অর্থমন্ত্রী।
‘দ্য ব্যাংকার’ পত্রিকা কর্তৃক গ্লোবাল ফিন্যান্স মিনিস্টার অব দ্যা ইয়ার ভূষিতকরণের বিষয়টি অর্থমন্ত্রী হিসাবে তার এ সকল কার্যক্রমের সঠিকতা ও সাফল্যর একটি স্বীকৃতি। এর ফলে বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশর ও বাংলাদেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের ভাবমূর্তি আরও উন্নত হবে।
এনএস/
আরও পড়ুন