শত কোটি টাকার আয় কমলো পোশাক খাতে
প্রকাশিত : ২০:০৬, ১৭ এপ্রিল ২০২০
তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ জানিয়েছে, চলতি মাসের প্রথম ১৫ দিনে বাংলাদেশ থেকে পোশাক রফতানি হ্রাস পেয়েছে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় শ’কোটি টাকার রপ্তানি আয় কমেছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) থেকে সংগৃহীত তথ্যের ভিত্তিতে বিজিএমইএ জানিয়েছে, চলতি মাসের প্রথম ১৫ দিনে (১-১৫ এপ্রিল) বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক রফতানি হয়েছে ১৯ কোটি ৪০ লাখ ডলারের। অন্যদিকে গত বছরের ১-১৫ এপ্রিলের মধ্যে পণ্যটি রফতানি হয়েছিল ১১৯ কোটি ২৯ লাখ ৯৯ হাজার ডলারের। অর্থাৎ পণ্যটির রফতানি কমেছে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৯৯ কোটি ৮৯ লাখ ৯০ হাজার ডলার মূল্যের। সে হিসাবে পণ্যটির রফতানি হ্রাস পেয়েছে ৮৩ দশমিক ৭৪ শতাংশ।
চীনের উহানে কভিড-১৯-এর প্রাদুর্ভাব দেখা দেয় গত ডিসেম্বরের শেষে। ফেব্রুয়ারি থেকে মার্চের মধ্যে তা বিশ্বের অধিকাংশ দেশে ছড়িয়ে পড়ে। এ প্রেক্ষাপটে জানুয়ারি থেকেই দেশের তৈরি পোশাক রফতানিতে নিম্নমুখিতা বজায় রয়েছে।
বিজিএমইএর তথ্য বলছে, গতকাল সকাল ১০টা পর্যন্ত ১ হাজার ১৪০ কারখানার মোট ৩১৬ কোটি ডলারের ক্রয়াদেশ বাতিল ও স্থগিত হয়েছে। এসব ক্রয়াদেশের আওতায় ছিল ৯৭ কোটি ৯০ লাখ পিস পোশাক। অন্যদিকে এসব কারখানার কর্মরত শ্রমিকের সংখ্যা ২২ লাখ ৬০ হাজার।
বিজিএমইএ সভাপতি ড. রুবানা হক বলেন, পোশাক রফতানি পরিস্থিতি নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই। পরিসংখ্যানই বলে দিচ্ছে পোশাক খাতের অবস্থা কতটা নাজুক। সংকট এখনো চলমান।
এ অবস্থায় চলতি বছরের মার্চ থেকে মে পর্যন্ত তিন মাসে পোশাক রফতানি ৫০০ কোটি ডলার হ্রাস পাওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছে বিজিএমইএ। সংগঠনটির প্রক্ষেপণ অনুযায়ী, চলতি বছরের মার্চ থেকে মে পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক রফতানি হবে ৩৭০ কোটি ৬৯ লাখ ৮০ হাজার ডলারের। যেখানে গত বছরের একই সময়ে এর পরিমাণ ছিল ৮৬০ কোটি ৭৫ লাখ ৩০ হাজার ডলার। এ হিসাবে তিন মাসের সম্মিলিত রফতানি হ্রাস পেতে যাচ্ছে ৪৯০ কোটি ডলার বা ৫৬ দশমিক ৯৩ শতাংশ।
চলতি অর্থবছরের (২০১৯-২০) শুরু থেকেই রফতানি নিয়ে কিছুটা খারাপ সময় পার করছিল তৈরি পোশাক খাত। রপ্তানী উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম মাসে (জুলাই) পোশাক রফতানি বেড়েছিল আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৯ দশমিক ৭ শতাংশ। এর পরের মাসেই বড় ধরনের পতন হয় পোশাক রফতানির। সে সময় রফতানি হ্রাস পেয়েছিল ১১ দশমিক ৪৬ শতাংশ। রফতানিতে এ নেতিবাচক ধারা বজায় থাকে নভেম্বর পর্যন্ত। এর মধ্যে সেপ্টেম্বর, অক্টোবর ও নভেম্বরে তৈরি পোশাকের রফতানি হ্রাস পেয়েছিল যথাক্রমে ৪ দশমিক ৭ শতাংশ, ১৯ দশমিক ৭৯ ও ১১ দশমিক ৯৮ শতাংশ।
এরপর ডিসেম্বরে কিছুটা ইতিবাচক ধারায় ফিরে আসে তৈরি পোশাক রফতানি। ওই সময় বাংলাদেশ থেকে পণ্যটির রফতানি বেড়েছিল আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ১ দশমিক ২৬ শতাংশ। কিন্তু জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত ধসের ধারায়ই রয়েছে তৈরি পোশাক রফতানি। এর মধ্যে জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে তৈরি পোশাক রফতানি কমেছে যথাক্রমে ২ দশমিক ৯৮ ও ৫ দশমিক ৭৮ শতাংশ।
আরকে/
আরও পড়ুন