ঢাকা, শুক্রবার   ১৮ এপ্রিল ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

করোনা ঝুঁকির মধ্যেই খোলা হলো পোশাক কারখানা 

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৫:০৭, ২৬ এপ্রিল ২০২০

Ekushey Television Ltd.

দেশে করোনার প্রকোপ ছড়িয়ে পড়ার দেড় মাসের মাথায় ঝুঁকি নিয়েই আজ থেকে সীমিত পরিসরে খোলা হল পোশাক কারখানা। তৈরি পোশাক শিল্পের দুই খাতের মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। 

সে অনুযায়ী আজ রোববার থেকে বিজিএমইএর সদস্য ঢাকা ও আশপাশের অন্তত ২০০ কারখানা চালুর প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।  বিজিএমইএর সহ-সভাপতি ফয়সাল সামাদ গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে, কারখানার সংখ্যা জানাতে পারেনি বিকেএমইএ। 

ফয়সাল সামাদ জানান, ‘যেসব কারখানা চালু হবে সেখানে সর্বোচ্চ ৩০ শতাংশ শ্রমিকের উপস্থিতির লক্ষ্য ধরা হয়েছে। কেবল নিটিং, ডায়িং ও স্যাম্পল সেকশন চালু করার পরামর্শ দিয়েছে বিকেএমইএ। তাতেও অন্তত ৩০ শতাংশ শ্রমিকের উপস্থিতির প্রয়োজন হবে।’

লকডাউন পরিস্থিতিতে যেসব শ্রমিক সংশ্লিষ্ট কারখানার আশপাশে অবস্থান করছেন তাদেরকে দিয়েই কারখানা চালুর কাজটি শুরু হচ্ছে। এই মুহূর্তে দূরে থাকা শ্রমিকদের যেন না ডেকে আনা হয় সেই নির্দেশনাও রয়েছে কারখানা চালুর নির্দেশনায়।

বিজিএমইএ ও বাংলাদেশ নিটওয়্যার প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিকেএমইএ) সূত্র জানায়, গতকাল শনিবার তাদের শতাধিক কারখানা খুলেছে। মূলত যেসব শ্রমিক ঢাকায় আছে তাদের দিয়েই কারখানা চলবে। আজ ও আগামীকাল ঢাকা মহানগরীর, ২৮, ২৯ ও ৩০ এপ্রিল সাভার, আশুলিয়া, ধামরাই ও মানিকগঞ্জ এলাকার এবং ২ ও ৩ মে গাজীপুর থেকে ময়মনসিংহ এলাকার কারখানা খোলা হবে। 

এছাড়া লকডাউনে থাকা নারায়ণগঞ্জ এলাকার নিটিং, ডায়িং ও স্যাম্পলিং বিভাগ ২৬ এপ্রিল থেকে ৩০ এপ্রিলের মধ্যে খুলবে। এসব এলাকার কারখানার কাটিং বিভাগ ২ মে, সুইং বিভাগ ৩ মে এবং ফিনিশিং বিভাগ ৪ মে খুলবে। 

দ্বিতীয় পর্যায়ে উপস্থিত থাকবে ৫০ শতাংশ। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে শ্রমিক সংখ্যা বাড়ানো হবে। শ্রমিকদের স্বাস্থ্য নিরাপত্তা তদারকিতে কয়েকটি কমিটি করা হয়েছে। মোট ৩৫ লাখ শ্রমিকের মধ্যে প্রায় ১৫ লাখ শ্রমিক গ্রামে অবস্থান করছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বিজিএমইএর সহ-সভাপতি ফয়সাল সামাদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা তাড়াহুড়ো করে কোনো কিছু করছি না। সবকিছু আস্তেধীরে করা হচ্ছে। গতকাল আমরা মালিকদের বলে দিয়েছি। দূর দূরান্ত থেকে কোনো শ্রমিক নিয়ে আসা যাবে না। কেবল মাত্র যারা কারখানার আশপাশে রয়েছে তাদেরকে দিয়েই কাজ শুরু করতে হবে। অনুপস্থিতির জন্য কারও চাকরিও যাবে না।’

গত ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দিলে আলোচনায় আসে গার্মেন্টস কারখানাগুলো নিয়ে। ভাইরাসটির বিস্তার রোধে গত ২৫ মার্চ থেকে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত দেশব্যাপী সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে সরকার। তবে এই সময়ে পোশাক কারখানাগুলো খোলা রাখা হয়। ২৮ ও ২৯ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত পোশাক কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হয়। সরকার সাধারণ ছুটি ১১ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়ালেও মালিকরা ৫ এপ্রিল কারখানা খোলা রাখার ব্যাপারে অটল থাকেন। 

কিন্তু এই সময়ে গণপরিবহন বন্ধ থাকায় চাকরি বাঁচাতে অসংখ্য শ্রমিক পায়ে হেঁটে কর্মস্থলের উদ্দেশে রওনা হয়। এ নিয়ে দেশের বিভিন্ন মহলে সমালোচনা শুরু হলে ৫ এপ্রিল রাতে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত আবারও কারখানা বন্ধ রাখার ঘোষণা দেয় মালিকপক্ষ। 

এরপর তারা সরকারের ঘোষিত সাধারণ ছুটির সঙ্গে সমন্বয় করে কারখানা বন্ধ করে আসছে। সরকারের সাধারণ ছুটি আগামী ৫ মে পর্যন্ত বাড়ানো হলেও কারখানা মালিকরা ছুটির মেয়াদ আর বাড়ায়নি। তাই বাধ্য হয়ে শ্রমিকরা গ্রাম থেকে ফিরতে শুরু করেছেন।

এআই/


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি